ভিয়েনা ০১:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পৌরসভার সড়ক বাতি স্থাপন কাজ শেষের আগেই বেশিরভাগই নষ্ট

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ১০:৪৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৫ সময় দেখুন

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : ৩ বছর আগে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌরসভার বিভিন্ন সড়কে সৌরবিদ্যুৎ চালিত সড়ক বাতি স্থাপনের কাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজের মেয়াদ শেষ হলেও প্রায় অর্ধেক সড়ক বাতি এখনও স্থাপন হয়নি। পৌরসভার রাস্তার পাশে,হাট বাজার ও বিভিন্ন জায়গায় যেগুলো সড়ক বাতি স্থাপিত হয়েছে-তাও বেশিরভাগ নষ্ট। সড়ক বাতির খুটি দাড়িয়ে থাকলেও জ¦লে না আলো,চুরি হয়ে গেছে ব্যাটারীসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ।

স্থানীয়দের অভিযোগ,নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার ও তদারকির অভাবে কয়েক মাসের মধ্যেই বেশিরভাগ বাতি নষ্ট হয়ে গেছে। এখন পৌরসভার অধিকাংশ এলাকা ডুবে থাকে অন্ধকারে। বেড়েছে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। সড়কে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনাও। বাতি স্থাপনে এই অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি পুনরায় চালু করার দাবী স্থানীয়দের।

জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে মহেশপুর পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন সড়কে ১’শ ৫০ টি সড়ক বাতি স্থাপনের ব্যায় ধরা হয়েছিলো ১ কোটি ৯৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে বসানো হয়েছে মাত্র মাত্র ৮১ টি। যার প্রায় সবগুলোই এখন নষ্ট। এখনও বসানো বাকি রয়েছে ৭৯টি সড়ক বাতি।

পৌর বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘যে আশা নিয়ে এখানে সোলার বাতি বসানো হয়েছিল, তার কিছুই আমরা পাইনি। রাতে রাস্তা অন্ধকার থাকে, চোর–ছিনতাইকারীর ভয় নিয়ে বাড়িতে যেতে হয়।’

বাসিন্দা বসির আহমেদ বলেন, ‘আমাদের রাস্তার দুই পাশে লাইটের খুঁটি আছে, কিন্তু আলো নেই। সন্ধ্যার পর চলাচল করা খুব ভয় লাগে। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ আর দেখছে না-এটা খুব দুঃখজনক।’

ভ্যানচালক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সবাই বলেছিল রাস্তায় লাইট হলে রাতে দুর্ঘটনা কমবে। কিন্তু লাইট নেই, অন্ধকারেই চলতে হয়।’

দোকানি কবির হোসেন বলেন,‘কোটি কোটি টাকা খরচ হলো,খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে,কিন্তু আলো নেই। এখন শুনি প্রকল্পের সময়ও শেষ হয়ে গেছে। তাহলে এভাবে টাকা খরচ করে লাভ কী?’

মশিউর রহমান নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এটা উন্নয়ন নয়Ñঅবহেলার উদাহরণ। প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি,তাই আজ অবস্থা ভয়াবহ।’

রাসেল হোসেন নামে আরেকজন বলেন,‘নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার ও তদারকির অভাবে কয়েক মাসের মধ্যেই বেশিরভাগ বাতি নষ্ট হয়ে গেছে। বাতি স্থাপনে এই অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানাচ্ছি।

মহেশপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন,‘সময়মত যন্ত্রাদি না পাওয়ায় কাজ স্থগিত ছিলো। কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বিকল হওয়া লাইটগুলো সচল আর বাকিগুলোও স্থাপন করা হবে।’
ঢাকা/ইবিটাইমস/এসএস

Tag :
জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

পৌরসভার সড়ক বাতি স্থাপন কাজ শেষের আগেই বেশিরভাগই নষ্ট

আপডেটের সময় ১০:৪৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : ৩ বছর আগে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌরসভার বিভিন্ন সড়কে সৌরবিদ্যুৎ চালিত সড়ক বাতি স্থাপনের কাজ শুরু হয়। কিন্তু কাজের মেয়াদ শেষ হলেও প্রায় অর্ধেক সড়ক বাতি এখনও স্থাপন হয়নি। পৌরসভার রাস্তার পাশে,হাট বাজার ও বিভিন্ন জায়গায় যেগুলো সড়ক বাতি স্থাপিত হয়েছে-তাও বেশিরভাগ নষ্ট। সড়ক বাতির খুটি দাড়িয়ে থাকলেও জ¦লে না আলো,চুরি হয়ে গেছে ব্যাটারীসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ।

স্থানীয়দের অভিযোগ,নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার ও তদারকির অভাবে কয়েক মাসের মধ্যেই বেশিরভাগ বাতি নষ্ট হয়ে গেছে। এখন পৌরসভার অধিকাংশ এলাকা ডুবে থাকে অন্ধকারে। বেড়েছে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। সড়কে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনাও। বাতি স্থাপনে এই অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি পুনরায় চালু করার দাবী স্থানীয়দের।

জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে মহেশপুর পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন সড়কে ১’শ ৫০ টি সড়ক বাতি স্থাপনের ব্যায় ধরা হয়েছিলো ১ কোটি ৯৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে বসানো হয়েছে মাত্র মাত্র ৮১ টি। যার প্রায় সবগুলোই এখন নষ্ট। এখনও বসানো বাকি রয়েছে ৭৯টি সড়ক বাতি।

পৌর বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘যে আশা নিয়ে এখানে সোলার বাতি বসানো হয়েছিল, তার কিছুই আমরা পাইনি। রাতে রাস্তা অন্ধকার থাকে, চোর–ছিনতাইকারীর ভয় নিয়ে বাড়িতে যেতে হয়।’

বাসিন্দা বসির আহমেদ বলেন, ‘আমাদের রাস্তার দুই পাশে লাইটের খুঁটি আছে, কিন্তু আলো নেই। সন্ধ্যার পর চলাচল করা খুব ভয় লাগে। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ আর দেখছে না-এটা খুব দুঃখজনক।’

ভ্যানচালক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সবাই বলেছিল রাস্তায় লাইট হলে রাতে দুর্ঘটনা কমবে। কিন্তু লাইট নেই, অন্ধকারেই চলতে হয়।’

দোকানি কবির হোসেন বলেন,‘কোটি কোটি টাকা খরচ হলো,খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে,কিন্তু আলো নেই। এখন শুনি প্রকল্পের সময়ও শেষ হয়ে গেছে। তাহলে এভাবে টাকা খরচ করে লাভ কী?’

মশিউর রহমান নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এটা উন্নয়ন নয়Ñঅবহেলার উদাহরণ। প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি,তাই আজ অবস্থা ভয়াবহ।’

রাসেল হোসেন নামে আরেকজন বলেন,‘নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার ও তদারকির অভাবে কয়েক মাসের মধ্যেই বেশিরভাগ বাতি নষ্ট হয়ে গেছে। বাতি স্থাপনে এই অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানাচ্ছি।

মহেশপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন,‘সময়মত যন্ত্রাদি না পাওয়ায় কাজ স্থগিত ছিলো। কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। বিকল হওয়া লাইটগুলো সচল আর বাকিগুলোও স্থাপন করা হবে।’
ঢাকা/ইবিটাইমস/এসএস