আগামীকাল ১২ অক্টোবর ২০২৫ থেকে শেনজেনভুক্ত ইউরোপের ২৯টি দেশে নতুন ডিজিটাল এন্ট্রি/এক্সিট সিস্টেম (EES) কার্যকর হবে
ইউরোপ ডেস্কঃ রোববার (১২ অক্টোবর) থেকে এই নতুন নিয়ম প্রচলনের পর পাসপোর্টে আর সিল দেওয়া হবে না। ভ্রমণকারীর মুখের ছবি ও আঙুলের ছাপের মাধ্যমে প্রবেশ ও প্রস্থানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
নতুন ব্যবস্থা কী ? এক্সিট সিস্টেম হলো বায়োমেট্রিক ভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের নাগরিকরা যখন শেনজেন অঞ্চলে প্রবেশ বা প্রস্থান করবেন, তখন সীমান্তের কিয়স্কে পাসপোর্ট স্ক্যান করতে হবে এবং সঙ্গে মুখের ছবি ও আঙুলের ছাপ দিতে হবে। এই তথ্য ডিজিটালি সংরক্ষিত থাকবে, যাতে জানা যাবে ভ্রমণকারীর প্রবেশ ও প্রস্থানের তারিখ, স্থান এবং থাকার মেয়াদ।
ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য হলো ভ্রমণ সহজ করা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা। এর মাধ্যমে জাল পরিচয় ব্যবহার রোধ, অপেক্ষার সময় কমানো এবং ভিসা বা থাকার মেয়াদ লঙ্ঘন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ধীরে ধীরে ম্যানুয়াল পাসপোর্ট সিলিং পুরোপুরি বন্ধ হবে।
কারা এর আওতায় পড়বেন ? এই সিস্টেম প্রযোজ্য হবে নন-ইইউ নাগরিকদের জন্য, যারা ১৮০ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯০ দিন শেনজেন এলাকায় থাকতে পারেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিক, স্থায়ী বাসিন্দা বা লং-স্টে ভিসাধারীরা এর আওতার বাইরে থাকবেন।
বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক কি ? সম্পূর্ণ বাধ্যতামূলক নয়। তবে যাদের ই-পাসপোর্ট বা বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট আছে, তারা স্বয়ংক্রিয় গেট ব্যবহার করে দ্রুত ইমিগ্রেশন পার হতে পারবেন। মেশিন রিডেবল পাসপোর্টধারীদের জন্য প্রক্রিয়া কিছুটা ধীর হতে পারে।
সম্পূর্ণ চালু কবে হবে ? প্রথম ধাপ শুরু হচ্ছে ২০২৫ সালের ১২ অক্টোবর। ধাপে ধাপে সব সীমান্তে এটি কার্যকর হবে। ২০২৬ সালের ১০ এপ্রিলের মধ্যে পুরো শেনজেন এলাকায় সম্পূর্ণভাবে চালু হবে। নতুন সিস্টেম চালুর পর ধীরে ধীরে পাসপোর্টে সিল দেওয়া বন্ধ হবে এবং সব তথ্য ডিজিটালি সংরক্ষিত থাকবে, যা ২৯টি শেনজেন দেশের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।
শেনজেন বা শেংগেন অঞ্চল: শেংগেন বা শেনজেন অঞ্চল ২৯টি ইউরোপীয় রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি উন্মুক্ত সীমান্ত ব্যবস্থা ভিত্তিক অঞ্চল, যে রাষ্ট্রগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পারস্পরিক সীমান্তগুলিতে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করে দিয়েছে। শেনজেন অঞ্চলটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৃহত্তর মুক্তি, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার অঞ্চল নীতির একটি উপাদান।
আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশীদারি ভিসা নীতির অধীনে শেনজেন অঞ্চল মূলত একটি একক আইনি এখতিয়ারভুক্ত অঞ্চল হিসাবে কাজ করে। ১৯৮৫ সালে লুক্সেমবার্গের শেনজেন শহরে স্বাক্ষরিত শেনজেন চুক্তি ও ১৯৯০ সালে স্বাক্ষরিত শেনজেন সমঝোতার নামানুসারে সমগ্র অঞ্চলটির নাম “শেনজেন অঞ্চল” রাখা হয়।
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস