ভিয়েনা ১১:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশের হাফেজ তাকরিম

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৪:৪৪:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩
  • ২৬ সময় দেখুন

২৬ তম দুবাই আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশর হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বাংলাদেশের সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম স্থান অধিকারী হিসেবে হাফেজ তাকরিমের নাম ঘোষণা করা হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরের এক্সপো সিটির আল-ওয়াসাল প্লাজায় অনুষ্ঠিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তাঁকে পুরস্কার ও সম্মাননা তুলে দেন শেখ মুহাম্মদ বিন রশিদ বিন মুহাম্মদ রশিদ আলে-মাকতুম। তাছাড়াও তাকরিমের ১ম স্থান অর্জন করার বিষয়টি ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন মারকাযু ফয়জিল কোরআনের শিক্ষক হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এরপর থেকেই হাফেজ তাকরিমকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজনরা তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সবাই তার মঙ্গল কামনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার তাঁকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, গত ২৪ মার্চ থেকে শুরু হয় দুবাই আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতার ২৬ তম পর্ব। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের প্রায় ১৫৬টি দেশের প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম প্রথম হওয়ায় সনদ ছাড়াও বাংলাদেশী মুদ্রায় অর্থ পেয়েছেন প্রায় ৭২ লাখ টাকা।

এই প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান লাভ করে বাংলাদেশের হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। ২য় স্থান লাভ করে ইথিওপিয়ার আব্বাস হাদি উমর ও ৩য় স্থান লাভ করে সৌদি আরবের খালিদ সুলাইমান সালিহ আল-বারকানি।

যৌথভাবে ৪র্থ স্থান লাভ ক্যামেরুনের নুরুদ্দিন ও ইন্দোনেশিয়ার ফাতওয়া হাদিস মাওলানা এবং ৬ষ্ঠ স্থান লাভ করে কেনিয়ার আবদুল আলিম আবদুর রহিম মুহাম্মদ হাজি। যৌথভাবে ৭ম স্থান লাভ করে সিরিয়ার মুহাম্মদ হাজ আসআদ ও ইয়েমেনের মুহাম্মদ আবদুহু আহমদ কাসিম। যৌথভাবে ৯ম স্থান লাভ করে ব্রুনাইয়ের আবদুল আজিজ বিন নুর নাসরান ও মরক্কোর হামজা মুসতাকিম।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক ইনকিলাব এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতিমান কোরআন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ আন্তর্জাতিক এই প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন বাংলাদেশের শায়খ শুয়াইব মুজিবুল হক, সৌদি আরবের ড. আহমদ বিন হামুদ, আমিরাতের ড. সালিম আল-দাওবি, মরক্কোর শায়খ আবদুল্লাহ আইশ, মিসরের জামাল ফারুক, পাকিস্তানের ড. আহমদ মিয়া থানভিসহ আরো অনেকে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর মার্চে ইরানে অনুষ্ঠিত কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম এবং সেপ্টেম্বরে মক্কায় অনুষ্ঠিত কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অধিকার করে তাকরিম। সালেহ আহমদ তাকরিম ঢাকার মারকাযু ফয়জিল কোরআন আল ইসলামী মাদরাসার কিতাব বিভাগের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার ভাদ্রা গ্রামে। তাঁর বাবা হাফেজ আব্দুর রহমান মাদ্রাসার শিক্ষক।

হাফেজ তাকরিমের এই সাফল্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শত শত স্ট্যাটাস ও মন্তব্যের মধ্যে প্রখ্যাত দীনি আলেম মাওলানা ডা. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ! ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ! দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জনকারী হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিমকে মোবারকবাদ। শুভ কামনা রইল মারকাযু ফয়জিল কোরআন ইসলামী ও তার শিক্ষকদের জন্য।

তিনি আরও লিখেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতাতে বাংলাদেশের এক ফুটন্ত গোলাপ হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিম ১ম স্থান অর্জন করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এদেশের মানুষের হৃদয়ে আশার সঞ্চার করেছে এবং সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ যে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র সে কথার প্রমাণ দিয়েছে।

ডা. এনায়েতুল্লাহ লেখেন, দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় এই যে-আন্তর্জাতিক হাফেজে কোরআন যখন দেশে ফিরে আসে তখন তাদের জন্য সংবর্ধনার কোনো ব্যবস্থা থাকে না। জাতি হিসেবে এটা আমাদের চরম ব্যর্থতা ছাড়া আর কি হতে পারে?

মিশরের মতো একটি সেক্যুলার রাষ্ট্রেও আন্তর্জাতিক ক্বারী ও হাফেজে কোরআনদেরকে রাষ্ট্রীয় পদক ও ক্রেস্ট তুলে দেন সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানগণ। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই ও থাইল্যান্ডে ক্বারী ও হাফেজদেরকে কি সম্মান ও সংবর্ধনা দেওয়া হয় তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। আর তুরস্কের বিষয় তো আরো ভিন্ন। সে সব রাষ্ট্রগুলোতে প্রচুর সেক্যুলার বুদ্ধিজীবী আছে যারা নিজ মতাদর্শে বিশ্বাসী হলেও ইসলামি তাহযিব-তামাদ্দুন ও আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

তিনি সহ আরও অনেকে আশা করছেন বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ ও
পরিকল্পনা নিবেন।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস/এম আর 

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেন বাংলাদেশের হাফেজ তাকরিম

আপডেটের সময় ০৪:৪৪:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩

২৬ তম দুবাই আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশর হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বাংলাদেশের সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম স্থান অধিকারী হিসেবে হাফেজ তাকরিমের নাম ঘোষণা করা হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরের এক্সপো সিটির আল-ওয়াসাল প্লাজায় অনুষ্ঠিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তাঁকে পুরস্কার ও সম্মাননা তুলে দেন শেখ মুহাম্মদ বিন রশিদ বিন মুহাম্মদ রশিদ আলে-মাকতুম। তাছাড়াও তাকরিমের ১ম স্থান অর্জন করার বিষয়টি ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন মারকাযু ফয়জিল কোরআনের শিক্ষক হাফেজ আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এরপর থেকেই হাফেজ তাকরিমকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজনরা তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সবাই তার মঙ্গল কামনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার তাঁকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননা দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, গত ২৪ মার্চ থেকে শুরু হয় দুবাই আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতার ২৬ তম পর্ব। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের প্রায় ১৫৬টি দেশের প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম প্রথম হওয়ায় সনদ ছাড়াও বাংলাদেশী মুদ্রায় অর্থ পেয়েছেন প্রায় ৭২ লাখ টাকা।

এই প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান লাভ করে বাংলাদেশের হাফেজ সালেহ আহমেদ তাকরিম। ২য় স্থান লাভ করে ইথিওপিয়ার আব্বাস হাদি উমর ও ৩য় স্থান লাভ করে সৌদি আরবের খালিদ সুলাইমান সালিহ আল-বারকানি।

যৌথভাবে ৪র্থ স্থান লাভ ক্যামেরুনের নুরুদ্দিন ও ইন্দোনেশিয়ার ফাতওয়া হাদিস মাওলানা এবং ৬ষ্ঠ স্থান লাভ করে কেনিয়ার আবদুল আলিম আবদুর রহিম মুহাম্মদ হাজি। যৌথভাবে ৭ম স্থান লাভ করে সিরিয়ার মুহাম্মদ হাজ আসআদ ও ইয়েমেনের মুহাম্মদ আবদুহু আহমদ কাসিম। যৌথভাবে ৯ম স্থান লাভ করে ব্রুনাইয়ের আবদুল আজিজ বিন নুর নাসরান ও মরক্কোর হামজা মুসতাকিম।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক ইনকিলাব এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খ্যাতিমান কোরআন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ আন্তর্জাতিক এই প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন বাংলাদেশের শায়খ শুয়াইব মুজিবুল হক, সৌদি আরবের ড. আহমদ বিন হামুদ, আমিরাতের ড. সালিম আল-দাওবি, মরক্কোর শায়খ আবদুল্লাহ আইশ, মিসরের জামাল ফারুক, পাকিস্তানের ড. আহমদ মিয়া থানভিসহ আরো অনেকে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর মার্চে ইরানে অনুষ্ঠিত কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম এবং সেপ্টেম্বরে মক্কায় অনুষ্ঠিত কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অধিকার করে তাকরিম। সালেহ আহমদ তাকরিম ঢাকার মারকাযু ফয়জিল কোরআন আল ইসলামী মাদরাসার কিতাব বিভাগের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার ভাদ্রা গ্রামে। তাঁর বাবা হাফেজ আব্দুর রহমান মাদ্রাসার শিক্ষক।

হাফেজ তাকরিমের এই সাফল্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শত শত স্ট্যাটাস ও মন্তব্যের মধ্যে প্রখ্যাত দীনি আলেম মাওলানা ডা. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ! ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ! দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জনকারী হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিমকে মোবারকবাদ। শুভ কামনা রইল মারকাযু ফয়জিল কোরআন ইসলামী ও তার শিক্ষকদের জন্য।

তিনি আরও লিখেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতাতে বাংলাদেশের এক ফুটন্ত গোলাপ হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিম ১ম স্থান অর্জন করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এদেশের মানুষের হৃদয়ে আশার সঞ্চার করেছে এবং সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ যে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র সে কথার প্রমাণ দিয়েছে।

ডা. এনায়েতুল্লাহ লেখেন, দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় এই যে-আন্তর্জাতিক হাফেজে কোরআন যখন দেশে ফিরে আসে তখন তাদের জন্য সংবর্ধনার কোনো ব্যবস্থা থাকে না। জাতি হিসেবে এটা আমাদের চরম ব্যর্থতা ছাড়া আর কি হতে পারে?

মিশরের মতো একটি সেক্যুলার রাষ্ট্রেও আন্তর্জাতিক ক্বারী ও হাফেজে কোরআনদেরকে রাষ্ট্রীয় পদক ও ক্রেস্ট তুলে দেন সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানগণ। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই ও থাইল্যান্ডে ক্বারী ও হাফেজদেরকে কি সম্মান ও সংবর্ধনা দেওয়া হয় তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। আর তুরস্কের বিষয় তো আরো ভিন্ন। সে সব রাষ্ট্রগুলোতে প্রচুর সেক্যুলার বুদ্ধিজীবী আছে যারা নিজ মতাদর্শে বিশ্বাসী হলেও ইসলামি তাহযিব-তামাদ্দুন ও আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

তিনি সহ আরও অনেকে আশা করছেন বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ ও
পরিকল্পনা নিবেন।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস/এম আর