যার যতটুকু ক্ষমতা আছে তা নিয়ে সিলেট সুনামগঞ্জসহ দেশের বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাড়ান: নেছারাবাদী হুজুর

ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ দেশের বন্যা পরিস্থিতি, বিশেষত সিলেট-সুনামগঞ্জের অবস্থা অত্যন্ত মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। এ অবস্থায় জনগণকে রক্ষা করতে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনার পাশাপাশি যার যতটুকু ক্ষমতা আছে তা নিয়ে দেশের বন্যা-কবলিত মানুষের পাশে দঁাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন আমীরুল মুছলিহীন হযরত মাওলানা মুহম্মদ খলীলুর রহমান নেছারাবাদী হুজুর।

শুক্রবার বাদ মাগরিব ঝালকাঠি নেছারাবাদ দরবার শরীফে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক মহামারী করোনাউত্তর নেছারাবাদ কমপ্লেক্সের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পরামর্শ ও দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

নেছারাবাদী হুজুর বলেন, ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট এই বন্যা গত ৪২ বছরের ইতিহাসকেও হার মানিয়েছে। দুর্গত অসহায় মানুষ আশ্রয়ের অভাবে, খাদ্যের অভাবে হাহাকার করছে। কোন যায়গায় বাড়ি ঘর, গাছপালা, ফসল, পশু পাখির সঙ্গে মানুষও ভেসে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে তাদের পাশে সাহায্যের হাত বাড়ানো এবং তাদের জান-মাল রক্ষার জন্য শারীরিক ও মানসিক সহায়তা দেয়া প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব।

সভায় হযরত নেছারাবাদী হুজুরের একটি লিখিত ভাষণ পাঠ করা হয়। এতে নেছারাবাদ কমপ্লেক্সের নানামুখি কার্যক্রম, আন্তর্জাতিক পরিচিতি, সমস্যা ও সম্ভাবনা প্রভৃতি বিষয়ে গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ বর্ণনা উপস্থাপন করা হয়।

লিখিত ভাষণে নেছারাবাদী হুজুর উল্লেখ করেন, ‘হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুরকে (রহ.) ভালোবাসার পাশাপাশি তঁার চিন্তা চেতনাকে আমরা যত বেশি উপলব্ধি করতে পারবো, ততই আমাদের ভালোবাসা সার্থক হবে, অটুট থাকবে এই বন্ধন। হুজুর সম্পর্কে জানার ঘাটতি থাকলে বিভ্রান্তির বেড়াজালে জড়িয়ে পড়তে হবে, গোলকধাঁধায় পড়তে হবে। হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর রহ. এর অনুসৃত পথে যে গতিতে আমরা অগ্রসর হচ্ছি, ইমাম ছাহেবান, ওলামায়ে কেরাম, শিক্ষকমণ্ডলী, ছাত্র-যুবক, মেহনতি মানুষের সহযোগিতা যেভাবে পাচ্ছি, সেদিন বেশি দূরে নয় ধর্মদ্রোহী, নাস্তিক, যালেম, চরিত্রহীন, সুদখোর, ঘুষখোর, মদখোর, জুয়াড়ি, সমাজিক শৃঙ্খলা নস্যাতকারীদের অপকর্মমুক্ত একটি আদর্শ সমাজ অচিরেই গড়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ।

লিখিত ভাষণে তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘নেছারাবাদের এই বিশাল কর্মকাণ্ড কেউ-কেউ না বুঝে সমালোচনা করতে পারে তাতে আমাদের ব্যথিত হওয়া ঠিক হবে না; মনে রাখতে হবেÑতারাও আমাদের। ঝালকাঠির মুসলিম কি হিন্দু সবাই-তো নেছারাবাদকে ভালোবাসে। বুঝে না বুঝে যারা সমালোচনা করে, আমি দোয়া করি আল্লাহ তাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন। ঝালকাঠি শহরের সর্বস্তরের ব্যক্তিবর্গ, বিশেষ করে ব্যবসায়ী, আইনজীবী, সাংবাদিক, পেশাজীবী ভাইয়েরা স্বস্ব অবস্থান থেকে আন্তরিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন বলেই দ্রুত সময়ে এত বিশাল রূপ নিয়েছে অত্র কমপ্লেক্স। এ বিশাল প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠু, সুশৃংঙ্খলভাবে চলার জন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সমাজসেবা, বিদ্যুৎ, বিটিসিএল ও অন্যান্য দপ্তর তাদের খেদমত যেভাবে করে যাচ্ছে তাতে আমরা ঝালকাঠিবাসী কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে সাবেক খাদ্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ছাহেবের অবদান এবং সরকারের মন্ত্রী এমপিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিবৃন্দের অবদান কখনোই ভোলার নয়। নেছারাবাদ যেহেতু লে-ওয়াজহিল্লাহ কেবল আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্যই কায়েম করা হয়েছে, এর সাথে ষড়যন্ত্র করে অতীতেও কেউ রক্ষা পায়নি, এখনও পাবে না বরং নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য পেশ করেনÑসদর উপজেলা পরিষদ-চেয়ারম্যান জনাব খান মো. আরিফুর রহমান, নলছিটি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জনাব মো. সিদ্দিকুর রহমান, ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ হিযবুল্লাহ জমিয়াতুল মুছলিহীনের জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা মুফতী গাজী মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদরাসার সাবেক সহকারী অধ্যাপক (বাংলা) জনাব মোঃ আবু জাফর মুকুল, ঝালকাঠি ইসলামিয়া সিনিয়র মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ, বাংলাদেশ আদর্শ সমাজ বাস্তবায়ন পরিষদের মহাসচিব ও মাওলানা আযীযুর রহমান, নেছারাবাদী হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. মো. মোসাদ্দেক হোসেন খান, জেলা মুছলিহীন সভাপতি মো. আবু বকর খান বাচ্চু, জেলা চেম্বার অফ কমার্স সভাপতি জনাব মো. মনিরুল ইসলাম তালুকদার, কুতুবনগর আযীযিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা কাজী মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান, ঝালকাঠি প্রেস ক্লাব সভাপতি জনাব কাজী মো. খলীলুর রহমান, জেলা আদর্শ সমাজ বাস্তবায়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জনাব মো. আনোয়ার হোসেন আনু, জেলা মুছলিহীনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুন্সি আবুল কালাম আজাদ, পৌর মুছলিহীন সভাপতি জনাব মো. মনোয়ার হোসেন খান।

সভায় মহানবী হযরত মুহম্মদ স.এর অবমাননাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করে এবং দেশ-জাতি-উম্মাহর কল্যাণ ও বন্যাকবলিতদের প্রতি রহমত নাযিলের মিনতি করে দোয়া মুনাজাত ও তাবারক বিতরণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

বাধন রায় /ইবিটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »