ভিয়েনা ০১:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতের ত্রিপুরার বন্যার পানিতে দেশের ৯ জেলা ভয়াবহ বন্যা কবলিত

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৬:৩৯:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪
  • ৩৩ সময় দেখুন

বন্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেনী, আকস্মিক বন্যায় ফেনীর অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

ইবিটাইমস ডেস্কঃ সোমবার (১৯ আগস্ট) রাত থেকেই ফেনী জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার প্রায় বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার (২১ আগস্ট) থেকে এ তিন উপজেলাসহ সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় পুরোপুরি সংযোগ বন্ধ করা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ভারী বৃষ্টিতে ফেনী শহরে জলাবদ্ধতার কারণে দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জেলার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন স্থান দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করে ডুবছে জনপদ। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জেলার সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বন্যাদুর্গত মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

জানা গেছে, বন্যার পানিতে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত সোমবার রাত থেকেই জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার প্রায় বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে এ তিন উপজেলাসহ সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় পুরোপুরি সংযোগ বন্ধ করা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ভারী বৃষ্টিতে ফেনী শহরে জলাবদ্ধতার কারণে দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

পরশুরামের সাতকুচিয়া এলাকার অনেক ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। পানির তীব্র স্রোতের কারণে ঠিকভাবে উদ্ধার কাজও করতে পারছেন না। তারমধ্যে বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় আরও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। এতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

এদিকে ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো. ময়নুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, জেলায় চার লাখ গ্রাহকের মধ্যে তিন লাখের বেশি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা) জেলার সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক রয়েছে।

ফেনী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন বলেন, আমাদের প্রায় ৭০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যার পানি কমার আগে সংযোগ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।

এর আগে, দুপুরের দিকে বন্যাকবলিত এলাকায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে স্পিডবোট নিয়ে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে বিজিবি সদস্য ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক পরিবারের শত শত স্বেচ্ছাসেবক দিনব্যাপী উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করছে।

এদিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জানিয়েছে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। বন্যায় সেখানে এখন পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে সেখাকার বিপর্যয় মোকাবেলা দপ্তর।

এমন পরিস্থিতিতে ভারতের ত্রিপুরার ডম্বুর হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট বা ডম্বুর গেট খুলে দিয়েছে ভারত। ত্রিপুরা রাজ্যের গোমতীর জেলা প্রশাসক তরিৎ কান্তি চাকমা তার সরকারি এক্স একাউন্টে (সাবেক টুইটার) এ কথা জানিয়েছেন।

আকস্মিক এই গেট খুলে দিলে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে ত্রিপুরা সংলগ্ন বাংলাদেশের ৯ টি জেলা। তারমধ্যে ফেনীর অবস্থা ভয়াবহ। ফেনীর নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা বলছেন, এই এলাকায় ১৯৮৮ সালের পর বন্যা পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়নি আগে কখনো।

ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার বিবিসিকে বলেন, “পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, সবার কল্পনার বাইরে। এখন অনেক মানুষ পানিতে আটকা পড়েছে। তাদেরকে উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ড”।ভারী বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পানিতে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বিবিসিকে বলেন, “খোয়াই, ধলাই, মুহুরী, হালদা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা তা অব্যাহত থাকতে পারে”। বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডকে মাঠে নামিয়েছে জেলা প্রশাসন।

আকস্মিক উজানের পানিতে বন্যা কবলিত ৯টি জেলা হল,ফেনী,নোয়াখালী,লক্ষীপুর,কুমিল্লা,সুনামগন্জ, মৌলভীবাজার,হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস 

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

ভারতের ত্রিপুরার বন্যার পানিতে দেশের ৯ জেলা ভয়াবহ বন্যা কবলিত

আপডেটের সময় ০৬:৩৯:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪

বন্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেনী, আকস্মিক বন্যায় ফেনীর অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন

ইবিটাইমস ডেস্কঃ সোমবার (১৯ আগস্ট) রাত থেকেই ফেনী জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার প্রায় বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার (২১ আগস্ট) থেকে এ তিন উপজেলাসহ সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় পুরোপুরি সংযোগ বন্ধ করা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ভারী বৃষ্টিতে ফেনী শহরে জলাবদ্ধতার কারণে দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

জেলার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন স্থান দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করে ডুবছে জনপদ। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জেলার সাড়ে তিন লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বন্যাদুর্গত মানুষজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

জানা গেছে, বন্যার পানিতে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত সোমবার রাত থেকেই জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার প্রায় বেশিরভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে এ তিন উপজেলাসহ সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় পুরোপুরি সংযোগ বন্ধ করা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ভারী বৃষ্টিতে ফেনী শহরে জলাবদ্ধতার কারণে দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

পরশুরামের সাতকুচিয়া এলাকার অনেক ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। পানির তীব্র স্রোতের কারণে ঠিকভাবে উদ্ধার কাজও করতে পারছেন না। তারমধ্যে বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় আরও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। এতে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

এদিকে ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো. ময়নুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, জেলায় চার লাখ গ্রাহকের মধ্যে তিন লাখের বেশি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৬টা) জেলার সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক রয়েছে।

ফেনী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন বলেন, আমাদের প্রায় ৭০ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যার পানি কমার আগে সংযোগ স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।

এর আগে, দুপুরের দিকে বন্যাকবলিত এলাকায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে স্পিডবোট নিয়ে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে বিজিবি সদস্য ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক পরিবারের শত শত স্বেচ্ছাসেবক দিনব্যাপী উদ্ধার অভিযান পরিচালনা ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করছে।

এদিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জানিয়েছে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। বন্যায় সেখানে এখন পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে সেখাকার বিপর্যয় মোকাবেলা দপ্তর।

এমন পরিস্থিতিতে ভারতের ত্রিপুরার ডম্বুর হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট বা ডম্বুর গেট খুলে দিয়েছে ভারত। ত্রিপুরা রাজ্যের গোমতীর জেলা প্রশাসক তরিৎ কান্তি চাকমা তার সরকারি এক্স একাউন্টে (সাবেক টুইটার) এ কথা জানিয়েছেন।

আকস্মিক এই গেট খুলে দিলে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে ত্রিপুরা সংলগ্ন বাংলাদেশের ৯ টি জেলা। তারমধ্যে ফেনীর অবস্থা ভয়াবহ। ফেনীর নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা বলছেন, এই এলাকায় ১৯৮৮ সালের পর বন্যা পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়নি আগে কখনো।

ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার বিবিসিকে বলেন, “পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, সবার কল্পনার বাইরে। এখন অনেক মানুষ পানিতে আটকা পড়েছে। তাদেরকে উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ড”।ভারী বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পানিতে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বিবিসিকে বলেন, “খোয়াই, ধলাই, মুহুরী, হালদা ও কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা তা অব্যাহত থাকতে পারে”। বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ডকে মাঠে নামিয়েছে জেলা প্রশাসন।

আকস্মিক উজানের পানিতে বন্যা কবলিত ৯টি জেলা হল,ফেনী,নোয়াখালী,লক্ষীপুর,কুমিল্লা,সুনামগন্জ, মৌলভীবাজার,হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস