ভিয়েনা ০২:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উত্তর ইতালির বন্যার অব্যাহত অবনতি, এই পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০১:১৯:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩
  • ২৩ সময় দেখুন

সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত এমিলিয়া রোমাগনার অঞ্চল থেকে প্রায় ১০,০০০ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত ভবন থেকে লোকজনকে উদ্ধার অব্যাহত রয়েছে

ইউরোপ ডেস্কঃ একটানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ইতালির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। ইতালির সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এমিলিয়া-রোমাগনা অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার কারণে অন্তত ৯ জন মারা গেছেন।

দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের তৎপরতায় ইতোমধ্যে উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে, তা না হলে আরও বাড়ত হতাহতের সংখ্যা। ইতালির কেন্দ্রীয় সরকারের বেসামরিক সুরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী নেল্লো মুসুমেকি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত ৩৬ ঘণ্টায় তার এমিলিয়া রোমাগনায় যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা সেখানে বাৎসরিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণের অর্ধেকেরও বেশি। তুমুল বৃষ্টির ফলে নদী ও অন্যান্য জলাশরের পানি উপচে পড়ায় প্রদেশটির বিভিন্ন শহরের বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট এবং হাজার হাজার একর কৃষিজমি ডুবে গেছে।

এমিলিয়া-রোমাগনা প্রাদেশিক সরকারের প্রেসিডেন্ট স্টেফানো বোনাক্কিনি বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই প্রদেশে এর আগে আমরা এত বৃষ্টিপাত দেখিনি। এটা একটি অভূতপূর্ব দুর্যোগ…এত বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে যে পানি নির্গমন ব্যবস্থাগুলোও কাজ করছে না।

প্রাদেশিক সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩৬ ঘণ্টার বৃষ্টিতে এমিলিয়া-রোমাগনাজুড়ে প্রায় ১২০টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, একটি সেতু ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং সড়ক ও রেলপথগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া প্রদেশের অধিকাংশ শহর ও গ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

প্রদেশের শহর-গ্রাম মিলিয়ে অন্তত ৩৭টি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ভয়াবহ দুর্যোগে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আড্রিয়াটিক সাগরের তীরবর্তী রেভেন্না শহর। রেভেন্না নগর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী শহরের অধিকাংশ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হলেও এখন পর্যন্ত ঝুঁকিতে আছেন ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে তাদেরকে এখনও সরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।

উত্তর ইতালির স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, শুধুমাত্র মঙ্গলবার এবং বুধবারের মধ্যে সমগ্র উত্তর ইতালির ২১ টি নদীর পানি বিপদ সীমার কয়েক মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে কমপক্ষে ৩৭টি শহর সহ আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ভূমিধস এবং বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর দিয়েছে, বিশেষ করে বন্দর নগরী রাভেন্না এলাকায়। বন্যার আশঙ্কায় বেশ কিছু বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খালি করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থদের অস্থায়ীভাবে ক্রীড়া হলগুলিতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাভেনা সিটি কাউন্সিল এবং স্থানীয় পুলিশ নদীর কাছাকাছি বাসিন্দাদের উপরের তলায় যেতে অনুরোধ করেছে। ক্যাস্টেল বোলোগনিজের ছোট শহর থেকেও বেশ কয়েকজনকে তাদের বাড়িঘর থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে পানীয় জল সরবরাহে সমস্যা ছিল, যে কারণে একটি ট্যাঙ্কার দিয়ে জল সরবরাহ করা হয়েছে।

বিদ্যুৎহীন ৫০ হাজার মানুষ, এই অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট, আইরিন প্রিওলোর মতে,১০,০০০ এরও বেশি লোককে তাদের বাড়ি এবং অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। এই অঞ্চলের ৫০,০০০ মানুষ বুধবার বিদ্যুৎবিহীন ছিল এবং টেলিফোন সংযোগেও সমস্যা ছিল। ট্রেনে বিলম্ব হয়েছিল, যা প্রভাবিত করেছিল, উদাহরণস্বরূপ, উত্তর-দক্ষিণ অক্ষ মিলান-রোমের উচ্চ-গতির ট্রেনগুলি। সেখানে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও স্থবির হয়ে পড়েছে।

উপরন্তু, ঝড় ইতালির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফল ও সবজি চাষের এলাকা ধ্বংস করেছে। শস্যের পুরো ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, এবং পচনশীল খাদ্য সরবরাহে অসুবিধা হয়েছিল কারণ A14 মোটরওয়ে সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস/এম আর 

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

উত্তর ইতালির বন্যার অব্যাহত অবনতি, এই পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু

আপডেটের সময় ০১:১৯:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩

সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত এমিলিয়া রোমাগনার অঞ্চল থেকে প্রায় ১০,০০০ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত ভবন থেকে লোকজনকে উদ্ধার অব্যাহত রয়েছে

ইউরোপ ডেস্কঃ একটানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ইতালির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। ইতালির সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এমিলিয়া-রোমাগনা অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার কারণে অন্তত ৯ জন মারা গেছেন।

দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের তৎপরতায় ইতোমধ্যে উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে, তা না হলে আরও বাড়ত হতাহতের সংখ্যা। ইতালির কেন্দ্রীয় সরকারের বেসামরিক সুরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী নেল্লো মুসুমেকি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গত ৩৬ ঘণ্টায় তার এমিলিয়া রোমাগনায় যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা সেখানে বাৎসরিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণের অর্ধেকেরও বেশি। তুমুল বৃষ্টির ফলে নদী ও অন্যান্য জলাশরের পানি উপচে পড়ায় প্রদেশটির বিভিন্ন শহরের বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট এবং হাজার হাজার একর কৃষিজমি ডুবে গেছে।

এমিলিয়া-রোমাগনা প্রাদেশিক সরকারের প্রেসিডেন্ট স্টেফানো বোনাক্কিনি বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এই প্রদেশে এর আগে আমরা এত বৃষ্টিপাত দেখিনি। এটা একটি অভূতপূর্ব দুর্যোগ…এত বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে যে পানি নির্গমন ব্যবস্থাগুলোও কাজ করছে না।

প্রাদেশিক সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩৬ ঘণ্টার বৃষ্টিতে এমিলিয়া-রোমাগনাজুড়ে প্রায় ১২০টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, একটি সেতু ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং সড়ক ও রেলপথগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া প্রদেশের অধিকাংশ শহর ও গ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

প্রদেশের শহর-গ্রাম মিলিয়ে অন্তত ৩৭টি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ভয়াবহ দুর্যোগে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আড্রিয়াটিক সাগরের তীরবর্তী রেভেন্না শহর। রেভেন্না নগর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী শহরের অধিকাংশ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হলেও এখন পর্যন্ত ঝুঁকিতে আছেন ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে তাদেরকে এখনও সরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।

উত্তর ইতালির স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, শুধুমাত্র মঙ্গলবার এবং বুধবারের মধ্যে সমগ্র উত্তর ইতালির ২১ টি নদীর পানি বিপদ সীমার কয়েক মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে কমপক্ষে ৩৭টি শহর সহ আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ভূমিধস এবং বড় ক্ষয়ক্ষতির খবর দিয়েছে, বিশেষ করে বন্দর নগরী রাভেন্না এলাকায়। বন্যার আশঙ্কায় বেশ কিছু বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খালি করা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থদের অস্থায়ীভাবে ক্রীড়া হলগুলিতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাভেনা সিটি কাউন্সিল এবং স্থানীয় পুলিশ নদীর কাছাকাছি বাসিন্দাদের উপরের তলায় যেতে অনুরোধ করেছে। ক্যাস্টেল বোলোগনিজের ছোট শহর থেকেও বেশ কয়েকজনকে তাদের বাড়িঘর থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে পানীয় জল সরবরাহে সমস্যা ছিল, যে কারণে একটি ট্যাঙ্কার দিয়ে জল সরবরাহ করা হয়েছে।

বিদ্যুৎহীন ৫০ হাজার মানুষ, এই অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট, আইরিন প্রিওলোর মতে,১০,০০০ এরও বেশি লোককে তাদের বাড়ি এবং অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। এই অঞ্চলের ৫০,০০০ মানুষ বুধবার বিদ্যুৎবিহীন ছিল এবং টেলিফোন সংযোগেও সমস্যা ছিল। ট্রেনে বিলম্ব হয়েছিল, যা প্রভাবিত করেছিল, উদাহরণস্বরূপ, উত্তর-দক্ষিণ অক্ষ মিলান-রোমের উচ্চ-গতির ট্রেনগুলি। সেখানে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও স্থবির হয়ে পড়েছে।

উপরন্তু, ঝড় ইতালির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফল ও সবজি চাষের এলাকা ধ্বংস করেছে। শস্যের পুরো ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, এবং পচনশীল খাদ্য সরবরাহে অসুবিধা হয়েছিল কারণ A14 মোটরওয়ে সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস/এম আর