ভিয়েনা ১২:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধর্ষণ নিয়ে বিচারকের বক্তব্য বিব্রতকর: আইনমন্ত্রী

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৬:৩৮:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১
  • ১৪ সময় দেখুন

file picture

ঢাকা: ‘ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পরে ধর্ষণ মামলা নেওয়া যাবে না’, বিচারক কামরুন্নাহারের এমন বক্তব্য বিচারকদের জন্য বিব্রতকর বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। রবিবার (১৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, সঙবিধানের মৌলিক অধিকার খর্বের পাশাপাশি এটা একটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ভুল নির্দেশনা দেওয়া। সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেটাও সম্পূর্ণ আইনানুগভাবে কিন্তু এগিয়ে যাবে। আইনে তার যা সুবিধা, তাকে শোকজ করা হবে। তিনি কেন বলেছেন তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সেটা আইনিভাবে যে প্রক্রিয়া দেওয়া আছে, সেটাই তার ব্যাপারেও প্রযোজ্য।

আনিসুল হক বলেন, ‘‘কোনও ফৌজদারি অপরাধের মামলা করার ব্যাপারে তামাদি-বারিত হয় না (মানে ইট ইজ নট বার বাই লিমিটেশন)। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর ২১ বছর কোনও মামলা হয়নি। ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর এই মামলার প্রথম এফআইআর হয়। অথচ রেইনট্রি হোটেলে দুই নারীকে ধর্ষণ মামলার বিচারক বলেছেন, ‘ঘটনার ৭২ ঘণ্টার পরে মামলা নেওয়া যাবে না।’ তার এই বক্তব্যটি আইন এবং সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে দেওয়া মৌলিক অধিকার পরিপন্থী। ওই বিচারক আইন ও সংবিধান দুটোই ভায়োলেশন (লঙ্ঘন) করেছেন।’’

তিনি বলেন, ‘এই ভায়োলেশনের তাৎপর্যটা কী? অনেক রায় আছে যেগুলো হয়তো বেআইনি হয়, আপিল বিভাগে গিয়ে স্যাটেসাইড (খারিজ অর্থে) হয়। এখানে তিনি যে কথাটা বলেছেন, সেটার একটা অ্যাপ্লিকেশন আছে, একটা কনসিকিউয়েন্স আছে। এ কারণেই আজকে বিচার বিভাগের যিনি গার্ডিয়ান, যিনি প্রধান, তাকে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। ঠিক সে কারণেই আমি আইনমন্ত্রী হিসেবে গতকাল (শনিবার) বলেছিলাম— প্রধান বিচারপতির কাছে এ বিষয়ে চিঠি দেবো।’

আনিসুল হক বলেন, ‘এখন কথা হচ্ছে—এটা এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? বিজ্ঞ বিচারকরা প্রতিদিনই কিন্তু রায় দেন। রায়ে কেউ সন্তুষ্ট হন, কেউ অসন্তুষ্ট হন। যারা অসন্তুষ্ট হন, আমাদের ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী—সংবিধান অনুযায়ী তারা উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারেন। সর্বোচ্চ আদালত হচ্ছে আপিল বিভাগ। সেই আপিল বিভাগের সাংবিধানিক কিছু বাড়তি ক্ষমতাও আছে। সেগুলো তারা প্রয়োগ করে। রায় দিলেই যেকোনও বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা নয়। তারা মেরিটের ওপরে, আইনের ওপরে, রায় দেওয়ার ব্যাপারে সম্পূর্ণ স্বাধীন। কিন্তু এখানে যে ঘটনাটা ঘটেছে—সেটা হচ্ছে, একজন বিজ্ঞ বিচারক তিনি ওপেন কোর্টে রায় দেওয়ার সময়, তার পর্যবেক্ষণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছেন—৭২ ঘণ্টা পর কেউ যদি কোনও ধর্ষণ মামলা করতে আসে, তাহলে সেই মামলাটা গ্রহণ না করতে। এটাই হচ্ছে আপত্তির জায়গা।’

বিচারক কামরুন্নাহারের রায় দেওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি আইনমন্ত্রী।

ঢাকা/ইবিটাইমস/এমএইচ

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

ধর্ষণ নিয়ে বিচারকের বক্তব্য বিব্রতকর: আইনমন্ত্রী

আপডেটের সময় ০৬:৩৮:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১

ঢাকা: ‘ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পরে ধর্ষণ মামলা নেওয়া যাবে না’, বিচারক কামরুন্নাহারের এমন বক্তব্য বিচারকদের জন্য বিব্রতকর বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। রবিবার (১৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, সঙবিধানের মৌলিক অধিকার খর্বের পাশাপাশি এটা একটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ভুল নির্দেশনা দেওয়া। সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেটাও সম্পূর্ণ আইনানুগভাবে কিন্তু এগিয়ে যাবে। আইনে তার যা সুবিধা, তাকে শোকজ করা হবে। তিনি কেন বলেছেন তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সেটা আইনিভাবে যে প্রক্রিয়া দেওয়া আছে, সেটাই তার ব্যাপারেও প্রযোজ্য।

আনিসুল হক বলেন, ‘‘কোনও ফৌজদারি অপরাধের মামলা করার ব্যাপারে তামাদি-বারিত হয় না (মানে ইট ইজ নট বার বাই লিমিটেশন)। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর ২১ বছর কোনও মামলা হয়নি। ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর এই মামলার প্রথম এফআইআর হয়। অথচ রেইনট্রি হোটেলে দুই নারীকে ধর্ষণ মামলার বিচারক বলেছেন, ‘ঘটনার ৭২ ঘণ্টার পরে মামলা নেওয়া যাবে না।’ তার এই বক্তব্যটি আইন এবং সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে দেওয়া মৌলিক অধিকার পরিপন্থী। ওই বিচারক আইন ও সংবিধান দুটোই ভায়োলেশন (লঙ্ঘন) করেছেন।’’

তিনি বলেন, ‘এই ভায়োলেশনের তাৎপর্যটা কী? অনেক রায় আছে যেগুলো হয়তো বেআইনি হয়, আপিল বিভাগে গিয়ে স্যাটেসাইড (খারিজ অর্থে) হয়। এখানে তিনি যে কথাটা বলেছেন, সেটার একটা অ্যাপ্লিকেশন আছে, একটা কনসিকিউয়েন্স আছে। এ কারণেই আজকে বিচার বিভাগের যিনি গার্ডিয়ান, যিনি প্রধান, তাকে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। ঠিক সে কারণেই আমি আইনমন্ত্রী হিসেবে গতকাল (শনিবার) বলেছিলাম— প্রধান বিচারপতির কাছে এ বিষয়ে চিঠি দেবো।’

আনিসুল হক বলেন, ‘এখন কথা হচ্ছে—এটা এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? বিজ্ঞ বিচারকরা প্রতিদিনই কিন্তু রায় দেন। রায়ে কেউ সন্তুষ্ট হন, কেউ অসন্তুষ্ট হন। যারা অসন্তুষ্ট হন, আমাদের ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী—সংবিধান অনুযায়ী তারা উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারেন। সর্বোচ্চ আদালত হচ্ছে আপিল বিভাগ। সেই আপিল বিভাগের সাংবিধানিক কিছু বাড়তি ক্ষমতাও আছে। সেগুলো তারা প্রয়োগ করে। রায় দিলেই যেকোনও বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা নয়। তারা মেরিটের ওপরে, আইনের ওপরে, রায় দেওয়ার ব্যাপারে সম্পূর্ণ স্বাধীন। কিন্তু এখানে যে ঘটনাটা ঘটেছে—সেটা হচ্ছে, একজন বিজ্ঞ বিচারক তিনি ওপেন কোর্টে রায় দেওয়ার সময়, তার পর্যবেক্ষণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছেন—৭২ ঘণ্টা পর কেউ যদি কোনও ধর্ষণ মামলা করতে আসে, তাহলে সেই মামলাটা গ্রহণ না করতে। এটাই হচ্ছে আপত্তির জায়গা।’

বিচারক কামরুন্নাহারের রায় দেওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি আইনমন্ত্রী।

ঢাকা/ইবিটাইমস/এমএইচ