ভিয়েনা ০৫:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিচারপতি মানিকের ব্রিটিশ পাসপোর্ট ও ৭০ লাখ টাকা নিয়ে যা জানা গেল

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ১২:৩৭:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
  • ৫ সময় দেখুন
স্টাফ রি‌পোর্টারঃ অবৈধভাবে দেশ ছেড়ে পালানোর সময় সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে বিজিবির কাছে আটক হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।

শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি। শুক্রবার কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

এরই মধ্যে বিচারপতি মানিককে আটকের সময় এবং পরবর্তীতে সীমান্তবর্তী বিজিবি ক্যাম্পে অবস্থানের সময় ধারণকৃত কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

একটা ভিডিওতে দেখা যায়, কলাপাতার ওপরে শুয়ে বিচারপতি মানিক কয়েকজন ব্যক্তিকে বলছিলেন, ‘পয়সা আমি দিবো, আমার ভাই-বোন দিবে। আমি এদেশে এত কষ্ট করে এসেছি কি বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার জন্য?’ এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কাউকে বলতে শোনা যায় ‘আমাদের পয়সা লাগবে না, আপনি যদি সেফটি চান’

পরবর্তীতে বিজিবি ক্যাম্পে ধারণ করা আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিচারপতি মানিকের গলায় গামছা বেঁধে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ সময়
তিনি বলেন, ‘যে দালালদের সঙ্গে ১৫ হাজার টাকা চুক্তিতে সীমান্ত পার করে ভারতে প্রবেশ করেন, তারা তাকে মারধর করে তার কাছে থাকা ৬০-৭০ লাখ টাকা, মোবাইল ফোন এসব নিয়ে পালিয়ে গেছে। এখন তার কাছে বাংলাদেশি ও ব্রিটিশ পাসপোর্ট, ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ও কিছু টাকা আছে।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নাজিম উদ্দিন ও অন্যান্য বাসিন্দারা জানান, বৃহস্পতিবার বিচারপতি মানিক দনা সীমান্তবর্তী পাতিছড়া গ্রামে আসেন এবং দালালদের সহযোগিতায় শুক্রবার বিকেলে দেশের সীমানা পেরিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশও করেছিলেন। মানিক যে দালালের সঙ্গে ভারত যেতে চেয়েছিলেন ওই ব্যক্তির বাড়ি একেবারে সীমান্তঘেঁষা হওয়ায় তিনি নিজে নিয়মিত ভারতে অনুপ্রবেশ করেন এবং তার সহযোগিতায় বিভিন্ন মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে থাকেন।

তারা আরও জানান, দালালরা বিচারপতি মানিককে সীমান্ত পার করে দিতে চুক্তি করেছিল, তারা তাকে সীমান্তের ওপারে নিয়ে তার কাছ থাকা টাকা লুট করে পালিয়ে গেছে। পরে বিজিবির সহযোগিতায় তাকে সীমান্তের ভেতরে নিয়ে এলে তাকে আটক করা হয়।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (১৯ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার মো. আসাদুন্নবী বলেন, ‘সীমান্ত হয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় তাকে আটক করা হয়। আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে শনিবার সকালে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, ‘সকালে বিজিবি সদস্যরা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মানিককে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন। সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দেশের অন্যান্য জায়গায় মামলা থাকলে তাকে সে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় একটি টেলিভিশনের টকশোর সঞ্চালক দীপ্তি চৌধুরীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে তাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আখ্যা দিলে বিষয়টি নিয়ে চরম সমালোচনা সৃষ্টি হয়। পরে তাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। এ নোটিশের প্রত্যুত্তরে বিচারপতি মানিক দীপ্তি চৌধুরীর কাছে এবং জাতির কাছে ক্ষমা চান। গত ১৯ আগস্ট তার বিরুদ্ধে মানহানির একটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০২২ সালে একটি টকশোতে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিহিত করার ঘটনার জেরে এ মামলা দায়ের করেন একজন আইনজীবী। শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে আপিল বিভাগের বিচারপতি থেকে অবসরে যান।

মোঃ সো‌য়েব মেজবাহউদ্দিন/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

বিচারপতি মানিকের ব্রিটিশ পাসপোর্ট ও ৭০ লাখ টাকা নিয়ে যা জানা গেল

আপডেটের সময় ১২:৩৭:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
স্টাফ রি‌পোর্টারঃ অবৈধভাবে দেশ ছেড়ে পালানোর সময় সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে বিজিবির কাছে আটক হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।

শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বিজিবি। শুক্রবার কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

এরই মধ্যে বিচারপতি মানিককে আটকের সময় এবং পরবর্তীতে সীমান্তবর্তী বিজিবি ক্যাম্পে অবস্থানের সময় ধারণকৃত কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

একটা ভিডিওতে দেখা যায়, কলাপাতার ওপরে শুয়ে বিচারপতি মানিক কয়েকজন ব্যক্তিকে বলছিলেন, ‘পয়সা আমি দিবো, আমার ভাই-বোন দিবে। আমি এদেশে এত কষ্ট করে এসেছি কি বাংলাদেশে ফেরত যাওয়ার জন্য?’ এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত কাউকে বলতে শোনা যায় ‘আমাদের পয়সা লাগবে না, আপনি যদি সেফটি চান’

পরবর্তীতে বিজিবি ক্যাম্পে ধারণ করা আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিচারপতি মানিকের গলায় গামছা বেঁধে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ সময়
তিনি বলেন, ‘যে দালালদের সঙ্গে ১৫ হাজার টাকা চুক্তিতে সীমান্ত পার করে ভারতে প্রবেশ করেন, তারা তাকে মারধর করে তার কাছে থাকা ৬০-৭০ লাখ টাকা, মোবাইল ফোন এসব নিয়ে পালিয়ে গেছে। এখন তার কাছে বাংলাদেশি ও ব্রিটিশ পাসপোর্ট, ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ও কিছু টাকা আছে।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নাজিম উদ্দিন ও অন্যান্য বাসিন্দারা জানান, বৃহস্পতিবার বিচারপতি মানিক দনা সীমান্তবর্তী পাতিছড়া গ্রামে আসেন এবং দালালদের সহযোগিতায় শুক্রবার বিকেলে দেশের সীমানা পেরিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশও করেছিলেন। মানিক যে দালালের সঙ্গে ভারত যেতে চেয়েছিলেন ওই ব্যক্তির বাড়ি একেবারে সীমান্তঘেঁষা হওয়ায় তিনি নিজে নিয়মিত ভারতে অনুপ্রবেশ করেন এবং তার সহযোগিতায় বিভিন্ন মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে থাকেন।

তারা আরও জানান, দালালরা বিচারপতি মানিককে সীমান্ত পার করে দিতে চুক্তি করেছিল, তারা তাকে সীমান্তের ওপারে নিয়ে তার কাছ থাকা টাকা লুট করে পালিয়ে গেছে। পরে বিজিবির সহযোগিতায় তাকে সীমান্তের ভেতরে নিয়ে এলে তাকে আটক করা হয়।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (১৯ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার মো. আসাদুন্নবী বলেন, ‘সীমান্ত হয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় তাকে আটক করা হয়। আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে শনিবার সকালে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, ‘সকালে বিজিবি সদস্যরা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মানিককে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন। সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দেশের অন্যান্য জায়গায় মামলা থাকলে তাকে সে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় একটি টেলিভিশনের টকশোর সঞ্চালক দীপ্তি চৌধুরীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে তাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে আখ্যা দিলে বিষয়টি নিয়ে চরম সমালোচনা সৃষ্টি হয়। পরে তাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। এ নোটিশের প্রত্যুত্তরে বিচারপতি মানিক দীপ্তি চৌধুরীর কাছে এবং জাতির কাছে ক্ষমা চান। গত ১৯ আগস্ট তার বিরুদ্ধে মানহানির একটি মামলা দায়ের করা হয়। ২০২২ সালে একটি টকশোতে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিহিত করার ঘটনার জেরে এ মামলা দায়ের করেন একজন আইনজীবী। শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে আপিল বিভাগের বিচারপতি থেকে অবসরে যান।

মোঃ সো‌য়েব মেজবাহউদ্দিন/ইবিটাইমস