করোনার জন্য স্থগিত হওয়া ২০২০ সালের গ্রীষ্মকালীন বিশ্ব অলিম্পিক ২৩ জুলাই শুরু হচ্ছে তবে দর্শকবিহীন
স্পোর্টস ডেস্কঃ বৈশ্বিক মহামারী করোনার জন্য গত বছর স্থগিত হওয়া গ্রীষ্মকালীন বিশ্ব অলিম্পিক এই বছর জাপানের রাজধানী টোকিওতে আগামী ২৩ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে টোকিওতে করোনার সংক্রমণ পুনরায় বৃদ্ধি পাওয়ায় জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। টোকিওতে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হবে ঠিকই তবে কোন দর্শক উপস্থিত থাকতে পারবে না বলে আজ জাপান সরকার জানিয়েছেন।
স্বাগতিক জাপানেরও কোন দর্শক খেলার কোন ইভেন্টে উপস্থিত থেকে খেলা দেখতে পারবে না। সম্পূর্ণ অলিম্পিক গেমস জাপানীরা বিশ্বের অন্যান্য মানুষের সাথে টেলিভিশনেই লাইভ দেখতে হবে।
টোকিও থেকে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়াটার্স জানিয়েছেন আজ বৃহস্পতিবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জাপানের খেলাধূলা ও অলিম্পিক বিষয়ক মন্ত্রী তামায়ে মারুকাওয়া জানান,করোনার জন্য স্থগিত হওয়া টোকিও অলিম্পিক দর্শকদের ছাড়াই অনুষ্ঠিত হবে।
আজ বৃহস্পতিবার(৮ জুলাই) জাপানের খেলাধূলা ও অলিম্পিক বিষয়ক মন্ত্রী তামায়ে মারুকাওয়া এক আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, জাপানের রাজধানী টোকিওতে নতুন করে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাপান সরকার ও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (IOC) এক বৈঠকের পর উভয় পক্ষই অলিম্পিক গেমস যথা সময়ে দর্শকদের ছাড়াই এইবারের গ্রীষ্মকালীন বিশ্ব অলিম্পিক গেমসের আয়োজন করতে সম্মত হয়েছেন।
জাপান সরকার ও আইওসি-এর পরামর্শে আয়োজকরা বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছিলেন যে বিদেশি অতিথিদের নিষেধাজ্ঞার পরে, দেশে বসবাসকারী কোনও অনুরাগী ক্রীড়া সুবিধাতে প্রতিযোগিতা দেখার অনুমতি পাবে না। জাপানের প্রধানমন্ত্রী যোশিহিদ সুগা এর আগে টোকিওতে জরুরী অবস্থা বাড়িয়ে দিয়েছিল অন্য করোনার তরঙ্গের ঝুঁকি সীমাবদ্ধ করার জন্য। জরুরী অবস্থা আগামী সোমবার ১২ জুলাই থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত প্রয়োগ করা হয়েছে। রাজধানী টোকিওর জন্য এটি চতুর্থ জরুরী অবস্থা। কারন হিসাবে আবারও উল্লেখযোগ্যভাবে করোনার সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।
জাপানের মন্ত্রী আরও বলেন, টোকিওর জরুরী অবস্থা অন্যান্য দেশের মতো শক্ত কারফিউ বা লকডাউন নয়। নাগরিকদের যদি সম্ভব হয় তবে বাড়িতে থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়, রেস্তোঁরাগুলিকে অ্যালকোহল পরিবেশন করার অনুমতি দেওয়া হয় না এবং দোকান পাট ও লোকজনের চলাফেরা সন্ধ্যায় স্বাভাবিকের চেয়ে কিছু আগে বন্ধ করতে হয়। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,আমাদের দর্শকরা এতোবড় একটি বিশ্ব অলিম্পিক নিজের দেশেই মাঠে উপস্থিত হয়ে দেখতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার জাপানের খেলাধূলা ও অলিম্পিক বিষয়ক মন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনের পর আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির(আইওসি) সভাপতি টমাস বাচ নিশ্চিত করেছেন যে জাপানীদের গৃহীত সমস্ত পদক্ষেপকে সমর্থন করা হবে – সমস্ত দর্শকদের বাদ দেওয়া সহ। গ্রীষ্মকালীন গেমসের হোস্টিং জাপনীরাও এই নিষেধাজ্ঞার বাহিরে নন। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সভাপতি আরও বলেন, “আমি ওয়েটিং রুমে একজন অ্যাথলিটের মতো অনুভব করছি, প্রতিযোগিতা শুরুর অপেক্ষায় আছি।
জাপানের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী সুগা জরুরী অবস্থা জারি করার বিষয়টি একটি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। রাজনীতিবিদ বলেছেন, “করোনাভাইরাসের বৈকল্পিকতার প্রভাবগুলিও মাথায় রেখে দেশব্যাপী আরেকটি মহামারী রোধে আমাদের আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।” গ্রীষ্মকালীন এই বিশ্ব অলিম্পিক এই বছর বাসায় বা ক্লাবে বসে টিভিতেই দেখতে হবে।
কবির আহমেদ /ইবিটাইমস