১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ, প্রতারকের বিরুদ্ধে গৃহবধুর সংবাদ সম্মেলন

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : পিতা, মা ও সন্তানের যৌথ প্রতারণার শিকার হয়েছে ফুলমতি নামে এক গৃহবধু। জমি বিক্রির নামে তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ১৫ লাখ টাকা। ক্ষতি পুরণসহ টাকা ফেরতের দাবী শনিবার দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই গৃহবধু।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ফুলমতির স্বামী সাবেক সেনা সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন, আসাদুজ্জামান ও আব্দুল আলীম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ঝিনাইদহ পৌরসভার মহিষাকুণ্ডু মৌজার ২৩৮ নং দাগে বাড়িসহ চার শতক জমি বিক্রির কথা জানান জমির মালিক মোঃ সাগর ও তার পিতা মোঃ মোলাম মন্ডল এবং মা আয়শা খাতুন। সাগর ও তার পরিবারের সাথে দামদর করে ৪০ লাখ টাকায় বাড়িসহ জমিটি বিক্রি করবে বলে জনালে তিনি ১৫ লাখ টাকার বায়না করেন। এই জমি কিনতে তিনি দুইটি গরুসহ সংসারের বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করেন।

গত ১৩ জুলাই সাগরের কথামত তিনশত টাকার স্টাম্পের মাধ্যমে তাকে নগত ১৫ লক্ষ টাকা বায়না করা হয়। বায়নার সময় মহিষাকুন্ডু গ্রামের মকলেস আলী, কোরাপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন, গয়াসপুর গ্রামের বয়জদ্দীন আহম্মেদ ও শিংগা গ্রামের মনোয়ার হোসেন সাক্ষি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বায়না করার পর চুক্তি অনুযায়ী বাকি টাকা নিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য সাগরকে ফোন করা হলে তিনি ২০ জুলাই জমি রেজিস্ট্রি করে দিবেন বলে জানান।

ফুলমতি জানান, জমি রেজিষ্ট্রির দিনক্ষণ ঠিক হওয়ায় তিনি নিজের গহনা বিক্রি ও চাষের সব জমি বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করে ওই তারিখে রেজিস্ট্রি অফিসে উপস্থিত হন। সারাদিন রেজিষ্ট্রি অফিসে বসে থাকার পর সাগর না আসায় তাকে ফোন করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর তার বাসায় গেলে সাগরের পিতামাতা তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে বলেন, ছেলে টাকা নিয়েছে তার কাছে যাও সে তোমাদের জমি রেজিষ্ট্রি করে দিবে। কিছুদিন পর প্রতিবেশির মাধ্যমে ফুলমতি জানতে পারে প্রতারক সাগর মালয়েশিয়া চলে গেছে। যাওয়ার সময় গোপনে জমিটি তার মা আয়েশা খাতুনের নামে দলিল করে গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে ফুলমতি উল্লেখ করেন, তিনি অতি সাধারণ পরিবারের সদস্য হিসেবে বহুকষ্টে ১৫ লাখ টাকা জোগাড় করে জমি বায়না করেছেন। এখন তিনি জানতে পারেন সাগরের গোটা পরিবার প্রতারক। তারা জমি বিক্রির কথা বলে এভাবেই মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে। হুমকি ও প্রাণনাশের অভিযোগ তুলে আরো বলেন, জমির বায়নার টাকা ফেরত চাইতে গেলে সাগরের পরিবার উল্টো হুমকি দিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হয়রানিমূলক মামলা করেন।

এ ঘটনায় তিনি থানায়, র‌্যাব ক্যাম্পে ও সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ করলেও কোনো সুরাহা পাননি। সংবাদ সম্মেলনে ফুলমতি খাতুন প্রশাসনের প্রতি তার বায়নাকৃত ১৫ লাখ টাকা (ক্ষতিপূরণসহ) ফেরত দেওয়া এবং প্রতারক সাগর, তার পিতা মোলাম মণ্ডল ও মা আয়শা খাতুনকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।
ঢাকা/ইবিটাইমস/এসএস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »