ভিয়েনা ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শীতেও ভাঙ্গছে ভোলার তেতুঁলিয়া, দুশ্চিন্তায় নদীপাড়ের মানুষ

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০১:২১:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ জানুয়ারী ২০২১
  • ৪ সময় দেখুন

ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলার নদী ভাঙ্গন আবার ভয়াবহ রুপ ধারন করেছে। ‘তেতুঁলিয়া নদীতে তিনবার ভাঙা দিছে, এখন আবারো ভাঙনের মুখে রয়েছি, এই ঘরটাও যেকোনো সময় নাই হয়ে যাব। আমরা গরিব মানুষ, কোথায় যাবো কোথায় আশ্রয় নেব, কোথায় নতুন করে ঘর তুলবো বলতে পারছি না।’ চোখমুখে দুশ্চিন্তায় ছাপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন আমেনা বেগম।

তেঁতুলিয়া নদীর পাড়েই বসবাস নিলুফা বেগমের। নদীর দিকে তাকিয়ে বলেন, এক সময় আমাদের বাড়ি চটকিমারা এলাকায় ছিলো, গত কয়েক বছরে ভাঙতে ভাঙতে এখন এখানে বসতি তুলেছি। পাঁচ বার নদীতে ভাঙার পর এখন আবার ভাঙনের মুখে পড়েছি। ভাঙনের কারণে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। স্বামী মাছ ধরার কাজ করে, পাঁচ ছেলে-মেয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। শুধু আমেনা ও নিলুফা বেগম নয়, তাদের মত এমন অবস্থা এখন অনেকের।

তেঁতুলিয়ার ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপকূলের বিপন্ন মানুষ। ভোলা সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের মধ্য ও উত্তর ভেদুরিয়া নামে দুটি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা তেঁতুলিয়ার ভয়ানক ভাঙনের মুখে পড়েছে। বসতঘর ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গত বর্ষায় অনেকেই গৃহহারা হয়েছেন। এখন শীত মৌসুমেও চলছে ভাঙন। এতে শতাধিক বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে ভাঙনের মুখে রয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই অন্যত্র ঘর সরিয়ে নেওয়ার সময়ও পাচ্ছেন না। এ পরিস্থিতিতে অনেকেই এখন আতঙ্কগ্রস্ত। ভাঙনের মুখে পড়ে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে ভেদুরিয়া।

ভাঙনের শিকার ফজলু মাতাব্বর ইউরো বাংলা টাইমস কে বলেন, ‘বর্ষার সময় এখনকার  অনেক ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। অনেকেই ভেবেছিলো শীত মৌসুমে ভাঙন বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু শীতেও চলছে ভাঙন। তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় ঘর-বাড়ি, গাছপালা তুলে নিতেও পারছে না কেউ কেউ। তেঁতুলিয়া পাড়ের মধ্য ভেদুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা হাসেম বলেন, এখন পর্যন্ত ২০০ ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাদের মত আমরাও ভাঙনের শিকার হয়েছি, দ্রুত বাঁধ না দিলে আমরা এখানে বসবাস করতে পারবো না।’ইসমাইল মোল্লা বলেন, সহায় সম্বল বলতে আমাদের ঘরটুকু রয়েছে তাও ভাঙনের মুখে।

সরেজমনি গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভেদুরিয়া ইউনিয়নের লঞ্চঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া পাড়ে উত্তর ভেদুরিয়া ও মধ্য ভেদুরিয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা ভাঙনের মুখে। ফসলের ক্ষেত, ঘরবাড়ি ও গাছ-পালাসহ বিস্তীর্ণ জনপদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় এলাকার মানুষ। এ ব্যাপারে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল আক্তার দৈনিক জবাবদিহিকে বলেন, তেঁতুলিয়া নদীতে যে পয়েন্ট দিয়ে ভাঙন চলছে ওই পয়েন্টে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি প্রকল্পের প্রস্তবনা দেওয়া হয়েছে। এখন ওই এলাকায় সমীক্ষার কাজ চলছে। সমীক্ষা শেষ হলেই আশাকরি খুব শিগগিরই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাব্বির আলম বাবু 

Tag :
জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

শীতেও ভাঙ্গছে ভোলার তেতুঁলিয়া, দুশ্চিন্তায় নদীপাড়ের মানুষ

আপডেটের সময় ০১:২১:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ জানুয়ারী ২০২১

ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলার নদী ভাঙ্গন আবার ভয়াবহ রুপ ধারন করেছে। ‘তেতুঁলিয়া নদীতে তিনবার ভাঙা দিছে, এখন আবারো ভাঙনের মুখে রয়েছি, এই ঘরটাও যেকোনো সময় নাই হয়ে যাব। আমরা গরিব মানুষ, কোথায় যাবো কোথায় আশ্রয় নেব, কোথায় নতুন করে ঘর তুলবো বলতে পারছি না।’ চোখমুখে দুশ্চিন্তায় ছাপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন আমেনা বেগম।

তেঁতুলিয়া নদীর পাড়েই বসবাস নিলুফা বেগমের। নদীর দিকে তাকিয়ে বলেন, এক সময় আমাদের বাড়ি চটকিমারা এলাকায় ছিলো, গত কয়েক বছরে ভাঙতে ভাঙতে এখন এখানে বসতি তুলেছি। পাঁচ বার নদীতে ভাঙার পর এখন আবার ভাঙনের মুখে পড়েছি। ভাঙনের কারণে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। স্বামী মাছ ধরার কাজ করে, পাঁচ ছেলে-মেয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। শুধু আমেনা ও নিলুফা বেগম নয়, তাদের মত এমন অবস্থা এখন অনেকের।

তেঁতুলিয়ার ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপকূলের বিপন্ন মানুষ। ভোলা সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের মধ্য ও উত্তর ভেদুরিয়া নামে দুটি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা তেঁতুলিয়ার ভয়ানক ভাঙনের মুখে পড়েছে। বসতঘর ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গত বর্ষায় অনেকেই গৃহহারা হয়েছেন। এখন শীত মৌসুমেও চলছে ভাঙন। এতে শতাধিক বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে ভাঙনের মুখে রয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই অন্যত্র ঘর সরিয়ে নেওয়ার সময়ও পাচ্ছেন না। এ পরিস্থিতিতে অনেকেই এখন আতঙ্কগ্রস্ত। ভাঙনের মুখে পড়ে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে ভেদুরিয়া।

ভাঙনের শিকার ফজলু মাতাব্বর ইউরো বাংলা টাইমস কে বলেন, ‘বর্ষার সময় এখনকার  অনেক ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। অনেকেই ভেবেছিলো শীত মৌসুমে ভাঙন বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু শীতেও চলছে ভাঙন। তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় ঘর-বাড়ি, গাছপালা তুলে নিতেও পারছে না কেউ কেউ। তেঁতুলিয়া পাড়ের মধ্য ভেদুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা হাসেম বলেন, এখন পর্যন্ত ২০০ ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাদের মত আমরাও ভাঙনের শিকার হয়েছি, দ্রুত বাঁধ না দিলে আমরা এখানে বসবাস করতে পারবো না।’ইসমাইল মোল্লা বলেন, সহায় সম্বল বলতে আমাদের ঘরটুকু রয়েছে তাও ভাঙনের মুখে।

সরেজমনি গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভেদুরিয়া ইউনিয়নের লঞ্চঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া পাড়ে উত্তর ভেদুরিয়া ও মধ্য ভেদুরিয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা ভাঙনের মুখে। ফসলের ক্ষেত, ঘরবাড়ি ও গাছ-পালাসহ বিস্তীর্ণ জনপদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় এলাকার মানুষ। এ ব্যাপারে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল আক্তার দৈনিক জবাবদিহিকে বলেন, তেঁতুলিয়া নদীতে যে পয়েন্ট দিয়ে ভাঙন চলছে ওই পয়েন্টে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি প্রকল্পের প্রস্তবনা দেওয়া হয়েছে। এখন ওই এলাকায় সমীক্ষার কাজ চলছে। সমীক্ষা শেষ হলেই আশাকরি খুব শিগগিরই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাব্বির আলম বাবু