ভিয়েনা ০৯:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
অভিবাসী পুনর্বণ্টনে ইইউর বিশেষ সহায়তা পাবে চার সদস্য দেশ জার্মানিতে স্বেচ্ছাসেবী সামরিক পরিষেবা মডেল চালু লন্ডনে ১২ বছর পর পুনরায় সিরিয়ার দূতাবাস সার্ভিস টাঙ্গাইলে রিকশা শ্রমিকদের সাথে বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীর মতবিনিময় সভা টাঙ্গাইলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্লে গ্রাউন্ড স্থাপন, আনন্দমুখর পরিবেশে শিক্ষার নতুন দিগন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে আগুন গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ১৭ নভেম্বর  বর্ণবাদ আবার ব্রিটিশ রাজনীতিতে ফিরে এসেছে-বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তুরস্কে আবারও ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী রাশিয়া

কবরাস্থান পরিষ্কার করে পরদিন সেখানেই সমাহিত হলেন দুই বন্ধু

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৯:১৭:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪
  • ১৪ সময় দেখুন

ইবিটাইমস ডেস্কঃ ঈদুল ফিতরের আগের দিন তিন বন্ধু মিলে ঝাড়ামোছা করেছিল পারিবারিক কবরস্থানটি। নিজ হাতে তারা দিয়েছিল বাঁশের বেড়া। এর পরদিনই বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে দাফন হয়েছে দু’জনের।

দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানায়,বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ঈদুল ফিতরের দিন দুপুরে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ পৌর এলাকার সোনাহার-দেবীগঞ্জ সড়কের নতুনবন্দর এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয় উপরোক্ত তিন বন্ধু।

সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বন্ধু হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। অন্যজন এখনও রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
তিনজনের বাড়িই দণ্ডপাল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের লোহাগাড়া সুপারিতলা এলাকায়। এদের মধ্যে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে বাছের আলীর ছেলে কাউসার আলী (১৬) ও ইয়াকুব আলীর ছেলে সাব্বির হোসেনের (১৭)। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন জসিম উদ্দিনের ছেলে জাকারিয়া।

সাব্বির, কাউছার ও জাকারিয়া একই ইউনিয়নের বিনয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। সাব্বির পড়তো অষ্টম শ্রেণিতে, কাউছার ও জাকারিয়া সপ্তম শ্রেণিতে। জাকারিয়ার সঙ্গে দু’জনের গভীর বন্ধুত্ব ছিল বলে এলাকাবাসী জানায়। সাব্বির ও কাউছার নিজ নিজ বাবার একমাত্র ছেলে।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, পাশাপাশি কবরে দাফন হয়েছে সাব্বির ও কাউছারের। পুরো কবরস্থানটি ঝকঝকে। নতুন বাঁশের বেড়া দেওয়া। সাব্বিরের কবরের ওপর মাটির টুকরো গুড়ো করে দিচ্ছিলেন দুই ব্যক্তি। তাদের একজন চাচা মো. শাহালম। অন্যজন দাদা সামসুল হক।

ঈদের আগের দিনই সাব্বির, কাউছার ও জাকারিয়া মিলে পারিবারিক কবরস্থান পরিষ্কার পরিছন্ন করে জানিয়ে সামসুল হক বলেন, ওরাই নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের বেড়া দেয়। ঠিক পরের দিনই তাদের মৃত্যু হলো। সেই কবরস্থানেই দাফন হলো। বলতে বলতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।

স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা গেছে, ঈদে ঘুরে বেড়ানোর জন্য ওই কিশোর-তরুণরা মোটরসাইকেলে করে বের হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে একটি মোটরসাইকেলে খাঁপাড়া থেকে দেবীগঞ্জের দিকে আসছিলো তিন তরুণ। অপর একটি মোটরসাইকেলে আরও তিনজন কালীগঞ্জের লোহাগারা থেকে নীলসাগরের দিকে যাচ্ছিল। নতুন বন্দর এলাকায় একটি ভ্যানকে সাইড দিতে গিয়ে মোটরসাইকেল দুটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় ৬ তরুণকে উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা চলার মধ্যেই কাউসার আলী মারা যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অন্যদের রংপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। পথে দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের খাঁ পাড়া এলাকার মজনু রহমানের ছেলে সাব্বিরের (২২) মৃত্যু হয়। এ ছাড়াও রংপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দণ্ডপালের সাব্বির ও খাঁ পাড়া এলাকার হজরত আলীর ছেলে বরকত (১৭) মারা যায়।

আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল (রমেক) কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন জাকারিয়া ও সোহেল নামের দুইজন। এক প্রতিবেশী বলেন, কাউসার জ্ঞাতি সম্পর্কে সাব্বিরের চাচা হয়। দু’জনের সঙ্গেই প্রতিবেশী জাকারিয়ার চলাফেরা ছিল। একসঙ্গেই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া, ঘোরাফেরা, আড্ডা– সবই চলতো। ঈদের আগের দিন বুধবার তারা নিজ উদ্যোগে সাব্বিরদের পারিবারিক কবরস্থানটি পরিষ্কার করেছিল।

তাদের এমন মৃত্যু পরিবারের পাশাপাশি স্বজন ও গ্রামবাসীকেও কাঁদিয়েছে বলে মন্তব্য করেন দন্ডপাল ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মমতাজ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সাব্বির ও কাউছার খুব ভালো ছেলে ছিল। তাদের মৃত্যুতে আমাদের পুরো গ্রাম শোকাহত।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়

অভিবাসী পুনর্বণ্টনে ইইউর বিশেষ সহায়তা পাবে চার সদস্য দেশ

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

কবরাস্থান পরিষ্কার করে পরদিন সেখানেই সমাহিত হলেন দুই বন্ধু

আপডেটের সময় ০৯:১৭:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪

ইবিটাইমস ডেস্কঃ ঈদুল ফিতরের আগের দিন তিন বন্ধু মিলে ঝাড়ামোছা করেছিল পারিবারিক কবরস্থানটি। নিজ হাতে তারা দিয়েছিল বাঁশের বেড়া। এর পরদিনই বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে দাফন হয়েছে দু’জনের।

দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম জানায়,বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ঈদুল ফিতরের দিন দুপুরে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ পৌর এলাকার সোনাহার-দেবীগঞ্জ সড়কের নতুনবন্দর এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয় উপরোক্ত তিন বন্ধু।

সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বন্ধু হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। অন্যজন এখনও রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
তিনজনের বাড়িই দণ্ডপাল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের লোহাগাড়া সুপারিতলা এলাকায়। এদের মধ্যে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে বাছের আলীর ছেলে কাউসার আলী (১৬) ও ইয়াকুব আলীর ছেলে সাব্বির হোসেনের (১৭)। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন জসিম উদ্দিনের ছেলে জাকারিয়া।

সাব্বির, কাউছার ও জাকারিয়া একই ইউনিয়নের বিনয়পুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র। সাব্বির পড়তো অষ্টম শ্রেণিতে, কাউছার ও জাকারিয়া সপ্তম শ্রেণিতে। জাকারিয়ার সঙ্গে দু’জনের গভীর বন্ধুত্ব ছিল বলে এলাকাবাসী জানায়। সাব্বির ও কাউছার নিজ নিজ বাবার একমাত্র ছেলে।

শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, পাশাপাশি কবরে দাফন হয়েছে সাব্বির ও কাউছারের। পুরো কবরস্থানটি ঝকঝকে। নতুন বাঁশের বেড়া দেওয়া। সাব্বিরের কবরের ওপর মাটির টুকরো গুড়ো করে দিচ্ছিলেন দুই ব্যক্তি। তাদের একজন চাচা মো. শাহালম। অন্যজন দাদা সামসুল হক।

ঈদের আগের দিনই সাব্বির, কাউছার ও জাকারিয়া মিলে পারিবারিক কবরস্থান পরিষ্কার পরিছন্ন করে জানিয়ে সামসুল হক বলেন, ওরাই নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের বেড়া দেয়। ঠিক পরের দিনই তাদের মৃত্যু হলো। সেই কবরস্থানেই দাফন হলো। বলতে বলতে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।

স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা গেছে, ঈদে ঘুরে বেড়ানোর জন্য ওই কিশোর-তরুণরা মোটরসাইকেলে করে বের হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে একটি মোটরসাইকেলে খাঁপাড়া থেকে দেবীগঞ্জের দিকে আসছিলো তিন তরুণ। অপর একটি মোটরসাইকেলে আরও তিনজন কালীগঞ্জের লোহাগারা থেকে নীলসাগরের দিকে যাচ্ছিল। নতুন বন্দর এলাকায় একটি ভ্যানকে সাইড দিতে গিয়ে মোটরসাইকেল দুটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় ৬ তরুণকে উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা চলার মধ্যেই কাউসার আলী মারা যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অন্যদের রংপুর মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। পথে দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের খাঁ পাড়া এলাকার মজনু রহমানের ছেলে সাব্বিরের (২২) মৃত্যু হয়। এ ছাড়াও রংপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দণ্ডপালের সাব্বির ও খাঁ পাড়া এলাকার হজরত আলীর ছেলে বরকত (১৭) মারা যায়।

আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল (রমেক) কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন জাকারিয়া ও সোহেল নামের দুইজন। এক প্রতিবেশী বলেন, কাউসার জ্ঞাতি সম্পর্কে সাব্বিরের চাচা হয়। দু’জনের সঙ্গেই প্রতিবেশী জাকারিয়ার চলাফেরা ছিল। একসঙ্গেই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া, ঘোরাফেরা, আড্ডা– সবই চলতো। ঈদের আগের দিন বুধবার তারা নিজ উদ্যোগে সাব্বিরদের পারিবারিক কবরস্থানটি পরিষ্কার করেছিল।

তাদের এমন মৃত্যু পরিবারের পাশাপাশি স্বজন ও গ্রামবাসীকেও কাঁদিয়েছে বলে মন্তব্য করেন দন্ডপাল ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মমতাজ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সাব্বির ও কাউছার খুব ভালো ছেলে ছিল। তাদের মৃত্যুতে আমাদের পুরো গ্রাম শোকাহত।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস