উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার সমুদ্র উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি নৌকায় আগুন লেগে ৫০ জন নিহত হয়েছেন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এতথ্য জানায়। সংস্থাটি জানায়, গত রবিবার রাতে এই দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়।
সংস্থাটি আরও জানায়, নিহতদের সবাই আফ্রিকার দেশ সুদানের নাগরিক৷ নৌকাটিতে মোট ৭৪ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন৷ নৌকায় থাকা বাকী ২৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইওএম।
সাগর পাড় দিয়ে ইউরোপে পৌছাতে গিয়ে নৌকাডুবিতে নিহতের এটি সর্বশেষ ঘটনা। তার আগে ইয়েমেন উপকূলে এক নৌকাডুবির ঘটনায় ৬৮ জন নিহত এবং কয়েক ডজন অভিবাসনপ্রত্যাশী নিখোঁজ হয়েছেন ৷
চলতি বছরের আগস্টে ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপের নিকটবর্তী উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন। আর জুন মাসে লিবিয়ার উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় ৬০ অভিবাসনপ্রত্যাশী নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন ৷
সাগরে এমন মৃত্যু ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপে নেওয়া প্রয়োজন বলে জানিয়েছে আইওএম-এর লিবিয়া অফিস।
এদিকে ইউরোপের অভিবাসন বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইনফোমাইগ্রেন্টস তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, মূলত আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অনেক মানুষ ইউরোপে পৌছানোর উদ্দেশ্যে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়া মতো ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা করেন ৷ লিবিয়া, তিউনিশিয়া এবং মরক্কোকে অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশী ইউরোপের পৌছানোর ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করেন ৷
আইওএম জানায়, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ভূমধ্যসাগরে দুর্ঘটনায় দুই হাজার ৪৫২জন অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রাণ হারিয়েছেন ৷
এদিকে অনিয়মিত পথে এমন যাত্রা ঠেকাতে লিবিয়াসহ কয়েকটি দেশের সাথে সহযোগিতা চুক্তি করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। তারই অংশ হিসেবে লিবিয়ার কোস্টগার্ডের কার্যক্রম প্রসারিত করতে অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
অবশ্য সহযোগিতার আওতায় উপকূলীয় অঞ্চলে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে লিবিয়ার সমুদ্ররক্ষীরা। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে অর্থাৎ ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে এক হাজার ১০০ জনেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর ইউরোপমুখী যাত্রা আটকে দিয়েছে লিবিয়ার কোস্টগার্ড৷ আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) তথ্য বিশ্লেষণে এই খবর জানা গেছে।
আইওএম জানায়, সহযোগিতা চুক্তির অংশ হিসেবে চলতি বছর মোট ১৭ হাজার ৪০২জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর যাত্রা আটকে দেয় লিবিয়ার কোস্টগার্ড। এরমধ্যে ১৫ হাজার ১৫৫ জন পুরুষ, এক হাজার ৫১৬ জন নারী, ৫৮৬ শিশু রয়েছে। বাকী ১৪৫ জনের লিঙ্গ পরিচয় জানা যায়নি ৷
ইউরোপের দেশ ইতালি এবং গ্রিসও অনিয়মিত পথে এমন আগমন ঠেকাতে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সাথে কাজ করছে ৷ এই রুটে ইতিমধ্যেই
বাংলাদেশী অভিবাসনপ্রত্যাশীরা শীর্ষে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস/এম আর