ভিয়েনা ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৭:০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫
  • ১৩ সময় দেখুন

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ছবি: সংগৃহীত

ইবিটাইমস: আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দেন। ঢাকার রেসকোর্স (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশে শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তার এ ঘোষণার পর স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রাম ত্বরান্বিত হয়।

১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচন হয়। এতে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। তবে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা করতে থাকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। এক পর্যায়ে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত হলে বঙ্গবন্ধু ২ মার্চ ঢাকায় ও ৩ মার্চ সারাদেশে হরতালের ডাক দেন। ৩ মার্চ পল্টন ময়দানের বিশাল সমাবেশ থেকে পূর্ব পাকিস্তানে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। সেখানেই বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেয়ার কথা জানান।

৭ মার্চ বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে শেখ মুজিবুর রহমান মঞ্চে ওঠেন। মঞ্চে আসার পর তিনি জনতার উদ্দেশে হাত নাড়েন। তার ভাষণ শুরু করেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি…।’ এরপর জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ প্রায় ১৮ মিনিটের ভাষণ। ভাষণে বঙ্গবন্ধু সামরিক আইন প্রত্যাহার, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া এবং বিভিন্ন স্থানে হত্যাযজ্ঞ তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।

শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ভায়েরা আমার, আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমরা এ দেশের মানুষের অধিকার চাই। প্রধানমন্ত্রিত্বের লোভ দেখিয়ে আমাকে নিতে পারেনি। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দিতে পারেনি। আপনারা রক্ত দিয়ে আমাকে ষড়যন্ত্র-মামলা থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন। সেদিন এই রেসকোর্সে আমি বলেছিলাম, রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করব। আজও আমি রক্ত দিয়েই রক্তের ঋণ শোধ করতে প্রস্তুত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি পরিষ্কার অক্ষরে বলে দিতে চাই– আজ থেকে কোর্ট-কাচারি, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। কোনো কর্মচারী অফিসে যাবেন না। এ আমার নির্দেশ।’

তবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করে বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তার সে পরিকল্পনা সফল হয়নি। এরপর ২০০৮ সালের পর থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশে স্বৈর-ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েমের চেষ্টা করে। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫আগষ্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নেন। মানবতা বিরোধী অপরাধের কারণে রাজনীতি নিষিদ্ধ হতে পারে দেশের প্রাচীন এই দলটির।

ডেস্ক/ইবিটাইমস/এনএল

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

আপডেটের সময় ০৭:০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

ইবিটাইমস: আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দেন। ঢাকার রেসকোর্স (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশে শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তার এ ঘোষণার পর স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রাম ত্বরান্বিত হয়।

১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচন হয়। এতে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। তবে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা করতে থাকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। এক পর্যায়ে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত হলে বঙ্গবন্ধু ২ মার্চ ঢাকায় ও ৩ মার্চ সারাদেশে হরতালের ডাক দেন। ৩ মার্চ পল্টন ময়দানের বিশাল সমাবেশ থেকে পূর্ব পাকিস্তানে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। সেখানেই বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেয়ার কথা জানান।

৭ মার্চ বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে শেখ মুজিবুর রহমান মঞ্চে ওঠেন। মঞ্চে আসার পর তিনি জনতার উদ্দেশে হাত নাড়েন। তার ভাষণ শুরু করেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি…।’ এরপর জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ প্রায় ১৮ মিনিটের ভাষণ। ভাষণে বঙ্গবন্ধু সামরিক আইন প্রত্যাহার, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া এবং বিভিন্ন স্থানে হত্যাযজ্ঞ তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।

শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ভায়েরা আমার, আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমরা এ দেশের মানুষের অধিকার চাই। প্রধানমন্ত্রিত্বের লোভ দেখিয়ে আমাকে নিতে পারেনি। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দিতে পারেনি। আপনারা রক্ত দিয়ে আমাকে ষড়যন্ত্র-মামলা থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন। সেদিন এই রেসকোর্সে আমি বলেছিলাম, রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করব। আজও আমি রক্ত দিয়েই রক্তের ঋণ শোধ করতে প্রস্তুত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি পরিষ্কার অক্ষরে বলে দিতে চাই– আজ থেকে কোর্ট-কাচারি, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। কোনো কর্মচারী অফিসে যাবেন না। এ আমার নির্দেশ।’

তবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করে বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তার সে পরিকল্পনা সফল হয়নি। এরপর ২০০৮ সালের পর থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশে স্বৈর-ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েমের চেষ্টা করে। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫আগষ্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নেন। মানবতা বিরোধী অপরাধের কারণে রাজনীতি নিষিদ্ধ হতে পারে দেশের প্রাচীন এই দলটির।

ডেস্ক/ইবিটাইমস/এনএল