ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলার মেঘনা নদীতে বাবা-ছেলেকে নিয়ে ডুবে যাওয়া মালবাহী ট্রলার উদ্ধার হয়েছে। তবে ট্রলারের মধ্যে বাবা-ছেলের মরদেহ পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে ডুবুরি টিম ট্রলারটিকে টেনে জোরখাল নামক জায়গায় নিয়ে যায়। দেখা গেছে ট্রলারটিতে বেশকিছু মালামাল থাকলেও আব্দুল রাজ্জাক ও তাঁর ছেলে পারভেজ সরদারের মরদেহ ট্রলারটির ভিতরে নেই।
ভোলা বিআইডব্লিউটিএ এর নদীবন্দরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. জাহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মেঘনায় বাবা-ছেলেকে নিয়ে ডুবে যাওয়া মালবাহী ট্রলারটি সম্পূর্ণভাবে উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রলারের মধ্যে বেশকিছু মালামাল থাকলেও নিখোঁজ আব্দুল রাজ্জাক ও তাঁর ছেলের মরদেহ পাওয়া যায়নি। ট্রলার মালিককে ট্রলারটি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছি। ট্রলারটির ইঞ্জিনরুম কেবিন সিস্টেম নয়। যাঁর কারনে মরদেহ ট্রলারে পাওয়া যায়নি।
এর আগে বেলা ১২টার দিকে চাঁদপুরের বেসরকারি একটি ডুবুরি টিম ও বিআইডব্লিউটিএ এর কয়েকজন ডুবুরি ট্রলারটিতে রশি বেধে টেনে জোরখাল নামক জায়গায় নিয়ে যায়। বেসরকারি ডুবুরি টিমের সঙ্গে ৪০ হাজার টাকা কন্টাক্ট করে ট্রলার মালিক ট্রলারটি উদ্ধার করে।
অভিযানে বিআইডব্লিউটিএ এর ডুবুরি টিম ব্যতীত অন্য কোনো সংস্থার ডুবুরি টিমকে দেখা যায়নি। তবে ঘটনাস্থলে ইলিশা নৌ-পুলিশ, তদন্ত কেন্দ্রের টিম, ফায়ারসার্ভিস ও কোষ্টগার্ডের সদস্যরা উপস্থিত আছেন।
রোববার (২১ জানুয়ারি) দিনগত মধ্যরাতে মনপুরা থেকে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া মালবাহী ট্রলারটি ইলিশার জোরখাল পয়েন্টে প্রবল ঢেউয়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। ট্রলারটিতে ভাঙ্গারি মালামালসহ সাতজন শ্রমিক ছিলেন। তাদের মধ্যে দু’জন বাবা-ছেলে। ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার সময় পাঁচজন শ্রমিক সাঁতরে জেলে ট্রলারের সহায়তায় উপরে উঠে আসতে পারলেও আব্দুল রাজ্জাক ও তাঁর ছেলে পারভেজ সরদার ইঞ্জিনরুমে থাকায় তাঁরা দু’জনে বেরোতে পারেনি। কয়েক মিনিটের মধ্যে ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা সাত শ্রমিক বরিশাল মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ট্রলারটির মালিক ছিলেন- ফারুক মাঝি। ফারুক মাঝি ভাঙ্গারি মালামালের ব্যবসা করেন। তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে নদী পথে ট্রলারের মাধ্যমে মালামাল পরিবহন করেন। ডুবে যাওয়ার সময় তাঁর ট্রলারে প্রায় ৩ লাখ টাকার মালামাল ছিল।
ঘটনার পর সোমবার সকাল থেকে কোষ্টগার্ড ও ফায়ারসার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএ এর যৌথ ডুবুরি টিম উদ্ধার অভিযানে নামে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে বন্ধ রাখে। এরপর আজ সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার অভিযান শুরু হওয়ার পর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ট্রলারটির সন্ধান পাওয়া যায়।
এদিকে নিখোঁজ আব্দুল রাজ্জাক ও তাঁর ছেলে পারভেজ সরদারের নিখোঁজ হওয়ার খবরে স্বজনরা জোরখাল মেঘনা নদীর তীরে এসে জড়ো হয়। এসময় তাদেরকে আহাজারি করতে দেখা গেছে। তাঁরা আব্দুল রাজ্জাক ও পারভেজ সরদারের মরদেহের অপেক্ষায় থাকলেও ডুবে যাওয়া ট্রলারে কোনো মরদেহ না থাকায় হতাশ তাঁরা।
মনজুর রহমান/ইবিটাইমস