ভিয়েনা ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝুপড়িতে ঠাঁই জহুরার

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৫:১৯:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১৪ সময় দেখুন
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: টিনের ছোট একটা ঘর। ঘরের দরজা বেড়ার কাঠামো দিয়ে তৈরি। পলিথিন দিয়ে তা ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ঘরের ভেতর পলিথিনের ওপর চাদর বিছিয়ে শুয়ে আছেন এক বৃদ্ধা। ঘরে আসবাব বলতে কিছুই নেই। এটা প্রতিবন্ধী জহুরা খাতুনের থাকার ঘর। স্বামীর মৃত্যুর পর জায়গা হয়নি শ্বশুর বাড়িতে। থাকতেন মানুষের ঘরের বারান্দায়,ভিক্ষা করে চালাতেন জীবিকা । বর্তমানে তাঁর জায়গা হয়েছে একটি ঝুপড়ি ঘরে। ঝুপড়িটির অবস্থান ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার সলেমানপুর এলাকায় সড়কের পাশে। সরকারী কোন সুযোগ-সুবিধা কখনই জোটেনি জহুরার ভাগ্যে।

জহুরা খাতুনের বিয়ে হয় কালীগঞ্জে। ওই সংসারে একটি মেয়ে সন্তান ছিল। ৩১ বছর আগে তার স্বামী খালেক হোসেন মারা যান। স্বামী মারা যাবার পর মেয়ের কথা চিন্তা করে বিয়েও করেননি। স্বামীর সহায়-সম্বল না থাকায় আশ্রয় নেন কোটচাঁদপুরের সলেমানপুর দাস পাড়ায়। থাকতেন মানুষের বারান্দায়। জীবিকার জন্য করতেন ভিক্ষা। তা দিয়ে চলতেন মা  মেয়ে। এভাবে মেয়েটি বড় করে স্থানীয়দের সহায়তায় বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ৩ বছর আগে মারা যায় তার মেয়ে। মেয়ের সংসারে দুই সন্তানও রয়েছে।

বয়সের ভারে অনেকটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন জহুরা খাতুন। শারীরিক ভাবেও বেশ অসুস্থ তিনি। কর্ম ও ভিক্ষা করারও সামর্থ্য নেই। ঠাঁই হয়েছে সলেমানপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সড়কের পাশের একটি ঝুপড়িতে। এটি তৈরি করে দিয়েছেন রুমা বেগম, রাহেলা বেগম, সাজেদা বেগম ও পারভিনা বেগম নামের স্থানীয় চারজন নারী। জহুরার অবস্থা দেখে মানুষের কাছ থেকে বাঁশ,টিন ও টাকা চেয়ে ওই নারীরা ঝুপড়ি ঘরটি তৈরি করে দিয়েছেন। সামর্থ্য না থাকলেও খাওয়া আর ওষুধ খরচ চালাচ্ছেন চার নারী।

জহুরাকে দেখাশোনা করা রুমা বেগম জানান,‘জহুরা খাতুন বয়স পায় ৬০ বছর। সবাই তাঁকে ‘ডুলি পাগলি’ বলেই চেনেন। ভিক্ষা করে জীবন চালাতেন তিনি। আগে থাকতেন মানুষের ঘরের বারান্দায়। অসুস্থ হয়ে পড়ায় এখন তাঁর জায়গা হয়েছে কোটচাঁদপুর পৌরসভার সলেমানপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সড়কের পাশের এই ঝুপড়িতে।

রুমা বলেন,জহুরার ঝুপড়িটিও বানিয়ে দিয়েছেন তিনিসহ এলাকার কয়েকজন নারী। মানুষের কাছ থেকে বাঁশ-টিন চেয়ে এনেছিলেন তাঁরা। সামর্থ্য না থাকলেও জহুরার খাওয়া আর ওষুধ খরচ চালাচ্ছেন তাঁরাই ভাগাভাগি করে। তবে এভাবে বেশি দিন করা তাঁদের পক্ষেও সম্ভব হবে না।’

এলাকার লোকজন বলেন,‘মেয়ের মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েন জহুরা খাতুন। বয়সের ভারে কিছুটা ভারসাম্যহীনও হয়ে গেছেন। বর্তমানে অনেক অসুস্থ তিনি। তার এই অবস্থা দেখে এলাকার রুমা, রাহেলা বেগম, সাজেদা বেগম ও পারভিনা বেগম মিলে মানুষের কাছ থেকে বাঁশ আর টিন চেয়ে রাস্তার ধারে ঝুপড়িটি বানিয়ে দিয়েছেন। দেখাশোনাও করেন তারাই।’

এলাকাবাসী বলছেন,সরকারী বা বে-সরকারী কোন উদ্যেগে একটা ঘরের ব্যবস্থা হলে কিছুটা কষ্ট লাঘব হতো জহুরা খাতুনের।

শেখ ইমন/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

ঝুপড়িতে ঠাঁই জহুরার

আপডেটের সময় ০৫:১৯:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: টিনের ছোট একটা ঘর। ঘরের দরজা বেড়ার কাঠামো দিয়ে তৈরি। পলিথিন দিয়ে তা ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ঘরের ভেতর পলিথিনের ওপর চাদর বিছিয়ে শুয়ে আছেন এক বৃদ্ধা। ঘরে আসবাব বলতে কিছুই নেই। এটা প্রতিবন্ধী জহুরা খাতুনের থাকার ঘর। স্বামীর মৃত্যুর পর জায়গা হয়নি শ্বশুর বাড়িতে। থাকতেন মানুষের ঘরের বারান্দায়,ভিক্ষা করে চালাতেন জীবিকা । বর্তমানে তাঁর জায়গা হয়েছে একটি ঝুপড়ি ঘরে। ঝুপড়িটির অবস্থান ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার সলেমানপুর এলাকায় সড়কের পাশে। সরকারী কোন সুযোগ-সুবিধা কখনই জোটেনি জহুরার ভাগ্যে।

জহুরা খাতুনের বিয়ে হয় কালীগঞ্জে। ওই সংসারে একটি মেয়ে সন্তান ছিল। ৩১ বছর আগে তার স্বামী খালেক হোসেন মারা যান। স্বামী মারা যাবার পর মেয়ের কথা চিন্তা করে বিয়েও করেননি। স্বামীর সহায়-সম্বল না থাকায় আশ্রয় নেন কোটচাঁদপুরের সলেমানপুর দাস পাড়ায়। থাকতেন মানুষের বারান্দায়। জীবিকার জন্য করতেন ভিক্ষা। তা দিয়ে চলতেন মা  মেয়ে। এভাবে মেয়েটি বড় করে স্থানীয়দের সহায়তায় বিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ৩ বছর আগে মারা যায় তার মেয়ে। মেয়ের সংসারে দুই সন্তানও রয়েছে।

বয়সের ভারে অনেকটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন জহুরা খাতুন। শারীরিক ভাবেও বেশ অসুস্থ তিনি। কর্ম ও ভিক্ষা করারও সামর্থ্য নেই। ঠাঁই হয়েছে সলেমানপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সড়কের পাশের একটি ঝুপড়িতে। এটি তৈরি করে দিয়েছেন রুমা বেগম, রাহেলা বেগম, সাজেদা বেগম ও পারভিনা বেগম নামের স্থানীয় চারজন নারী। জহুরার অবস্থা দেখে মানুষের কাছ থেকে বাঁশ,টিন ও টাকা চেয়ে ওই নারীরা ঝুপড়ি ঘরটি তৈরি করে দিয়েছেন। সামর্থ্য না থাকলেও খাওয়া আর ওষুধ খরচ চালাচ্ছেন চার নারী।

জহুরাকে দেখাশোনা করা রুমা বেগম জানান,‘জহুরা খাতুন বয়স পায় ৬০ বছর। সবাই তাঁকে ‘ডুলি পাগলি’ বলেই চেনেন। ভিক্ষা করে জীবন চালাতেন তিনি। আগে থাকতেন মানুষের ঘরের বারান্দায়। অসুস্থ হয়ে পড়ায় এখন তাঁর জায়গা হয়েছে কোটচাঁদপুর পৌরসভার সলেমানপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সড়কের পাশের এই ঝুপড়িতে।

রুমা বলেন,জহুরার ঝুপড়িটিও বানিয়ে দিয়েছেন তিনিসহ এলাকার কয়েকজন নারী। মানুষের কাছ থেকে বাঁশ-টিন চেয়ে এনেছিলেন তাঁরা। সামর্থ্য না থাকলেও জহুরার খাওয়া আর ওষুধ খরচ চালাচ্ছেন তাঁরাই ভাগাভাগি করে। তবে এভাবে বেশি দিন করা তাঁদের পক্ষেও সম্ভব হবে না।’

এলাকার লোকজন বলেন,‘মেয়ের মৃত্যুর পর ভেঙে পড়েন জহুরা খাতুন। বয়সের ভারে কিছুটা ভারসাম্যহীনও হয়ে গেছেন। বর্তমানে অনেক অসুস্থ তিনি। তার এই অবস্থা দেখে এলাকার রুমা, রাহেলা বেগম, সাজেদা বেগম ও পারভিনা বেগম মিলে মানুষের কাছ থেকে বাঁশ আর টিন চেয়ে রাস্তার ধারে ঝুপড়িটি বানিয়ে দিয়েছেন। দেখাশোনাও করেন তারাই।’

এলাকাবাসী বলছেন,সরকারী বা বে-সরকারী কোন উদ্যেগে একটা ঘরের ব্যবস্থা হলে কিছুটা কষ্ট লাঘব হতো জহুরা খাতুনের।

শেখ ইমন/ইবিটাইমস