ভিয়েনা ০৬:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বর্ণবাদ আবার ব্রিটিশ রাজনীতিতে ফিরে এসেছে-বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তুরস্কে আবারও ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী রাশিয়া আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তেল রাজস্ব ৩৭ বিলিয়ন ডলার কমেছে -জেলেনস্কি ষষ্ঠবারের মতো শ্রেষ্ঠ ওসি লালমোহন থানার সিরাজুল ইসলাম লালমোহনে গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত মাভাবিপ্রবিতে ফরেনসিক ইনভেস্টিগেশন ও যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত বন্যা সহনশীলতা কর্মসূচির আওতায় চারা গাছ বিতরণ ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবিগঞ্জে গ্রীষ্মকালীন সুইট ব্যাল্ক টু জাতের তরমুজ চাষে লাভবান কৃষকরা টাঙ্গাইলে ৭ দিনব্যাপী ভাসানী মেলা উদ্বোধন জর্জিয়ায় তুরস্কের সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত

টাঙ্গাইলে বানভাসিদের মানবেতর জীবনযাপন

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৫:২৮:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪
  • ১৫ সময় দেখুন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বর্ষণে টাঙ্গাইল সদর ও ভূঞাপুরে যমুনা নদীর চরাঞ্চলে বানভাসি মানুষদের দুর্ভোগ কমছেই না। বন্যার ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন বানভাসি মানুষগুলো। দেখা দিয়েছে মানুষের নিরাপদ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, গো-খাদ্য ও নিরাপদ স্যানিটেশন। শিশুদের ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগ দেখা দিয়েছে। বানভাসিদের ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় পানিবন্দি মানুষগুলো কেউ উঁচু জায়গা, কেউ বা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

এদিকে, টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানা যায়, কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীর পানি কমলেও শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিদৎসামীরার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া জেলার ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি বিপদসীমার উপরে থাকলেও জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া জেলার অন্যান্য ছোট নদনদীতেও পানি বাড়ছে।

সরেজমিনে ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চল কালিপুর, জয়পুর, পুংলীপাড়া, রেহাইগাবসারা, চন্ডিপুর, মেঘারপটল, রাজাপুর, অর্জুনা ইউনিয়নের শুশুয়া, বাসুদেবকোল, ভদ্রশিমুলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কয়েকদিন ধরে একটু একটু করে পানি কমছিল। কিন্তু শনিবার ফের নতুন করে কিছুটা পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলেও কমছে ধীরে ধীরে। ফলে এখনো চরের শতশত ঘরবাড়ি পানিতে ভাসছে ও তলিয়ে রয়েছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চরের লোকজন তাদের গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। চরের পানিবন্দি ঘরবাড়িতে টিউবওয়েল, স্যানিটেশন, রান্নাঘর তলিয়ে রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে পানি সরবরাহ করে প্রয়োজনীয় কাজ করছেন বানভাসি মানুষগুলো। কিছু কিছু এলাকায় ত্রাণ পেলেও এখনো অসংখ্য পরিবার ত্রাণ সামগ্রী সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগও করছেন।

গাবসারা ইউনিয়নের কালিপুর বেল্লাল হোসেন বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়ির পাশে থৈই-থৈই পানি। কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। ১২ দিন ধরে রোজগার নেই। চরাঞ্চলে পানি থাকায় কাজকাম বন্ধ। একদিকে ঋনের কিস্তি ও অন্যদিকে ধার-দেনার টাকায় সংসার চালাচ্ছি। এখন পরিবার নিয়ে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছি। নদীর পানি একেবারে না কমা পর্যন্ত চরের জনজীবন স্বাভাবিক হবে না। সরকার যদি এ সময়ে সহযোগিতা করতো তাহলে অনেক উপকার হতো। একই এলাকার বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, টানা দুই তিন সপ্তাহ যাবৎ পানিবন্দি হয়ে থাকলেও আমাদের মতো দরিদ্রদের কেউ খোঁজ-খবর নেয় না। তাছাড়া মেম্বার-চেয়ারম্যানদের যারা কাছের লোক ও আত্মীয়-স্বজন রয়েছে তারাই সরকারের ত্রাণ সহযোগিতা পাচ্ছে। যারা এগুলো পাচ্ছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই স্বচ্ছল পরিবার। এদিকে, পানির কারণে হাত-পায়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শিশুরা ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ে ভুগছে। এখনো কোনো স্বাস্থ্যকর্মীর দেখা মেলেনি।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে চরাঞ্চলসহ ৪টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ও জেলা প্রশাসকের দিক-নির্দেশনায় দেড় হাজারের অধিক দরিদ্র মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা হিসেবে শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও পানি মজুদ রাখার পাত্র বিতরণ করা হয়েছ। এসব ত্রাণ সামগ্রী পর্যাপ্ত রয়েছে। ত্রাণ সহায়তা ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদানসহ সকল ধরণের কার্যক্রম চলমান থাকবে।

শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়

বর্ণবাদ আবার ব্রিটিশ রাজনীতিতে ফিরে এসেছে-বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

টাঙ্গাইলে বানভাসিদের মানবেতর জীবনযাপন

আপডেটের সময় ০৫:২৮:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বর্ষণে টাঙ্গাইল সদর ও ভূঞাপুরে যমুনা নদীর চরাঞ্চলে বানভাসি মানুষদের দুর্ভোগ কমছেই না। বন্যার ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন বানভাসি মানুষগুলো। দেখা দিয়েছে মানুষের নিরাপদ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, গো-খাদ্য ও নিরাপদ স্যানিটেশন। শিশুদের ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগ দেখা দিয়েছে। বানভাসিদের ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় পানিবন্দি মানুষগুলো কেউ উঁচু জায়গা, কেউ বা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

এদিকে, টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানা যায়, কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীর পানি কমলেও শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিদৎসামীরার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া জেলার ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি বিপদসীমার উপরে থাকলেও জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া জেলার অন্যান্য ছোট নদনদীতেও পানি বাড়ছে।

সরেজমিনে ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চল কালিপুর, জয়পুর, পুংলীপাড়া, রেহাইগাবসারা, চন্ডিপুর, মেঘারপটল, রাজাপুর, অর্জুনা ইউনিয়নের শুশুয়া, বাসুদেবকোল, ভদ্রশিমুলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কয়েকদিন ধরে একটু একটু করে পানি কমছিল। কিন্তু শনিবার ফের নতুন করে কিছুটা পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলেও কমছে ধীরে ধীরে। ফলে এখনো চরের শতশত ঘরবাড়ি পানিতে ভাসছে ও তলিয়ে রয়েছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। চরের লোকজন তাদের গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। চরের পানিবন্দি ঘরবাড়িতে টিউবওয়েল, স্যানিটেশন, রান্নাঘর তলিয়ে রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে পানি সরবরাহ করে প্রয়োজনীয় কাজ করছেন বানভাসি মানুষগুলো। কিছু কিছু এলাকায় ত্রাণ পেলেও এখনো অসংখ্য পরিবার ত্রাণ সামগ্রী সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগও করছেন।

গাবসারা ইউনিয়নের কালিপুর বেল্লাল হোসেন বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়ির পাশে থৈই-থৈই পানি। কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। ১২ দিন ধরে রোজগার নেই। চরাঞ্চলে পানি থাকায় কাজকাম বন্ধ। একদিকে ঋনের কিস্তি ও অন্যদিকে ধার-দেনার টাকায় সংসার চালাচ্ছি। এখন পরিবার নিয়ে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছি। নদীর পানি একেবারে না কমা পর্যন্ত চরের জনজীবন স্বাভাবিক হবে না। সরকার যদি এ সময়ে সহযোগিতা করতো তাহলে অনেক উপকার হতো। একই এলাকার বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, টানা দুই তিন সপ্তাহ যাবৎ পানিবন্দি হয়ে থাকলেও আমাদের মতো দরিদ্রদের কেউ খোঁজ-খবর নেয় না। তাছাড়া মেম্বার-চেয়ারম্যানদের যারা কাছের লোক ও আত্মীয়-স্বজন রয়েছে তারাই সরকারের ত্রাণ সহযোগিতা পাচ্ছে। যারা এগুলো পাচ্ছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই স্বচ্ছল পরিবার। এদিকে, পানির কারণে হাত-পায়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শিশুরা ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ে ভুগছে। এখনো কোনো স্বাস্থ্যকর্মীর দেখা মেলেনি।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে চরাঞ্চলসহ ৪টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ও জেলা প্রশাসকের দিক-নির্দেশনায় দেড় হাজারের অধিক দরিদ্র মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা হিসেবে শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও পানি মজুদ রাখার পাত্র বিতরণ করা হয়েছ। এসব ত্রাণ সামগ্রী পর্যাপ্ত রয়েছে। ত্রাণ সহায়তা ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদানসহ সকল ধরণের কার্যক্রম চলমান থাকবে।

শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা/ইবিটাইমস