ইবিটাইমস ডেস্ক : ফিলিস্তিনের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে আজ ভোরে দেশে ফিরেছেন আলোকচিত্রি ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম। দেশে ফিরে শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সেখানে তিনি পুরো ঘটনার বর্ণনা করেন। আবার তারা জাহাজ নিয়ে সেখানে যাবেন এমন আশাবাদও ব্যক্ত করেন শহিদুল আলম।
তিনি বলেন, আমাদের মনে হয়েছিল শুধু কথা বললে হবে না। দৈহিকভাবে এই অবৈধ অবরোধ ভাঙতে হবে। এজন্য ফ্লোটিলা যাত্রা করতে হচ্ছে। ৮ অক্টোবর আমাদের অপহরণ করা হয়। কনশিয়েন্স ফ্লোটিলা ছিল সবচেয়ে বড় জাহাজ। সুমুদ ফ্লোটিলা থেকেও বড়। এই জাহাজে ছিল সাংবাদিক আর স্বাস্থ্যকর্মীরা। গাজায় চিকিৎসাকর্মী এবং সাংবাদিক ঢুকতে না দেয়ার প্রতিবাদ ও গাজার সাংবাদিক আর চিকিৎসা কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে এই জাহাজ নিয়ে যাত্রা শুরু করা হয়েছিল।
শহিদুল আলম বলেন, ইসরায়েল নিয়মিত আন্তর্জাতিক আইন ভাঙছে। কিন্তু তাদের কোনও শাস্তি পেতে হচ্ছে না। ৭ অক্টোবর আমাদের পৌঁছানোর কথা ছিল। ইসরায়েল আমাদের হামাস সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করতে চেয়েছিলো। এজন্য আমরা ৮ অক্টোবর পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নেই।
মেইনস্ট্রিম গণমাধ্যমের কেউ ফ্লোটিলায় যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মূলধারার গণমাধ্যমের ভূমিকা খুবই বাজে। পুরোনো সাধারণ জাহাজ ছিল এটি। যেখানে শৌচাগার ছিল না। শোয়ার জায়গা ছিল না। কোনো মালিক বা ক্রু এ ধরনের দুঃসাহসী যাত্রায় রাজি ছিলো না। আমি গিয়েছি, গোটা বাংলাদেশ আমার পাশে ছিল। প্রধান উপদেষ্টা তার মুক্তির ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তাদের আটক করার সময়ের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, পঞ্চাশ জনের মতো মিলিটারি আসে। তারা সবাই অস্ত্রসজ্জিত ছিলো। হেলিকপ্টারে করে ওরা জাহাজের ডেকে নামে। এরপরই আমরা মোবাইল-ল্যাপটপ সমুদ্রে ফেলে দিই। এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। তখন নিশ্চিত হই যে আমরা আর গাজায় যেতে পারবো না। ইসরায়েলে কারাগারে যেতে চলেছি। গ্রেফতারের সময় আমরা গাজা থেকে ১৮০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিলাম।
তিনি বলেন, আমাদের কথা বলারও সুযোগ ছিল না। মানসিক অত্যাচার বেশি করেছে। হাত পেছনে বেঁধে রাখা হয়েছিল। একজন ফিলিস্তিনি শার্ট পরা ছিল। তার ওপর চড়াও হয়। আমাদের হাঁটু গেড়ে বসতে হয়েছিল। কষ্ট হচ্ছিল যে, ওরা প্রস্রাব করে সেখানে আমাদের বসিয়েছে। আমার পাসপোর্ট বারবার ওই মাটিতে ফেলেছিল। তারা বলতে চাচ্ছিল যে আমরা অবৈধভাবে ইসরায়েলে প্রবেশ করেছি। তবে আমরা সেখানে স্বাক্ষর করিনি।
ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মমতা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দুই ফুট বাই পাঁচফুট একটা কক্ষে আমাদের রাখা হয়। সেখানে খুব ঠাণ্ডা ছিল। আমরা অনশন শুরু করি। কিছুই খাইনি। লোহার বিছানা ছিল। শৌচাগার খুব খারাপ ছিল। একপর্যায়ে তা নিয়ে আমরা গান শুরু করি। পরে সেখান থেকে আমাদের সরিয়ে নেয়া হয়। আমাদের বারবার ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হয়। আন্তর্জাতিকভাবে একটা নেটওয়ার্ক করার চেষ্টা করছি। আবার আমরা যাবো, এবং সেখানে হাজার জাহাজ নিয়ে যাবো।
ঢাকা/এসএস





















