ভিয়েনা ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের সঙ্গে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ ডেঙ্গুেত আরও ৪ জনের প্রাণহানি হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোনও সময়সীমা নেই – ট্রাম্প জার্মানিতে শরণার্থীদের অনেকেই এখনও দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে আছে মঙ্গলবার অস্ট্রিয়া সফরে আসছেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট স্টাইনমায়ার ওমানে দুর্ঘটনায় নিহত ৮ প্রবাসীর লাশ ফিরল দেশে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী, সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না: ইসি আনোয়ারুল তজুমদ্দিনে আগুনে পুড়লো ১৯ মাছের আড়ৎ

জামায়াত পরিবারের সন্তান উপজেলা আ.লীগের সভাপতি প্রার্থী

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৪:৩৭:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ মে ২০২৩
  • ১৫ সময় দেখুন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের  শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের আবারও শীর্ষ পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন জামায়াত পরিবারের সন্তান ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বিশ্বাস। এ নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত পূর্বক পারিবারিক ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ও ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের পদ-পদবী দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মতিয়ার রহমানের আপন চাচাতো ভাই কলিমুল্লাহ শৈলকুপা ডিগ্রী কলেজ শাখা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারী ছিলেন। আরেক ভাই রুহুল আমিন ইউনিয়ন জামায়াতের নেতা। আশির দশকে তাদের হাত ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় হন মতিয়ার। ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর দাঁড়ি পাল্লা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলামের সাথে নির্বাচন করেন। ১৯৯০ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর প্রার্থী মোমবাতি প্রতীকের এ্যাডভোকেট তৈয়বুর রহমানের পক্ষে ভোট করেন মতিয়ার। নব্বই দশকের শেষ দিকে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের হাত ধরে কৌশলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসেন তিনি। ১৯৯৭ সালের ইউপি নির্বাচনে জামায়াত বিএনপির ভোটে  ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মতিয়ার ।

সেই থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। জড়িয়ে পড়েন একের পর এক অনিয়ম দুর্নীতিতে। এরপর জামায়াত নেতা কলিমুল্লাহ ও রুহুলকে সাথে নিয়ে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রবীন নেতাদের মারধোর করে পঙ্গু করেছেন। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে নান্নু এবং ইউনিয়নের ধাওড়া গ্রামের মহসিন শিকদার এবং বিভিন্ন এলাকার খবির মেম্বার, জাকির হোসেন ও সাইফুল ইসলামসহ শতাধিক ব্যক্তির বাড়ি ঘর ছাড়া করেছেন। তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে জমি দখল ও সরকারি গাছপালা বিক্রি করে নিয়েছেন।

মতিয়ার পুত্র দিনার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ পাওয়ার পর থেকে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির হার আরো বেড়ে যায় ওই এলাকায়। শুরু করেন বিভিন্ন কাজের টেন্ডারবাজি,হাট-বাজার ইজারা,ইউনিয়ন পরিষদের টিআর,কাবিখার  প্রকল্পের দুর্নীতি ও বিভিন্ন প্রকার ভাতার কার্ডে অনিয়ম এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের  পারিবারিক  ভাবে সভাপতির পদ দখল করে নিয়োগ বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে মতিয়ার নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে ভোট করেন এবং তার ইউনিয়নে নৌকা  প্রতিকের পক্ষে কোন পোলিং এজেন্ট দিতে দেওয়া হয়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মার্কা আনারস প্রতিকে জোরপূর্বক ভোট কেটে নেওয়ার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে। তার পুত্র দিনার নিজ দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে হিন্দুদের প্রতিমা ভেঙ্গে পুলিশকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। বিষয়টি নিয়ে দেশ-বিদেশী গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়। ইউনিয়নের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ  প্রবীন আওয়ামীলীগের নেতা সকলেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে তার পরিবারের দ্বারা।

এ সকল বিষয় অস্বীকার করে মতিয়ার রহমান জানান, আমাদের বিরুদ্ধে  প্রতিপক্ষরা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটা করে  প্রতিপক্ষদের বেশি লাভ হবে না।

শৈলকুপার প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যাপক আবেদ আলী জানান,জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপির কারনেই এধরনের জামায়াত-বিএনপি নেতারা বিগত সময়ে দলীয় বড় পদ বাগিয়ে নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন। এদের হাত থেকে দলীয় নেতাকর্মরাও রেহাই পাচ্ছে না। তারাও নির্যাতন ও হত্যাকান্ডের স্বীকার হচ্ছে। এখনি যদি কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড শৈলকুপায় নজর না দেয় তাহলে ত্যাগী নেতাদের অবস্থা হবে আরো ভয়াবহ।

জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার জানান,আব্দুল হাই যখন যা মন চাই তখন তাই করেন। তার হাত ধরেই উথ্থান হয়েছে মতিয়ার রহমানের মতো নেতার। এরা ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করে এককছত্র ভাবে শৈলকুপা নিয়ন্ত্রন করছেন। পুনরায় এরা যদি পদ-পদবী পান তাহলে শৈলকুপা ত্রাসের রাজত্বে পরিণত হবে।

এ ব্যপারে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জানান,জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেন আব্দুল হাই। তিনি আবার শৈলকূপা আসনের এমপি। তার মনে যা চাই তিনি তাই করেন। নিজের বলয় ঠিক রাখতে তার পছন্দের ব্যক্তিকে পদ-পদবি দিয়ে থাকেন। তারা বিএনপি-জামায়াত করুক বা বাড়ির চাকর হোক সেটা তিনি বিবেচনা করেন না।যার ফলে শৈলকুপায় প্রকৃত আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত হচ্ছেন।

ঝিনাইদহ/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের সঙ্গে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

জামায়াত পরিবারের সন্তান উপজেলা আ.লীগের সভাপতি প্রার্থী

আপডেটের সময় ০৪:৩৭:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ মে ২০২৩

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের  শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের আবারও শীর্ষ পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন জামায়াত পরিবারের সন্তান ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বিশ্বাস। এ নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত পূর্বক পারিবারিক ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ও ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিদের পদ-পদবী দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মতিয়ার রহমানের আপন চাচাতো ভাই কলিমুল্লাহ শৈলকুপা ডিগ্রী কলেজ শাখা ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারী ছিলেন। আরেক ভাই রুহুল আমিন ইউনিয়ন জামায়াতের নেতা। আশির দশকে তাদের হাত ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় হন মতিয়ার। ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর দাঁড়ি পাল্লা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলামের সাথে নির্বাচন করেন। ১৯৯০ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াত ইসলামীর প্রার্থী মোমবাতি প্রতীকের এ্যাডভোকেট তৈয়বুর রহমানের পক্ষে ভোট করেন মতিয়ার। নব্বই দশকের শেষ দিকে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা ও ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের হাত ধরে কৌশলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসেন তিনি। ১৯৯৭ সালের ইউপি নির্বাচনে জামায়াত বিএনপির ভোটে  ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মতিয়ার ।

সেই থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। জড়িয়ে পড়েন একের পর এক অনিয়ম দুর্নীতিতে। এরপর জামায়াত নেতা কলিমুল্লাহ ও রুহুলকে সাথে নিয়ে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রবীন নেতাদের মারধোর করে পঙ্গু করেছেন। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে নান্নু এবং ইউনিয়নের ধাওড়া গ্রামের মহসিন শিকদার এবং বিভিন্ন এলাকার খবির মেম্বার, জাকির হোসেন ও সাইফুল ইসলামসহ শতাধিক ব্যক্তির বাড়ি ঘর ছাড়া করেছেন। তার নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে জমি দখল ও সরকারি গাছপালা বিক্রি করে নিয়েছেন।

মতিয়ার পুত্র দিনার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ পাওয়ার পর থেকে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির হার আরো বেড়ে যায় ওই এলাকায়। শুরু করেন বিভিন্ন কাজের টেন্ডারবাজি,হাট-বাজার ইজারা,ইউনিয়ন পরিষদের টিআর,কাবিখার  প্রকল্পের দুর্নীতি ও বিভিন্ন প্রকার ভাতার কার্ডে অনিয়ম এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের  পারিবারিক  ভাবে সভাপতির পদ দখল করে নিয়োগ বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে মতিয়ার নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে ভোট করেন এবং তার ইউনিয়নে নৌকা  প্রতিকের পক্ষে কোন পোলিং এজেন্ট দিতে দেওয়া হয়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মার্কা আনারস প্রতিকে জোরপূর্বক ভোট কেটে নেওয়ার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে। তার পুত্র দিনার নিজ দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে হিন্দুদের প্রতিমা ভেঙ্গে পুলিশকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল। বিষয়টি নিয়ে দেশ-বিদেশী গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়। ইউনিয়নের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ  প্রবীন আওয়ামীলীগের নেতা সকলেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে তার পরিবারের দ্বারা।

এ সকল বিষয় অস্বীকার করে মতিয়ার রহমান জানান, আমাদের বিরুদ্ধে  প্রতিপক্ষরা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটা করে  প্রতিপক্ষদের বেশি লাভ হবে না।

শৈলকুপার প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যাপক আবেদ আলী জানান,জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপির কারনেই এধরনের জামায়াত-বিএনপি নেতারা বিগত সময়ে দলীয় বড় পদ বাগিয়ে নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন। এদের হাত থেকে দলীয় নেতাকর্মরাও রেহাই পাচ্ছে না। তারাও নির্যাতন ও হত্যাকান্ডের স্বীকার হচ্ছে। এখনি যদি কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড শৈলকুপায় নজর না দেয় তাহলে ত্যাগী নেতাদের অবস্থা হবে আরো ভয়াবহ।

জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার জানান,আব্দুল হাই যখন যা মন চাই তখন তাই করেন। তার হাত ধরেই উথ্থান হয়েছে মতিয়ার রহমানের মতো নেতার। এরা ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করে এককছত্র ভাবে শৈলকুপা নিয়ন্ত্রন করছেন। পুনরায় এরা যদি পদ-পদবী পান তাহলে শৈলকুপা ত্রাসের রাজত্বে পরিণত হবে।

এ ব্যপারে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু জানান,জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেন আব্দুল হাই। তিনি আবার শৈলকূপা আসনের এমপি। তার মনে যা চাই তিনি তাই করেন। নিজের বলয় ঠিক রাখতে তার পছন্দের ব্যক্তিকে পদ-পদবি দিয়ে থাকেন। তারা বিএনপি-জামায়াত করুক বা বাড়ির চাকর হোক সেটা তিনি বিবেচনা করেন না।যার ফলে শৈলকুপায় প্রকৃত আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত হচ্ছেন।

ঝিনাইদহ/ইবিটাইমস