ভিয়েনা ০৪:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :

ঈদযাত্রায় ফের ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ১০:১৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • ১ সময় দেখুন

শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা, টাঙ্গাইল : আর কদিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদযাত্রায় প্রতি বছরের মতো এবারও লাখ লাখ মানুষ ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক ব্যবহার করে বাড়ি ফিরবে। কিন্তু ঈদের আগেই এই মহাসড়কে বাড়ছে ডাকাতির ঘটনা, ঘটছে নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির মতো উদ্বেগজনক ঘটনাও। ফলে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে আল ইমরান পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি হয়। দেশীয় অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে লুটপাট চালায় ডাকাতরা। এ সময় শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটে বলে জানা যায়। এ ঘটনার পর থেকে যাত্রী ও চালকদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন ২৬টি জেলার ৩০-৩৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। এছাড়া টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কেও প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী বাস যাতায়াত করে। এই মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কের বিস্তৃতি গাজীপুরের কালিয়াকৈর, ময়মনসিংহের রসুলপুর ও জামালপুরের সরিষাবাড়ী পর্যন্ত।

বাস মালিকদের দাবি, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে গোলচত্বর এবং মির্জাপুরের পাকুল্যা থেকে রাবনা বাইপাস পর্যন্ত অংশ দুটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তারা বলছেন, এসব এলাকায় নিয়মিত ডাকাতির ঘটনা ঘটছে এবং প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।

বাসযাত্রী নাহিদুল হাসান বলেন, “মহাসড়কে ডাকাতি এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাত হলে আমরা আতঙ্কে থাকি। প্রশাসন যদি আরও জোরালোভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে আমরা নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরতে পারবো।”

আরেক যাত্রী সাফায়েত হোসেন বলেন, “ঈদের সময় মহাসড়কে আতঙ্ক থেকেই যায়। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি যেন নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।”

উত্তরবঙ্গগামী বাসচালক মোহাম্মদ সবুজ জানান, “ডাকাতরা যাত্রী সেজে বাসে ওঠে। কে ডাকাত আর কে সাধারণ যাত্রী, তা বোঝা যায় না। সুযোগ পেলেই তারা বাসে ডাকাতি চালায়। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”

টাঙ্গাইল জেলা বাস-কোচ-মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক বলেন, “মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে দুটি জায়গায় বারবার ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। পুলিশ যদি কঠোর ব্যবস্থা নেয় এবং টহল জোরদার করে, তাহলে ডাকাতি অনেকটাই রোধ করা সম্ভব। সমিতির পক্ষ থেকে প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।”

সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন বলেন, “প্রতিটি বাসে যাত্রীদের ছবি তুলে রাখার জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। এতে ডাকাতদের চিহ্নিত করা সহজ হবে। এছাড়া রাতের বাসে কম যাত্রী থাকলে নারী যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়তি নজরদারি জরুরি।”

গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, “ডাকাতি প্রতিরোধে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় যে-সব এলাকায় আলো কম, সেখানে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।”

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “মহাসড়কে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের টহল কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। যাত্রীরা যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, সেজন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।

ঢাকা/ইবিটাইমস/এসএস

জনপ্রিয়

৩৩ বছর ধরে বন্ধ লালমোহন পাবলিক লাইব্রেরি

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

ঈদযাত্রায় ফের ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক

আপডেটের সময় ১০:১৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা, টাঙ্গাইল : আর কদিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদযাত্রায় প্রতি বছরের মতো এবারও লাখ লাখ মানুষ ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক ব্যবহার করে বাড়ি ফিরবে। কিন্তু ঈদের আগেই এই মহাসড়কে বাড়ছে ডাকাতির ঘটনা, ঘটছে নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির মতো উদ্বেগজনক ঘটনাও। ফলে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে আল ইমরান পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি হয়। দেশীয় অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে লুটপাট চালায় ডাকাতরা। এ সময় শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটে বলে জানা যায়। এ ঘটনার পর থেকে যাত্রী ও চালকদের মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন ২৬টি জেলার ৩০-৩৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। এছাড়া টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কেও প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী বাস যাতায়াত করে। এই মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কের বিস্তৃতি গাজীপুরের কালিয়াকৈর, ময়মনসিংহের রসুলপুর ও জামালপুরের সরিষাবাড়ী পর্যন্ত।

বাস মালিকদের দাবি, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে গোলচত্বর এবং মির্জাপুরের পাকুল্যা থেকে রাবনা বাইপাস পর্যন্ত অংশ দুটি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তারা বলছেন, এসব এলাকায় নিয়মিত ডাকাতির ঘটনা ঘটছে এবং প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।

বাসযাত্রী নাহিদুল হাসান বলেন, “মহাসড়কে ডাকাতি এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাত হলে আমরা আতঙ্কে থাকি। প্রশাসন যদি আরও জোরালোভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে আমরা নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরতে পারবো।”

আরেক যাত্রী সাফায়েত হোসেন বলেন, “ঈদের সময় মহাসড়কে আতঙ্ক থেকেই যায়। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি যেন নির্বিঘ্নে বাড়ি পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।”

উত্তরবঙ্গগামী বাসচালক মোহাম্মদ সবুজ জানান, “ডাকাতরা যাত্রী সেজে বাসে ওঠে। কে ডাকাত আর কে সাধারণ যাত্রী, তা বোঝা যায় না। সুযোগ পেলেই তারা বাসে ডাকাতি চালায়। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”

টাঙ্গাইল জেলা বাস-কোচ-মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক বলেন, “মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে দুটি জায়গায় বারবার ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। পুলিশ যদি কঠোর ব্যবস্থা নেয় এবং টহল জোরদার করে, তাহলে ডাকাতি অনেকটাই রোধ করা সম্ভব। সমিতির পক্ষ থেকে প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।”

সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন বলেন, “প্রতিটি বাসে যাত্রীদের ছবি তুলে রাখার জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। এতে ডাকাতদের চিহ্নিত করা সহজ হবে। এছাড়া রাতের বাসে কম যাত্রী থাকলে নারী যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়তি নজরদারি জরুরি।”

গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, “ডাকাতি প্রতিরোধে মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় যে-সব এলাকায় আলো কম, সেখানে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।”

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “মহাসড়কে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের টহল কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। যাত্রীরা যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, সেজন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।

ঢাকা/ইবিটাইমস/এসএস