বেইজিংয়ে পুতিনের সাথে অরবানের সাক্ষাৎ ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক

আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা সত্ত্বেও চীনের বেইজিংয়ে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী অরবান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করেছেন

ইউরোপ ডেস্কঃ মঙ্গলবার(১৭ অক্টোবর) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান – এর দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে। অরবানের নীতিগুলি সম্প্রতি ইইউতে রাশিয়া-বান্ধব হিসাবে দেখা হচ্ছিল। তারই মধ্যে আজ সরাসরি বৈঠকে সেটা আরও স্পষ্ট হল।

ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞাগুলিকে হাঙ্গেরির প্রত্যাখানের পর থেকে, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের নীতিগুলি রাশিয়া-বান্ধব বলে বিবেচিত হয়েছে – যা তাকে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে ফেলেছে। অরবান ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই রুশ আগ্রাসী এবং আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত রুশ প্রেসিডেন্টের সাথে ব্যক্তিগত মত বিনিময়ের জন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

অরবানের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে হাঙ্গেরির সরকারি বার্তা সংস্থা এমটিআই জানায় উভয় রাজনীতিবিদ চীনা “নিউ সিল্ক রোড” অবকাঠামো প্রকল্পের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের জন্য পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

অরবান নিষেধাজ্ঞার অবসান চায়: হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের মুখপাত্র আরও বলেন,অরবান রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে কথোপকথনে শান্তির গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী অরবান জোর দিয়েছিলেন: “হাঙ্গেরি সহ সমগ্র ইউরোপ মহাদেশের জন্য এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যে শরণার্থীদের প্রবাহ বন্ধ করা, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইইউর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং সর্বোপরি দ্রুত ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করা।”

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনের যুদ্ধ সত্ত্বেও ইইউ এবং ন্যাটো সদস্য দেশ হাঙ্গেরি ক্রেমলিনের সাথে যোগাযোগ বজায় রেখেছে এবং দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে। তাছাড়াও অনিচ্ছা সত্ত্বেও একই সময়ে, হাঙ্গেরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধিকাংশ নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করেছিল।

রাষ্ট্রগুলো আসলে গ্রেফতার করতে বাধ্য: নেদারল্যান্ডসের হেগ-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিসি) গত মার্চে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এর অর্থ হল আইসিসি-এর সমস্ত সদস্য রাষ্ট্র পুতিনকে গ্রেফতার করতে বাধ্য যদি সে তাদের ভূখণ্ডে থাকে। হাঙ্গেরি ইতিমধ্যে ১৯৯৮ রোম সংবিধি অনুমোদন করেছে, যার ভিত্তিতে ২০০১ সালে আইসিসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যার অর্থ হল আদালত দেশটিকে একটি চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্র হিসাবে বিবেচনা করে।

রোম সংবিধির পাঠ্যটি পরবর্তীকালে হাঙ্গেরিতে আইন হিসাবে প্রবর্তনের উদ্দেশ্যে ছিল, কিন্তু এটি কখনই ঘটেনি। মার্চ মাসে, অরবানের চ্যান্সেলারি মন্ত্রী গারগেলি গুলিয়াস দাবি করেছিলেন যে ঘোষণার অভাবের কারণে হাঙ্গেরিতে পুতিনের সম্ভাব্য গ্রেফতারের “কোন আইনি ভিত্তি” নেই।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »