ভিয়েনা ০৯:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লালমোহনে বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে মোবাইল জুয়া

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৫:৪১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩
  • ১৯ সময় দেখুন

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহন উপজেলাজুড়ে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলফোনের মাধ্যমে লুডু খেলা এখন জমজমাট জুয়ায় পরিণত হয়েছে। এতে দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে ছাত্র ও যুবকরা। স্মার্ট ফোনে লুডুর সফটওয়্যার সহজলভ্য হওয়ায় তা দিয়ে দিন থেকে শুরু করে রাতের গভীর পর্যন্ত  চলছে এ জুয়া খেলা।

সরজমিনে লালমোহনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিশোর, যুবক, স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা পড়–য়া ছাত্ররা গ্রাম গঞ্জের চায়ের দোকান অথবা রাস্তার পাশে বসে ফোনের মাধমে এ ডিজিটাল জুয়া খেলছে। এসময় একাধিক জুয়াড়ির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চারজন মিলে খেলে এক একটি গেইম শেষ করতে সময় লাগে প্রায় ৩০ মিনিট। প্রতি গেইমে বাজি ধরা হয় ৫০০-১০০০ টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে টাকার পরিমাণ আরো অধিক হয়।

নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব চরউমেদ এলাকার এক যুবক জানান, তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। তখন নিয়মিত তাসের মাধ্যমে জুয়া খেলতেন। কয়েক মাসের মধ্যে জুয়া তার কাছে নেশার মতো হয়ে গেছে। এরপর তাসের জুয়া বাদ দিয়ে মোবাইল ফোনে লুডু কিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে জুয়া খেলা শুরু করেন তিনি। এতে করে অনেক টাকা দেনায় জড়িয়ে পড়েন সে। যার কারণে তাকে আয়ের একমাত্র সম্বল মোটরসাইকেলটিও বিক্রি করে দিতে হয়েছে। সব হারিয়ে এখন তিনি বেকার। বইছেন দেনার বোঝা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তার মতো এমন অনেকেই রয়েছেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর লালমোহন উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম জনি বলেন, জুয়া এখন মাদকের মতো আরেকটি ব্যাধি। এ ব্যাধি সারাতে স্থানীয় সচেতন মহলকে এগিয়ে আসতে হবে। এলাকাবাসিই পারে এর প্রতিরোধ করতে ও এদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে।

এব্যাপারে প্রশাসনের কাছে আশানুরূপ সহযোগিতাও পাওয়া যায় না। যার কারণে এখন প্রকাশ্যে জুয়া মাদকসহ সামাজিক বিভিন্ন ধরনের অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে।

অন্যদিকে স্থানীয় সচেতন মহলও মনে করছেন, দ্রুত যদি এসব জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ বা অভিযান পরিচালনা করা না হয়, তাহলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। বিপথগামী হবে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও যুবকরা।

এ ব্যাপারে লালমোহন থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. এনায়েত হোসেন জানান, আমরা বিট পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে  জুয়া-মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ বিরোধী সভা করছি। যেখানে অভিভাবকসহ স্থানীয় রাজনৈতিক-জনপ্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকেন। তাদেরকে এসব বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। এছাড়াও যদি আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাই তাহলে জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবো।

জাহিদ ইসলাম দুলাল/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

লালমোহনে বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে মোবাইল জুয়া

আপডেটের সময় ০৫:৪১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ মার্চ ২০২৩

লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি: ভোলার লালমোহন উপজেলাজুড়ে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলফোনের মাধ্যমে লুডু খেলা এখন জমজমাট জুয়ায় পরিণত হয়েছে। এতে দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে ছাত্র ও যুবকরা। স্মার্ট ফোনে লুডুর সফটওয়্যার সহজলভ্য হওয়ায় তা দিয়ে দিন থেকে শুরু করে রাতের গভীর পর্যন্ত  চলছে এ জুয়া খেলা।

সরজমিনে লালমোহনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিশোর, যুবক, স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা পড়–য়া ছাত্ররা গ্রাম গঞ্জের চায়ের দোকান অথবা রাস্তার পাশে বসে ফোনের মাধমে এ ডিজিটাল জুয়া খেলছে। এসময় একাধিক জুয়াড়ির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চারজন মিলে খেলে এক একটি গেইম শেষ করতে সময় লাগে প্রায় ৩০ মিনিট। প্রতি গেইমে বাজি ধরা হয় ৫০০-১০০০ টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে টাকার পরিমাণ আরো অধিক হয়।

নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব চরউমেদ এলাকার এক যুবক জানান, তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। তখন নিয়মিত তাসের মাধ্যমে জুয়া খেলতেন। কয়েক মাসের মধ্যে জুয়া তার কাছে নেশার মতো হয়ে গেছে। এরপর তাসের জুয়া বাদ দিয়ে মোবাইল ফোনে লুডু কিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে জুয়া খেলা শুরু করেন তিনি। এতে করে অনেক টাকা দেনায় জড়িয়ে পড়েন সে। যার কারণে তাকে আয়ের একমাত্র সম্বল মোটরসাইকেলটিও বিক্রি করে দিতে হয়েছে। সব হারিয়ে এখন তিনি বেকার। বইছেন দেনার বোঝা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তার মতো এমন অনেকেই রয়েছেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর লালমোহন উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম জনি বলেন, জুয়া এখন মাদকের মতো আরেকটি ব্যাধি। এ ব্যাধি সারাতে স্থানীয় সচেতন মহলকে এগিয়ে আসতে হবে। এলাকাবাসিই পারে এর প্রতিরোধ করতে ও এদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে।

এব্যাপারে প্রশাসনের কাছে আশানুরূপ সহযোগিতাও পাওয়া যায় না। যার কারণে এখন প্রকাশ্যে জুয়া মাদকসহ সামাজিক বিভিন্ন ধরনের অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে।

অন্যদিকে স্থানীয় সচেতন মহলও মনে করছেন, দ্রুত যদি এসব জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ বা অভিযান পরিচালনা করা না হয়, তাহলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। বিপথগামী হবে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও যুবকরা।

এ ব্যাপারে লালমোহন থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. এনায়েত হোসেন জানান, আমরা বিট পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে  জুয়া-মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ বিরোধী সভা করছি। যেখানে অভিভাবকসহ স্থানীয় রাজনৈতিক-জনপ্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকেন। তাদেরকে এসব বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। এছাড়াও যদি আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাই তাহলে জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবো।

জাহিদ ইসলাম দুলাল/ইবিটাইমস