পদ দখলের কামড়া-কামড়িতে ধ্বংস ক্রীড়াঙ্গন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ৭ বছর বল গড়ায় না মাঠে । নেই খেলার কোন প্রতিযোগিতা। ফুটবল,ভলিবল এমনকি ক্রিকেট টুর্নামেন্টও দীর্ঘদিন বন্ধ। আওয়ামী লীগ নেতাদের পদ দখলের কামড়া কামড়িতে ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন ঝুলে আছে। মামলা জটিলতায় নির্বাচন না হওয়ায় ক্রীড়া সংস্থা এখন এডহক কমিটি দিয়ে চলছে। পেশাদার খেলোয়াড়দের যাতায়াত না থাকায় ঝিনাইদহ জেলার একমাত্র বৃহৎ খেলার মাঠ ‘ঝিনাইদহ বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়াম’টি খাঁ খাঁ করছে। স্টেডিয়ামের সংস্কার নেই। মাঠের গ্যালারি, ড্রেসিং রুম আর ক্রীড়া সংস্থার অবকাঠামোগুলো রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে চাকচিক্য হারাচ্ছে। স্টেডিয়ামের সামনে জমেছে হাটু পানি। সেখানে জলকেলি করে হাঁসের দল।

জানা গেছে, পেশাদার খেলোয়াড়দের নিয়ে বেশ ভালই চলছি ঝিনাইদহ জেলা ক্রীড়া সংস্থা। কিন্তু ১৪ বছর আগে আওয়ামী লীগ নেতারা ক্রীড়া সংস্থা দখল করে নেওয়ায় ধীরে ধীরে কমতে থাকে খেলার মান। ক্লাব ভিত্তিক খেলার প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালে ক্রীড়া সংস্থায় কাউন্সিলর বানানো নিয়ে যুবলীগ নেতা রাশিদুর রহমান রাসেল ও আওয়ামীলীগ নেতা জীবন কুমার বিশ্বাসের মধ্যে দ্বন্দ বাঁধে। সেই দ্বন্দ গড়ায় উচ্চ আদালতে। মামলা হওয়ায় স্টেডিয়ামে সব ধরণের প্রতিযোগিতাসহ খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যায়। খেলোয়াড়দের পরিবর্তে আমলাদের নিয়ে গঠিত হয় ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটি। এতে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে খেলোয়াড়দের মাঝে।

এদিকে খেলাধুলা বা বড় ধরণের কোন প্রতিযোগিতার আয়োজন না থাকলেও ক্রীড়া সংস্থার খরচ থেমে নেই। ২০১৪ সালের ১০ মে থেকে ২০২৪ সালের ২২ সেপ্টম্বর পর্যন্ত ক্রীড়া সংস্থার জনতা ব্যাংকে জমা হয় মোট ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। ২০২৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যায় হয়েছে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। অন্যদিকে ঝিনাইদহ সোনালী ব্যাংকে ক্রিড়া সংস্থার আরেকটি একাউন্টে জমা ছিল ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০২৪ সালের ১০ জুন দুইটি চেকের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের ওই একাউন্ট থেকে ৬ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এই টাকা কোন খাতে ব্যায় দেখিয়ে উত্তোলন করা হয়েছে তার হিসাব জেলা ক্রীড়া সংস্থায় নেই। দীর্ঘদিন আভ্যন্তরীন অডিট না হওয়ায় ক্রীড়া খাতে বেশুমার লুটপাট হয়েছে এমন অভিযোগও তুলেছেন কেউ কেউ।

ঝিমিয়ে পড়া ঝিনাইদহের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে জেলার সাবেক ফুটবলার ও ক্রীড়া সংগঠক আহসান উদ্দীন আফাঙ্গীর জানান,‘ক্রীড়া সংস্থার নেতৃত্ব পেশাদার খেলোয়াড়দের হাতে ফিরিয়ে না দিলে মাঠে প্রানবন্ত পরিবেশ ফিরে আসবে না। তিনি দ্রুত মামলা নিস্পত্তি করে ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন দাবী করেন।’
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিয়া আক্তার চৌধুরী বলেন,‘ক্রীড়া সংস্থার নতুন কমিটি গঠন হলে কেবল ক্রীড়ায় প্রাণ ফিরতে পারে। এজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন,বর্ষা মৌসুম চলে গেলে আশা করা যায় বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়াম আবারো প্রানবন্ত হয়ে উঠবে।’

শেখ ইমন/ইবিটাইমস 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »