চরফ্যাসন(ভোলা) প্রতিনিধিঃ ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার শশীভূষণ থানা যুবলীগের যুগ্ম আহŸায়ক ও সাবেক থানা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক লোকমান মাতাব্বর পালিয়ে যাওয়ার সময় পটুয়াখালীর মহিপুর থেকে আটক করেন জনতা। পরে গণধোলাই দিয়ে মহিপুর থানায় সোপর্দ করেন।লোকমান মাতাব্বর শশীভূষণ থানার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের নান্নু মাতাব্বরের ছেলে।
শুক্রবার বিকালে মহিপুর থানা পুলিশ আটক লোকমান মাতাব্বরকে চরফ্যাসন থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন বলে চরফ্যাসন থানার জ্যেষ্ঠ পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
জানাযায়, আটককৃত লোকমান মাতাব্বর ২০১৫ সনে ২৫ সেটেম্বর রাতে চরফ্যাসন উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবদুর রাজ্জাককে শশীভূষণ থানার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়াম্যান হাটে নৃশংসভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেন। এঘটনায় নিহত ছাত্রদল সভাপতি রাজ্জাকের বাবা মোহাম্মদ হোসেন বাদী হয়ে ১৭ জনকে আসামী করে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ক্ষমতার বলয়ে ২০২১ সনে ওই হত্যা মামলার আসামী লোকমান মাতাব্বরসহ অপারপর আসামীরা আদালত থেকে মামলায় খালাস পান। তৎকালীন সরকারের ক্ষমতার বলয়ে কিছু নেতার ছত্রছায়ায় তিনি শশীভূষণ থানা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক পদ ভাগিয়ে নেন। পরে তিনি আরো এক দফায় এগিয়ে ক্ষমতার দাপটে বর্তমানে তিনি শশীভূষণ থানা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক পদ ভাগিয়ে নিয়ে শুরু করেন তান্ডব। তার তাÐবে দিশেহারা হয়ে পরেন ওই থানা এলাকার মানুষ।
ছাত্রদল নেতার হত্যা মামলার প্রধান আসামী হওয়ার সুবাধে তিনি শশীভূষণ থানা এলাকা জুড়ে শুরু করেন সন্ত্রাস , চাঁদাবাজী, জমিদখলসহ সাধরন মানুষকে জিম্মি করে অর্থ লুটপাট। এতেই ক্ষ্যন্ত হননি তিনি। গ্রামজুড়ে শুরু করে নারী নির্যাতনসহ নানান অপকর্ম। ক্ষমতার দাপটে কেউই তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়নি। তার তাÐবে গ্রাম ছেড়েছে শশীভূষণ থানা এলাকার কয়েকশ পরিবার।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ছাত্রদল নেতা রাজ্জাক হত্যার মূলহোতা লোকমান মাতাব্বর নৌ-পথে পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানার মৎস্যঘাটে গিয়ে নিজকে জেলে পরিচয়ে আত্মগোপন করেন। ওই ঘাটে অবস্থান নেয়া চরফ্যাসনের জেলেরা তাকে চিনতে পেয়ে বিষয়টি স্থানীয় জনতাকে জানান। বৃহস্পতিবার রাতে মহিপুরের বিক্ষুদ্ধ জনতা তাকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে আটক করে রাখেন। পরে মহিপুর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেন।
চরফ্যাসন ও শীভূষণ থানা সুত্রে জানাযায়, আটক লোকমান মাতাব্বার রাজ্জাক হত্যা মামলায় খালস পেলেও তার বিরুদ্ধে উপজেলার চারটি থানায় চাঁদাবাজী ও মারধর , ছিনতাই ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
চরফ্যাসন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন আলমগীর মালতিয়া জানান, লোকমান চরফ্যাসন এলাকার আতঙ্ক। তিনি ২০১৫ সালে কোরবানির ঈদের দিন উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবদুর রাজ্জাকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। হত্যাকাÐের পর আওয়ামী লীগ সরকার তাকে শশীভূষণ থানা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব দেন।
যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নয়ন জানান, আ. রাজ্জাক হত্যার প্রধান আসামী লোকমান। ৫ আগস্টের পরে তিনি আত্মগোপনে যান। তিনি একজন চিহিৃত খুনি। তার ফাঁসি হওয়া দরকার।
মহিপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, লোকমান মাতাব্বর’কে মহিপুর মৎস্য আড়ৎ থেকে স্থানীয় জনতারা আটক করে পুলিশকে খবর দেয়।পরে পুলিশ গিয়ে তাকে জনতার কবল থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
চরফ্যাসন থানার ওসি মো, শাখাওয়াত হোসেন জানান, তাকে নিয়ে চরফ্যাসন থানা পুলিশের একটি দল ভোলার পথে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে চরফ্যাসন থানায় একটি চাঁদাবাজী মামলার ওয়ারেন্ট রয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
শহিদুল ইসলাম জামাল/ইবিটাইমস