ভিয়েনা ০২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অর্জিত হবে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে লালমোহনে রেকর্ড সাফল্য

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৮:৩৮:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪
  • ১০ সময় দেখুন
ভোলা দক্ষিণ প্রতিনিধি: রোববার (৩রা নভেম্বর) মধ্যরাতে টানা ২২দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪ সম্পন্ন হয়েছে। অভিযান বাস্তবায়নে ভোলা জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে রেকর্ড সাফল্য অর্জন করেছে লালমোহন উপজেলা মৎস্য দপ্তর।
উপজেলা সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, দেশব্যাপী গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩রা নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের লালমোহন উপজেলাতেও এই অভিযান বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখা হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া ২২দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে সব ধরনের কর্মকাণ্ডে জেলার মধ্যে লালমোহন উপজেলা রেকর্ড সাফল্য অর্জন করেছে।
এই কর্মকর্তা ২২ দিনে লালমোহন উপজেলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে বাস্তবায়ন করা অভিযানের চিত্র তুলে ধরে আরো জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এহসানুল হক শিপনের নেতৃত্বে ২২দিনে দুইটি নদীতে ১১৯টি অভিযান এবং ৩৪ টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এ অভিযানের মাধ্যমে ১৭০ জন জেলেকে আইন অমান্য করে নদীতে মাছ শিকার করায় আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড  এবং ৯২ জনকে বিভিন্ন অঙ্কে মোট ৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকা অর্থদ- প্রদান করা হয়েছে। অভিযানে মোট ৩.০৮৫ মেট্রিক টন জাল জব্দ করে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। জব্দ করা হয় ৪৩টি মাছ ধরা ট্রলা। যা নিলামের মাধ্যমে ৩ লাখ ৬৪ হাজার দুইশত টাকা বিক্রি করা হয়েছে। ওই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২২ দিনের এই অভিযানে প্রায় ৯০০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করে ৫০ টি মাদরাসা এবং এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।
লালমোহন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আহমেদ আখন্দ বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তরের যৌথ অভিযানে এবছর আমরা মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে সর্বোচ্চ সাফল্য অর্জন করেছি। জনবল সংকট থাকার পরেও আমরা অভিযান সফল করতে প্রতিদিন থানা পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় উপজেলার মেঘনা এবং তেঁতুলিয়া নদীতে দিন-রাত অভিযান চালিয়েছি। আমাদের এ অভিযান সফলও হয়েছে। অভিযান শেষে দেখা গেছে পুরো জেলার মধ্যে আমাদের অবস্থান প্রথম। তবে অভিযানকালীন সময়ে যেন জেলেদের সমস্যা না হয় সেজন্য উপজেলার নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে জেলেরা সরকারি চাল বরাদ্দ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন। এছাড়া রোববার (৩রা নভেম্বর) বিকেলে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফলভাবে সমাপ্তিকরণ ও জাটকা সংরক্ষণে মৎস্যজীবীদের নিয়ে উদ্বুদ্ধকরণ সভা করেছি। উপজেলা প্রশাসন এবং মৎস্য অফিসের আয়োজনে বদরপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর মৎস্যঘাটে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪ এ লালমোহন উপজেলার সাফল্য নিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, লালমোহনে উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য দপ্তর, পুলিশ এবং কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে এ বছর অনেক সুন্দর অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। প্রতিদিন তারা অভিযান বাস্তবায়নের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আমি এই সফলতার জন্য লালমোহন উপজেলা টিমকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এছাড়া ২২দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে তাদের এই সফলতার জন্য তাদেরকে ‘সফলতা সম্মাননা স্মারক’ প্রদান করা হবে। কারণ তারা অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে যে অভিযান পরিচালনা করেছেন, তার ফলে মা ইলিশ পরিপূর্ণভাবে নদীতে ডিম ছাড়তে পেরেছে। এর মাধ্যমে এবার ইলিশ উৎপাদনে আমাদের লক্ষ্যমাত্র সফলভাবে অর্জিত হবে বলে আশা করছি।
জাহিদুল ইসলাম দুলাল/ইবিটাইমস 
জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

অর্জিত হবে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে লালমোহনে রেকর্ড সাফল্য

আপডেটের সময় ০৮:৩৮:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪
ভোলা দক্ষিণ প্রতিনিধি: রোববার (৩রা নভেম্বর) মধ্যরাতে টানা ২২দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪ সম্পন্ন হয়েছে। অভিযান বাস্তবায়নে ভোলা জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে রেকর্ড সাফল্য অর্জন করেছে লালমোহন উপজেলা মৎস্য দপ্তর।
উপজেলা সামুদ্রিক মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, দেশব্যাপী গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৩রা নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের লালমোহন উপজেলাতেও এই অভিযান বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখা হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া ২২দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে সব ধরনের কর্মকাণ্ডে জেলার মধ্যে লালমোহন উপজেলা রেকর্ড সাফল্য অর্জন করেছে।
এই কর্মকর্তা ২২ দিনে লালমোহন উপজেলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে বাস্তবায়ন করা অভিযানের চিত্র তুলে ধরে আরো জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এহসানুল হক শিপনের নেতৃত্বে ২২দিনে দুইটি নদীতে ১১৯টি অভিযান এবং ৩৪ টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। এ অভিযানের মাধ্যমে ১৭০ জন জেলেকে আইন অমান্য করে নদীতে মাছ শিকার করায় আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড  এবং ৯২ জনকে বিভিন্ন অঙ্কে মোট ৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকা অর্থদ- প্রদান করা হয়েছে। অভিযানে মোট ৩.০৮৫ মেট্রিক টন জাল জব্দ করে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। জব্দ করা হয় ৪৩টি মাছ ধরা ট্রলা। যা নিলামের মাধ্যমে ৩ লাখ ৬৪ হাজার দুইশত টাকা বিক্রি করা হয়েছে। ওই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ২২ দিনের এই অভিযানে প্রায় ৯০০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করে ৫০ টি মাদরাসা এবং এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।
লালমোহন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আহমেদ আখন্দ বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তরের যৌথ অভিযানে এবছর আমরা মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে সর্বোচ্চ সাফল্য অর্জন করেছি। জনবল সংকট থাকার পরেও আমরা অভিযান সফল করতে প্রতিদিন থানা পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় উপজেলার মেঘনা এবং তেঁতুলিয়া নদীতে দিন-রাত অভিযান চালিয়েছি। আমাদের এ অভিযান সফলও হয়েছে। অভিযান শেষে দেখা গেছে পুরো জেলার মধ্যে আমাদের অবস্থান প্রথম। তবে অভিযানকালীন সময়ে যেন জেলেদের সমস্যা না হয় সেজন্য উপজেলার নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে জেলেরা সরকারি চাল বরাদ্দ পেয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন। এছাড়া রোববার (৩রা নভেম্বর) বিকেলে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফলভাবে সমাপ্তিকরণ ও জাটকা সংরক্ষণে মৎস্যজীবীদের নিয়ে উদ্বুদ্ধকরণ সভা করেছি। উপজেলা প্রশাসন এবং মৎস্য অফিসের আয়োজনে বদরপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর মৎস্যঘাটে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪ এ লালমোহন উপজেলার সাফল্য নিয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, লালমোহনে উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য দপ্তর, পুলিশ এবং কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে এ বছর অনেক সুন্দর অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। প্রতিদিন তারা অভিযান বাস্তবায়নের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আমি এই সফলতার জন্য লালমোহন উপজেলা টিমকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এছাড়া ২২দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে তাদের এই সফলতার জন্য তাদেরকে ‘সফলতা সম্মাননা স্মারক’ প্রদান করা হবে। কারণ তারা অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে যে অভিযান পরিচালনা করেছেন, তার ফলে মা ইলিশ পরিপূর্ণভাবে নদীতে ডিম ছাড়তে পেরেছে। এর মাধ্যমে এবার ইলিশ উৎপাদনে আমাদের লক্ষ্যমাত্র সফলভাবে অর্জিত হবে বলে আশা করছি।
জাহিদুল ইসলাম দুলাল/ইবিটাইমস