ভিয়েনা ০২:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এবার প্রকাশ্যে বোরকা ও নিকাব নিষিদ্ধে বিল আনছে ইতালি

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ১২:২৩:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫
  • ১০৫ সময় দেখুন

ইতালির ক্ষমতাসীন দল ‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ জনসমাগমের স্থানে মুসলিম নারীদের বোরকা ও নিকাব পরিধান নিষিদ্ধ করার একটি নতুন বিল আনার পরিকল্পনা করেছে

ইউরোপ ডেস্কঃ বুধবার (৮ অক্টোবর) ইতালির গণমাধ্যম পলিটিকো জানায়, প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির নেতৃত্বাধীন এই ডানপন্থী দলটি নতুন এই পদক্ষেপটিকে ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে।

প্রস্তাবিত বিলটি আইন হিসেবে পাস হলে, দোকান, বিদ্যালয়, অফিসসহ সব ধরনের পাবলিক স্পেসে মুখ পুরোপুরি আবৃত রাখার পোশাক নিষিদ্ধ হবে। আইনের লঙ্ঘনকারীদের ৩০০ ইউরো থেকে ৩ হাজার ইউরো পর্যন্ত (প্রায় ৪৩ হাজার থেকে ৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা) জরিমানা গুনতে হতে পারে।

এদিকে বিলের অন্যতম প্রণেতা ও আইনপ্রণেতা আন্দ্রেয়া দেলমাস্ট্রো বুধবার তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা পবিত্র, তবে এটি অবশ্যই প্রকাশ্যে, আমাদের সংবিধান এবং ইতালীয় রাষ্ট্রের নীতির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে অনুশীলন করতে হবে।’

তিনি আরও যোগ করে বলেন, প্রস্তাবিত এই আইনটি সরকারের বৃহত্তর ‘বিচ্ছিন্নতাবাদবিরোধী উদ্যোগের’ অংশ, যার লক্ষ্য ইতালির সামাজিক ঐক্য ও ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো সংরক্ষণ করা।

তুরস্কের আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা আনাদোলু নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে,‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ দলের অভিবাসন বিষয়ক প্রধান সারা কেলানি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই বিলের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মসজিদগুলোর অর্থায়ন ও ধর্মীয় তহবিলের উৎসের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি এটি পূর্ণ মুখাবরণ নিষিদ্ধ, জোরপূর্বক বিবাহ প্রতিরোধ এবং রাষ্ট্রের অনুমোদনবিহীন ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর বিদেশি তহবিলের উৎস প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা—এই তিনটি দিককে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।

ইসলাম ধর্মে বোরকা হলো এমন একটি পোশাক যা একজন নারীকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে আচ্ছাদিত রাখে, যেখানে চোখের অংশে জালির মতো একটি আবরণ থাকে। অন্যদিকে, নিকাব মুখের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে রাখলেও চোখের চারপাশের অংশটি উন্মুক্ত থাকে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পূর্বেও নিরাপত্তা ও সামাজিক সংহতির কারণ দেখিয়ে এ ধরনের পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এই প্রস্তাবের মাধ্যমে মেলোনি সরকারের লক্ষ্য স্পষ্ট—ইতালিতে ধর্মীয় পোশাক ও প্রভাবের সীমা নির্ধারণ করে তথাকথিত ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদ’ নিয়ন্ত্রণে আনা। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইতোমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, এই আইনটি ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

এবার প্রকাশ্যে বোরকা ও নিকাব নিষিদ্ধে বিল আনছে ইতালি

আপডেটের সময় ১২:২৩:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

ইতালির ক্ষমতাসীন দল ‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ জনসমাগমের স্থানে মুসলিম নারীদের বোরকা ও নিকাব পরিধান নিষিদ্ধ করার একটি নতুন বিল আনার পরিকল্পনা করেছে

ইউরোপ ডেস্কঃ বুধবার (৮ অক্টোবর) ইতালির গণমাধ্যম পলিটিকো জানায়, প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির নেতৃত্বাধীন এই ডানপন্থী দলটি নতুন এই পদক্ষেপটিকে ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে।

প্রস্তাবিত বিলটি আইন হিসেবে পাস হলে, দোকান, বিদ্যালয়, অফিসসহ সব ধরনের পাবলিক স্পেসে মুখ পুরোপুরি আবৃত রাখার পোশাক নিষিদ্ধ হবে। আইনের লঙ্ঘনকারীদের ৩০০ ইউরো থেকে ৩ হাজার ইউরো পর্যন্ত (প্রায় ৪৩ হাজার থেকে ৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা) জরিমানা গুনতে হতে পারে।

এদিকে বিলের অন্যতম প্রণেতা ও আইনপ্রণেতা আন্দ্রেয়া দেলমাস্ট্রো বুধবার তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা পবিত্র, তবে এটি অবশ্যই প্রকাশ্যে, আমাদের সংবিধান এবং ইতালীয় রাষ্ট্রের নীতির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে অনুশীলন করতে হবে।’

তিনি আরও যোগ করে বলেন, প্রস্তাবিত এই আইনটি সরকারের বৃহত্তর ‘বিচ্ছিন্নতাবাদবিরোধী উদ্যোগের’ অংশ, যার লক্ষ্য ইতালির সামাজিক ঐক্য ও ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো সংরক্ষণ করা।

তুরস্কের আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা আনাদোলু নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে,‘ব্রাদার্স অব ইতালি’ দলের অভিবাসন বিষয়ক প্রধান সারা কেলানি এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এই বিলের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মসজিদগুলোর অর্থায়ন ও ধর্মীয় তহবিলের উৎসের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি এটি পূর্ণ মুখাবরণ নিষিদ্ধ, জোরপূর্বক বিবাহ প্রতিরোধ এবং রাষ্ট্রের অনুমোদনবিহীন ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর বিদেশি তহবিলের উৎস প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা—এই তিনটি দিককে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।

ইসলাম ধর্মে বোরকা হলো এমন একটি পোশাক যা একজন নারীকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে আচ্ছাদিত রাখে, যেখানে চোখের অংশে জালির মতো একটি আবরণ থাকে। অন্যদিকে, নিকাব মুখের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে রাখলেও চোখের চারপাশের অংশটি উন্মুক্ত থাকে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পূর্বেও নিরাপত্তা ও সামাজিক সংহতির কারণ দেখিয়ে এ ধরনের পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এই প্রস্তাবের মাধ্যমে মেলোনি সরকারের লক্ষ্য স্পষ্ট—ইতালিতে ধর্মীয় পোশাক ও প্রভাবের সীমা নির্ধারণ করে তথাকথিত ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদ’ নিয়ন্ত্রণে আনা। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইতোমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, এই আইনটি ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস