ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট; পিরোজপুর: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগে দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের ভাইয়ের ছেলে আ’লীগ থেকে এমপি মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসাবে মতবিনিময় করেছে।
রবিবার (১২জুন) দুপুরে মঠবাড়িয়া প্রেসক্লাবে ওই মত বিনিময় করলেন সাব্বির নায়হান পাশা নামের ওই মনোনয়ন প্রত্যাশী। সাব্বির নায়হান পাশা মঠবাড়িয়া উপজেলার আব্দুল মান্নান এর ছেলে এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের ভাতিজা এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার।তিনি একই দিন মিরুখালী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকদের সাথে মত বিনিময় করেন।
মঠবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান মিজু ওই মতবিনিময় সভার তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এ সময় মঠবাড়িয়ায় কর্তব্যরত অন্যান্য সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি নিজেকে আ’লীগ থেকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে প্রকাশ করেছেন।
এ সময় ওই মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক ওই নৌবাহিনীর কর্মকর্তা বলেন, শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তিনি একজন শেখ হাসিনার কর্মী হিসাবে আধুনিক মঠবাড়িয়া গড়তে নৌকা প্রতীক নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে জানতে তার ব্যাবহৃত মুঠোফোনে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার মঠবাড়িয়ায় পিস কমিটির
চেয়ারম্যান হয়ে বিশাল এক রাজাকার বাহিনী গড়ে তুলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট চালানোর অভিযোগে ২০১৪ সালে দায়ের হওয়া যুদ্ধাপরাধের মামলায় তিনি আমৃত্যু দণ্ডিত হন। ওই মামলা দায়েরের আগেই তিনি দেশ ছেড়ে আমেরিকায় পালিয়ে যান। দশ বছর ধরে তিনি আমেরিকায় পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের ১৮ আগস্ট সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ১৯৮৮ ও ১৯৮৬ সালে তিনি মঠবাড়িয়া থেকে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তাঁর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় মঠবাড়িয়ায় ৩৬ জন মুক্তিকামী মানুয়ের ওপর হামিলা চালিয়ে গণহত্যা, ২০০ জনকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা ও ৫৫৭টি
বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করাসহ ৫টি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম ঘোষিত ৫০ যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের নাম রয়েছে।
এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার শাহাদাৎ সাহাদাৎ হোসেন রাজা জানান, বুকের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করেছি। সেই দেশের স্বাধীনতার প্রধান নেতৃত্ব দেয়া আ’লীগ থেকে একজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর ভাইর ছেলে মনোনয় পাবে তা মেনে নেয়া যায় না।
এইচ এম লাহেল মাহমুদ/ইবিটাইমস