ঘূর্ণিঝড় মোখা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করবে। এজন্য বিমানের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের সব ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে
বাংলাদেশ ডেস্কঃ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় এখন অবস্থান করছে। এর গতিবেগ এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। কক্সবাজারকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শনিবার (১৩ মে) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত শনিবার (১৩ মে) দুপুর আড়াইটা থেকে কার্যকর হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমারে এবং কক্সবাজারে আঘাত হানবে। কক্সবাজারের ১৬০০ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখানে ১৪ টন শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আঘাত হানতে পারে এটি।
তিনি বলেন, এর প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। কক্সবাজার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিনে ৬ থেকে ৯ ফুট এবং ভোলা, বরগুনায় হতে পারে ৩ থেকে ৪ ফুট জলোচ্ছ্বাস। তবে মোখা মোকাবিলায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সব বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনী কাজ করবে।
মন্ত্রী জানান, বাতাসের গতিবেগ কমে এখন ১৫০ থেকে ১৬০ হয়েছে। এখন এটাকে এখন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বলা হয়েছে। আগে প্রতি ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটার। এখন তা কমে ৮ থেকে ৯ কিলোমিটার হয়েছে। এটা এখন আর সুপার সাইক্লোন হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। আজ সকাল থেকে বাতাসের গতিবেগ কমে এসেছে।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো ঘণীভূত হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করবে। এজন্য বিমানের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের সব ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বাতিল করা ফ্লাইটের যাত্রীদের সময় পুনঃনির্ধারণে নিকটতম বিমান অফিসে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। শনিবার (১৩ মে) এক বিমানের জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বিমান জানায়, আবহাওয়াজনিত কারণে যাত্রীগণের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নির্দেশক্রমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১৩ মে ভোর ৬টা থেকে ১৪ মে ২০২৩ এর মধ্যরাত পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের এবং ১৩ মে সকাল ৭টা থেকে ১৪ মে সন্ধ্যা ০৭টা ৩০ পর্যন্ত কক্সবাজার বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, যাত্রীদেরকে তাদের পরবর্তী যাত্রার সময় নির্ধারণ করার জন্য নিকটতম বিমান অফিসে যোগাযোগ করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানানো হচ্ছে। ১৩ ও ১৪ মে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে বিদেশগামী যাত্রীদের অতিসত্বর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বিমান অফিসে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
এছাড়া, ১৩ ও ১৪ মে ২০২৩ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে বিদেশগামী যাত্রীদের যদি ঢাকা থেকে তাদের নির্ধারিত ফ্লাইটে গমন করতে চান, তাদেরকে সরাসরি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রা সময়ের কমপক্ষে পাঁচ ঘণ্টা আগে রিপোর্ট করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে বিমান। সেই সঙ্গে, প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের কারণে সম্মানিত যাত্রীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখও প্রকাশ করেছে বিমান।
তথ্যসূত্র: বিভিন্ন বাংলা সংবাদ মাধ্যম ও আবহাওয়া অধিদপ্তর
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস/এম আর