ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠি গাবখান নদীর উপর নির্মিত পঞ্চম চীন মৈত্রী গাবখান সেতুর সংযোগ সড়কের এপ্রোচে মাটি সরে গিয়ে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সেতুর উপরে বড় বড় গর্তের সৃষ্টির ফলে যান চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে। সেতুর দুই পাশে আগাছা ও ধান গাছ গজিয়েছে। ল্যাম্প পোস্ট বাতি না জলায় রাতে সেতু দিয়ে গাড়ি চালাতে ভোগান্তিতে পড়ছে চালকরা। দীর্ঘদিন ধরে এই পরিস্থিতি চললেও নজরদারি নেই কর্তৃপক্ষের।তবে সড়ক বিভাগ বলছেন,দ্রুত সময়ে মধ্যে সেতুর গর্তগুলো সংস্কার ও লাইট স্থাপন করা হবে। দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম গাবখান সেতু দিয়ে বছরে প্রায় ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয়।তাই সেতুর উন্নয়ন দ্রুত করার দাবী স্থানীয়দের।
বাংলার সুয়েজ খাল খ্যাত ঝালকাঠি গাবখান নদীর উপর নির্মিত পঞ্চম চীন মৈত্রী গাবখান সেতু। এ সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা,বাগেরহাট,মোংলাসহ বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার গাড়ি চলে। বর্তমানে সেতুর উপরে আগাছা আর বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দুই পাশে এপ্রোচে নিচের মাটি সরে গিয়ে তৈরি হয়েছে গর্ত। রেলিংয়ের বিম ও লোহার রড ভেঙ্গে গেছে অনেক স্থানের। সেতুর উপর দুর্ঘটনা এড়াতে এবং চলাচলকারীদের সুবিধার্থে ৬২টি ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হলেও লাইট পোস্টের অধিকাংশই এখন অকেজো। এইসব লাইট অকেজো হওয়ার ফলে দুর্ঘটনা এড়ানো যাচ্ছে না। সড়ক বিভাগ রক্ষণাবেক্ষণ না করায় দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে সেতুটি।
ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সেতুটির দৈঘর্য ৯১৮ মিটার, দীর্ঘতম স্প্যান রয়েছে ১১৬. ২০ মিটার (যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ), নিম্নতম স্প্যান রয়েছে ৩০ মিটার, ২৪ টি পিলার ও ২ টি এ্যাবাটমেন্ট রয়েছে। ক্যারেজওয়ে রয়েছে ৭.৫০ মিটার। প্রতি পাশের্ব সাইড ওয়াক রয়েছে ১.২৫ মিটার। ১.৫০ মিটার ব্যাসের কাস্ট ইন সিটু বোর্ডের পাইল (অবস্থান ভেদে ২ টি থেকে ৯টি পর্যন্ত) ভিত্তি রয়েছে। ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স রয়েছে ১৮ মিটার। হরাইজন্টোল নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স রয়েছে ৭৬.২২ মিটার। ৮১ কোটি ৯৫ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে গাবখান ব্রীজের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় এবং ২০০১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেতুটি উদ্বোধন করেন।
নিয়মিত চলাচলকারী ও স্থানীয়রা জানান, সেতু উদ্বোধনের ২৪ বছর অতিবাহিত হতেই বাতিগুলোর বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। সন্ধ্যা হলেই ব্রিজের উপর নেমে আসে অন্ধকার। একারণে প্রায় সময়ই ছোট খাটো দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, সেতুর উপর সিলকোট যে আছে তা বিভিন্ন জায়গায় চলোমান বৃষ্টিতে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সিলকোট কাজ চলোমান রয়েছে। যে বাতিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে তা পরিবর্তন করে সোলার বাতি স্থাপনের পরিকল্পনা আছে।
বাধন রায়/ইবিটাইমস