ভিয়েনা ১০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পিরোজপুর-১: নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আতংকিত নৌকার কর্মীরা

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৯:৪৪:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪
  • ১৪ সময় দেখুন

পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুর -১ (নাজিরপুর, পিরাজপুর ও ইন্দুরকানী) আসনে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা থামছে না। এতে আতংকের ভীতর রয়েছেন স্থানীয় নৌকার কর্মীরা। ঘর থেকে বের হলেই হামলার শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ নেতা-কর্মীদের। তাদের অভিযোগ নৌকার সমর্থন করায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসায় প্রায় অর্ধ শত নেতা-কর্মীকে পঙ্গু সহ হামলায় গুরুতর আহত হতে হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তীতে পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেন সাবকে মন্ত্রী এ্যাড. শ.ম রেজাউল করিম। আর তার প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি একেএমএ আউয়াল। এতে প্রায় ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন নৌকার প্রার্থী শ.ম রেজাউল করিম।

এমপি শ.ম রেজাউল করিম অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষের প্রার্থী ও তার কর্মীরা নির্বাচনকালে ভোটারদের মাঝে আতংক সৃষ্টি করতে পুরো এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারনে ভোটারদের উপস্থিতি আশানুরূপ হয় নি। নির্বাচনের কালে নৌকার বিভিন্ন কর্মীর বাড়িতে গিয়ে প্রতিপক্ষের ক্যাডাররা হুমকী সহ হামলা করে। কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ের পরেও নৌকার প্রায় অর্ধশত কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে। পিরোজপুর শহর সহ নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মীরা এখন ঘর থেকে বেড় হতে ভয় পাচ্ছেন।

তিনি জানান, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা হিসাবে গত ১৪ মার্চ বেলা ১১টায় জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বসে নৌকার কর্মী সাব্বির আহম্মেদকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে প্রপিক্ষের ক্যাডাররা। এ ছাড়া গত ১০ মার্চ জেলার ইন্দুরকানীতে ওই উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহসভাপতি নৌকার প্রতীকের নির্বাচনী এজেন্ট আব্দুল হালিম হাওলাদরকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করেছে প্রতিপক্ষের ক্যাডাররা। এ ছাড়া গত ২৪ ফেব্রæয়ারী জেলা ছাত্রলীগ নেতা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি ফয়সাল আকন নামের এক কর্মীকে পিরোজপুর সদর উপজেলার নামাজপুর তার নিজ এলকায় বসে কুপিয়ে পেটের নাড়ি-ভুড়ি বের করে মৃত্যু ভেবে ফেলে রেখে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন। আহত ফয়সাল এখনো শংকা মুক্ত নয়।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন পরবর্তী গত ৭ জানুয়ারী রাতে জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের নৌকার ১২ কর্মীকে গুরুতর আহত করে। পরের দিন ৮ জানুয়ারী জেলার নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের ষোলশত গ্রামের ২০-২৫ জনকে আটকে প্রতিপক্ষের কর্মীরা মারধর করে। এতে লাইজু শেখ নামের এক কর্মী গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরন করছেন। একই ভাবে গত ১১ জানুয়ারী উপজেলার শ্রীরামকাঠীতে লাভলু শেখ নামের এক কর্মীকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এমন সব হামলায় মামলা হলেও হামলাকারীরা অনেকেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলা তুলে নিতে ভুক্তভোগীদের হুমকী দিচ্ছে।

পিরোজপুর জেলা মৎস্যজীবীলীগের সভাপতি ও পিরোজপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শিকদার চাঁন বলেন, রাজনীতি করার এখন আর কোন সূযোগ নাই। আযনম আওয়ামীলীগ করেও এক সময় বিএনপির জামায়াতের হাতে হামলা-মামলা সহ নির্যাতিত হয়েছি। আর এখন ঘর থেকে বের হলেই নিজ দলের (আওয়ামীলীগ) লোকজনের হাতেই নির্যাতিত হচ্ছি। পুরো নির্বাচনী এলাকা যেন সন্ত্রাসের জনপদে পরিনত হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলার সদর ও ইন্দুরকানী থানার ওসিদ্বয়ের সাথে পৃথকভাবে মুঠোফোনে কথা হলে তাদের দাবী নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা নয়। নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে ওই সব হামরা হয়েছে। তবে নাজিরপুর থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় পৃথক ৭টি মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এইচ এম লাহেল মাহমুদ/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

পিরোজপুর-১: নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আতংকিত নৌকার কর্মীরা

আপডেটের সময় ০৯:৪৪:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ মার্চ ২০২৪

পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুর -১ (নাজিরপুর, পিরাজপুর ও ইন্দুরকানী) আসনে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা থামছে না। এতে আতংকের ভীতর রয়েছেন স্থানীয় নৌকার কর্মীরা। ঘর থেকে বের হলেই হামলার শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ নেতা-কর্মীদের। তাদের অভিযোগ নৌকার সমর্থন করায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসায় প্রায় অর্ধ শত নেতা-কর্মীকে পঙ্গু সহ হামলায় গুরুতর আহত হতে হয়েছে। নির্বাচন পরবর্তীতে পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করেন সাবকে মন্ত্রী এ্যাড. শ.ম রেজাউল করিম। আর তার প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি একেএমএ আউয়াল। এতে প্রায় ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন নৌকার প্রার্থী শ.ম রেজাউল করিম।

এমপি শ.ম রেজাউল করিম অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষের প্রার্থী ও তার কর্মীরা নির্বাচনকালে ভোটারদের মাঝে আতংক সৃষ্টি করতে পুরো এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারনে ভোটারদের উপস্থিতি আশানুরূপ হয় নি। নির্বাচনের কালে নৌকার বিভিন্ন কর্মীর বাড়িতে গিয়ে প্রতিপক্ষের ক্যাডাররা হুমকী সহ হামলা করে। কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ের পরেও নৌকার প্রায় অর্ধশত কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে। পিরোজপুর শহর সহ নির্বাচনী এলাকার নেতা-কর্মীরা এখন ঘর থেকে বেড় হতে ভয় পাচ্ছেন।

তিনি জানান, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা হিসাবে গত ১৪ মার্চ বেলা ১১টায় জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বসে নৌকার কর্মী সাব্বির আহম্মেদকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে প্রপিক্ষের ক্যাডাররা। এ ছাড়া গত ১০ মার্চ জেলার ইন্দুরকানীতে ওই উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহসভাপতি নৌকার প্রতীকের নির্বাচনী এজেন্ট আব্দুল হালিম হাওলাদরকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করেছে প্রতিপক্ষের ক্যাডাররা। এ ছাড়া গত ২৪ ফেব্রæয়ারী জেলা ছাত্রলীগ নেতা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি ফয়সাল আকন নামের এক কর্মীকে পিরোজপুর সদর উপজেলার নামাজপুর তার নিজ এলকায় বসে কুপিয়ে পেটের নাড়ি-ভুড়ি বের করে মৃত্যু ভেবে ফেলে রেখে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন। আহত ফয়সাল এখনো শংকা মুক্ত নয়।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন পরবর্তী গত ৭ জানুয়ারী রাতে জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের নৌকার ১২ কর্মীকে গুরুতর আহত করে। পরের দিন ৮ জানুয়ারী জেলার নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের ষোলশত গ্রামের ২০-২৫ জনকে আটকে প্রতিপক্ষের কর্মীরা মারধর করে। এতে লাইজু শেখ নামের এক কর্মী গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরন করছেন। একই ভাবে গত ১১ জানুয়ারী উপজেলার শ্রীরামকাঠীতে লাভলু শেখ নামের এক কর্মীকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এমন সব হামলায় মামলা হলেও হামলাকারীরা অনেকেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলা তুলে নিতে ভুক্তভোগীদের হুমকী দিচ্ছে।

পিরোজপুর জেলা মৎস্যজীবীলীগের সভাপতি ও পিরোজপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শিকদার চাঁন বলেন, রাজনীতি করার এখন আর কোন সূযোগ নাই। আযনম আওয়ামীলীগ করেও এক সময় বিএনপির জামায়াতের হাতে হামলা-মামলা সহ নির্যাতিত হয়েছি। আর এখন ঘর থেকে বের হলেই নিজ দলের (আওয়ামীলীগ) লোকজনের হাতেই নির্যাতিত হচ্ছি। পুরো নির্বাচনী এলাকা যেন সন্ত্রাসের জনপদে পরিনত হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলার সদর ও ইন্দুরকানী থানার ওসিদ্বয়ের সাথে পৃথকভাবে মুঠোফোনে কথা হলে তাদের দাবী নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা নয়। নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে ওই সব হামরা হয়েছে। তবে নাজিরপুর থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় পৃথক ৭টি মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এইচ এম লাহেল মাহমুদ/ইবিটাইমস