ইউকে তার অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে পারিবারিক ভিসার শর্ত কঠোর করেছে

অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেয়া পরিকল্পনার অংশ হিসাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ

ইউরোপ ডেস্কঃ শুক্রবার (১২ এপ্রিল) ইউরোপের ৬টি ভাষায় প্রকাশিত অভিবাসন বিষয়ক পত্রিকা ইনফোমাইগ্র্যান্ট তাদের অনলাইন প্রতিবেদনে এতথ্য জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয় এ বছরের ৫ এপ্রিল থেকে কোনো অভিবাসী যদি তার পরিবারের কোনো সদস্যকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসতে চান তাহলে তার ন্যূনতম আয় হতে হবে ২৯ হাজার পাউন্ড৷ এই আয় সীমা আগে ছিল ১৮ হাজার ৬০০ পাউন্ড৷ আগামী বছর এটি বাড়িয়ে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ডে উন্নীত করা হতে পারে ৷

এই সিদ্ধান্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার অংশ৷ দেশটির করদাতার বোঝা কমাতেই অভিবাসনকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা জানিয়েছেন তিনি ৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিয়মিত এবং অনিয়মিত মিলিয়ে রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসী এসেছেন যুক্তরাজ্যে৷ চলতি বছর দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ ভোটের মাঠে অভিবাসন অন্যতম প্রধান ইস্যুতে পরিণত হয়েছে ৷ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে জনমত জরিপে পিছিয়ে আছে ক্ষমতাসীন রক্ষণশীলেরা৷

এদিকে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেছেন, ‘‘গণ অভিবাসন একটি ঊর্ধ্ব সীমায় পৌঁছে গেছে৷ ফলে, এমন কোনো সহজ সমাধান বা সহজ সিদ্ধান্ত নেই, যা এই সংখ্যাটিকে ব্রিটিশ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে দিতে পারে৷’’ তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা অদক্ষদের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করছি, যাতে ব্রিটিশ কর্মীদের এবং তাদের মজুরি রক্ষা করা যায়৷ আমরা চাই, যেসব অভিবাসী তাদের পরিবারকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসবেন তাদের কারণে যেন ব্রিটিশ নাগরিকদের উপর করের বোঝা চাপাতে না হয়৷’’

ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিবাসীদের পরিবারগুলো যেন যুক্তরাজ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকে, কারো উপর নির্ভর করতে না হয়, তা নিশ্চিত করতেই আয় সীমা বাড়ানো হয়েছে ৷ কর্মক্ষেত্র থেকে অর্জিত আয় আর সঞ্চয় মিলিয়েও এই শর্ত পূরণের সুযোগ থাকবে অভিবাসীদের৷ দক্ষ কর্মী হিসাবে ভিসা পাওয়ার শর্তকেও কঠোর করেছে যুক্তরাজ্য ৷ গত ডিসেম্বরে দক্ষ কর্মী হিসাবে যুক্তরাজ্যে আসার ন্যূনতম বেতনের হার ৪৭ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার ৷

অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসাবে শিক্ষার্থীদের জন্য কঠোর নীতি এবং ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের সেবাগ্রহীতা বিদেশিদের সারচার্জ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬৬ শতাংশ৷ জেমস ক্লেভারলি ওই সময় বলেছেন, যুক্তরাজ্যের নিট মাইগ্রেশন কমাতেই এসব উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে ৷ ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে নিট মাইগ্রেশন রেকর্ডসংখ্যক সাত লাখ ৪৫ হাজারে উন্নীত হয়েছে ৷

অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) জানিয়েছেন, ২০২২ সালে নিট মাইগ্রেশন (ব্রিটেন ছেড়ে যাওয়া মানুষ এবং দেশটিতে নতুন করে আসা মানুষের সংখ্যার পার্থক্য) ধারণার চেয়ে অনেক বেশি ৷

ওএনএস এর ধারণা ছিল, নিট মাইগ্রেশন হবে ছয় লাখ ছয় হাজার৷ কিন্তু শেষপর্যন্ত সংখ্যাটি এক লাখ ৩৯ হাজার বেড়ে উন্নীত হয়েছে সাত লাখ ৪৫ হাজারে৷ এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে নিট মাইগ্রেশন ছিল চার লাখ ৮৮ হাজার ৷

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »