গতকাল মঙ্গলবার ২৪ শে মে গভীর রাতে অস্ট্রিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র হাঙ্গেরিতে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান
ইউরোপ ডেস্কঃ হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান গতকাল মধ্য রাতের কিছু পূর্বে তিনি প্রথমে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইনে এসে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে দেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণার কথা জানান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন আসলে প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান “দ্রুত কাজ করার ক্ষমতা” কুক্ষিগত করার জন্যই এই জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
অবশ্য হাঙ্গেরির সরকার সমর্থিত সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে হাঙ্গেরি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি সেদেশের জাতীয় সংসদে মৌলিক আইনের একটি সংশোধনী অনুমোদন করেছে যা এই জরুরী অবস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়িত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই জরুরী অবস্থা ঘোষণার মাধ্যমে সংবিধান স্থগিত করে ভিক্টর অরবানের সরকার এখন একটি ডিক্রি দিয়ে দেশ শাসন করতে পারবে।
হাঙ্গেরি থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের অর্থনৈতিক মন্দা থেকে দ্রুত বেড়িয়ে আসতে গতকাল মঙ্গলবার ২৪ মে মধ্যরাত থেকে হাঙ্গেরিতে জরুরী অবস্থা কার্যকর শুরু হয়েছে। ডানপন্থী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের ক্ষমতাসীন দল ফিদেজ থেকে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে সংসদে সংবিধান সংশোধনের কয়েক ঘণ্টা পরেই এই ঘোষণা আসে।
হাঙ্গেরির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, সংসদে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে সরকারকে একটি প্রতিবেশী দেশে সশস্ত্র সংঘাত বা মানবিক বিপর্যয় ঘটলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার অনুমতি বা ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
জরুরী পরিস্থিতিতে সরকার এখন একটি ডিক্রি দ্বারা দেশ শাসন করতে পারবে বা কিছু আইনের প্রয়োগ স্থগিত করতে পারবে। হাঙ্গেরিতে ইতিমধ্যে দুইবার অনুরূপ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল: একবার সরকার অভিবাসনের কথিত বিপদ নিয়ে তর্ক করেছিল, আরেকবার করোনা মহামারী নিয়ে।
“অবিলম্বে কাজ করার ক্ষমতা” প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেছিলেন যে, এই পদক্ষেপটি হাঙ্গেরিয়ান নেতৃত্বকে “তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানোর এবং হাঙ্গেরিয়ান পরিবারগুলিকে যে কোনও উপায়ে রক্ষা করার সুযোগ দেবে”।
প্রধানমন্ত্রী আরও জোর বলেন, তার নতুন সরকার, যা শুধুমাত্র মঙ্গলবার শপথ নেওয়া হয়েছিল, অবিলম্বে কাজ শুরু করেছে, যেহেতু “আমাদের আশেপাশে একটি যুদ্ধ চলছে এবং কেউ এর শেষের পূর্বাভাস দিতে পারে না।” এ জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। অরবান ঘোষণা করেছেন যে তিনি বুধবার তার সরকারের প্রথম সিদ্ধান্তের তথ্য সরবরাহ করবেন।
করোনা মহামারীর প্রতিক্রিয়ায় হাঙ্গেরিয়ান সরকার প্রথম জরুরী অবস্থা ঘোষণা করে ২০২০ সালের মার্চ মাসে। সেই সময়ে, এটি দেশে এবং বিদেশে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়, কারণ এটি কার্যকরভাবে সংসদকে নির্মূল করবে। করোনাকালীন জরুরী অবস্থা পরবর্তীতে বারবার বাড়ানো হয়েছিল এবং আনুষ্ঠানিকভাবে এই বছরের ৩১ মে মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস