ভিয়েনা ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শতাধিক শিশুর মুখে হাসি ফুটালো ‘স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন’

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৫:৩৮:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩
  • ২৫ সময় দেখুন

নড়াইল প্রতিনিধিঃ ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। সেই আনন্দ সবার সাথে ভাগাভাগি করে নিতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন’। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১২০জন শিশুকে বিনামূল্যে নতুন পোশাক দিয়েছে ফাউন্ডেশনটি। শার্ট-প্যান্ট, পাঞ্জাবি, মেয়েদের বিভিন্ন রকমের পোশাকসহ চুড়ি-ফিতা, লিপস্টিক ছাড়াও সাজ-সজ্জার উপকরণ দিয়েছে তারা। আর এ উদ্যোগের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন অষ্ট্রিয়া প্রবাসী এবং ভিয়েনার একমাত্র মানি ট্রান্সফার “Mustary Cash & Carry”র সত্ত্বাধিকারী ও  ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল মুস্তারী, এছাড়া উপদেষ্টা মোঃ ফয়সাল মুস্তারী ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মির্জা গালিব সতেজ।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে শহরের মুস্তারী কমপ্লেক্স চত্বরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন-নড়াইল পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাফিজ খান মিলন, নড়াইল প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি সুলতান মাহমুদসহ অনেকে।

১২০ জন শিশু-কিশোর তাদের পছন্দ মতো পোশাক বেছে নিতেপেরে মহাখুশী। নড়াইল সদরের বোড়ামারা অটিজম ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাকপ্রতিবন্ধী আলামিন, রাজিব, ফয়জুল করিম, শাহিনা, জুবায়ের হোসেন, সাফি খাতুন, লিজা ও সোনিয়া বলেন, আমরা আগে কখনো এভাবে ঈদের নতুন পোশাক পায়নি। স্বপ্নের খোঁজে আমাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছে। রঙ-বেরঙের নতুন পোশাক পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি।

নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম এলাকার শিশু তৃষা, রাইসা, জান্নাতি ও আব্দুল্লাহসহ অন্যরা জানায়, ঈদের আগে বিনামূল্যে নতুন পোশাক পেয়ে খুব খুশি হয়েছে তারা। সতেজ ভাই আমাদের এই সুযোগ করে দিয়েছেন।

ফাউন্ডেশন উপদেষ্টা মোঃ ফয়সাল মুস্তারী বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য নিজেদের তুলে ধরা নয়। অন্যান্যের ভালো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা, উবুদ্ধ করা। দেশের বিত্তবানরাও এভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবেন, ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করেন নিবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা।

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাফিজ খান মিলন বলেন, তরুণ প্রজন্মের ছেলে হিসেবে মির্জা গালিব সতেজ সবসময় পজিটিভ কাজ করে যাচ্ছেন। ভাসমান বেদে সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ইতোমধ্যে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ পুরস্কার-২০২১’ পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। অন্য তরুণদেরও এমন ভালো কাজে এগিয়ে আসা উচিত।

নড়াইল পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা বলেন, তরুণ উদ্যোক্তা মির্জা গালিব সতেজ সব সময় অসহায় ছিন্নমূল মানুষের পাশে আছেন। ২০১৭ সাল থেকে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। করোনার সময়ও অসহায় মানুষকে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন। এ ছাড়া বিনামূল্যে সবজি বাজার, গরিব কৃষকের বোরো ধানকর্তন, শিশুদের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, রোজায় ইফতার বিতরণ, গাছের চারা বিতরণ ও বাড়ি বাড়ি বৃক্ষরোপন, দরিদ্র মেধাবীর মাঝে শিক্ষাউপকরণ, ভাসমান বেদে সম্প্রদায়কে শিক্ষাদানসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছেন সতেজ। এ ছাড়া ২০২২ সালে সিলেট ও সুনামগঞ্জ এলাকায় বন্যা দুর্গতদেরও পাশে ছিলো স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন। আমি তাদের পাশে থেকে সবসময় উৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করি।

স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহ পরাণসহ সদস্যরা বলেন, ২০১৭ সালের ফ্রেব্রুয়ারি থেকে অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে ফাউন্ডেশনের সদস্য সংখ্যা ৪৫ জন। যাদের বেশির ভাগই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী।

স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মির্জা গালিব সতেজ বলেন, শিশুদের মন সব সময় রঙিন। তবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কষ্টে থাকে। বিশেষ করে ঈদের সময় নতুন পোশাক কেনার সুযোগ পায় না। তাদের মাঝে নতুন পোশাক দিয়ে একটু হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেছি। এতিম, প্রতিবন্ধী, সুবিধাবঞ্চিতসহ ১২০ শিশু তাদের পছন্দ মতো পোশাব বেছে নিয়েছে। সমাজের অন্যরা এভাবে এগিয়ে আসবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম দেখে ভালো লেগেছে। তারা বেদে সম্প্রদায়কে শিক্ষাদানসহ সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের উদ্যোগগুলো আরো গতিশীল হবে। সুবিধাবঞ্চিতরা উপকৃত হবেন। এমন প্রত্যাশা আমাদের।

ফরহাদ খান/ইবিটাইমস/এম আর  

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

শতাধিক শিশুর মুখে হাসি ফুটালো ‘স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন’

আপডেটের সময় ০৫:৩৮:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩

নড়াইল প্রতিনিধিঃ ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। সেই আনন্দ সবার সাথে ভাগাভাগি করে নিতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন’। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১২০জন শিশুকে বিনামূল্যে নতুন পোশাক দিয়েছে ফাউন্ডেশনটি। শার্ট-প্যান্ট, পাঞ্জাবি, মেয়েদের বিভিন্ন রকমের পোশাকসহ চুড়ি-ফিতা, লিপস্টিক ছাড়াও সাজ-সজ্জার উপকরণ দিয়েছে তারা। আর এ উদ্যোগের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন অষ্ট্রিয়া প্রবাসী এবং ভিয়েনার একমাত্র মানি ট্রান্সফার “Mustary Cash & Carry”র সত্ত্বাধিকারী ও  ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল মুস্তারী, এছাড়া উপদেষ্টা মোঃ ফয়সাল মুস্তারী ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মির্জা গালিব সতেজ।

শনিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে শহরের মুস্তারী কমপ্লেক্স চত্বরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন-নড়াইল পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাফিজ খান মিলন, নড়াইল প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি সুলতান মাহমুদসহ অনেকে।

১২০ জন শিশু-কিশোর তাদের পছন্দ মতো পোশাক বেছে নিতেপেরে মহাখুশী। নড়াইল সদরের বোড়ামারা অটিজম ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাকপ্রতিবন্ধী আলামিন, রাজিব, ফয়জুল করিম, শাহিনা, জুবায়ের হোসেন, সাফি খাতুন, লিজা ও সোনিয়া বলেন, আমরা আগে কখনো এভাবে ঈদের নতুন পোশাক পায়নি। স্বপ্নের খোঁজে আমাদের সেই সুযোগ করে দিয়েছে। রঙ-বেরঙের নতুন পোশাক পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি।

নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম এলাকার শিশু তৃষা, রাইসা, জান্নাতি ও আব্দুল্লাহসহ অন্যরা জানায়, ঈদের আগে বিনামূল্যে নতুন পোশাক পেয়ে খুব খুশি হয়েছে তারা। সতেজ ভাই আমাদের এই সুযোগ করে দিয়েছেন।

ফাউন্ডেশন উপদেষ্টা মোঃ ফয়সাল মুস্তারী বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য নিজেদের তুলে ধরা নয়। অন্যান্যের ভালো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা, উবুদ্ধ করা। দেশের বিত্তবানরাও এভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবেন, ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করেন নিবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা।

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাফিজ খান মিলন বলেন, তরুণ প্রজন্মের ছেলে হিসেবে মির্জা গালিব সতেজ সবসময় পজিটিভ কাজ করে যাচ্ছেন। ভাসমান বেদে সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ইতোমধ্যে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ পুরস্কার-২০২১’ পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি। অন্য তরুণদেরও এমন ভালো কাজে এগিয়ে আসা উচিত।

নড়াইল পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা বলেন, তরুণ উদ্যোক্তা মির্জা গালিব সতেজ সব সময় অসহায় ছিন্নমূল মানুষের পাশে আছেন। ২০১৭ সাল থেকে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। করোনার সময়ও অসহায় মানুষকে খাদ্যসামগ্রী দিয়েছেন। এ ছাড়া বিনামূল্যে সবজি বাজার, গরিব কৃষকের বোরো ধানকর্তন, শিশুদের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, রোজায় ইফতার বিতরণ, গাছের চারা বিতরণ ও বাড়ি বাড়ি বৃক্ষরোপন, দরিদ্র মেধাবীর মাঝে শিক্ষাউপকরণ, ভাসমান বেদে সম্প্রদায়কে শিক্ষাদানসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে যাচ্ছেন সতেজ। এ ছাড়া ২০২২ সালে সিলেট ও সুনামগঞ্জ এলাকায় বন্যা দুর্গতদেরও পাশে ছিলো স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন। আমি তাদের পাশে থেকে সবসময় উৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করি।

স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহ পরাণসহ সদস্যরা বলেন, ২০১৭ সালের ফ্রেব্রুয়ারি থেকে অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে ফাউন্ডেশনের সদস্য সংখ্যা ৪৫ জন। যাদের বেশির ভাগই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী।

স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মির্জা গালিব সতেজ বলেন, শিশুদের মন সব সময় রঙিন। তবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কষ্টে থাকে। বিশেষ করে ঈদের সময় নতুন পোশাক কেনার সুযোগ পায় না। তাদের মাঝে নতুন পোশাক দিয়ে একটু হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেছি। এতিম, প্রতিবন্ধী, সুবিধাবঞ্চিতসহ ১২০ শিশু তাদের পছন্দ মতো পোশাব বেছে নিয়েছে। সমাজের অন্যরা এভাবে এগিয়ে আসবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, স্বপ্নের খোঁজে ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম দেখে ভালো লেগেছে। তারা বেদে সম্প্রদায়কে শিক্ষাদানসহ সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের উদ্যোগগুলো আরো গতিশীল হবে। সুবিধাবঞ্চিতরা উপকৃত হবেন। এমন প্রত্যাশা আমাদের।

ফরহাদ খান/ইবিটাইমস/এম আর