ভিয়েনা ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বৃটিশ আই এস বধূ শামীমা বেগমের অনুশোচনা

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৭:৪৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১১ সময় দেখুন

বর্তমানে সিরিয়ার এক শিবিরে আশ্রিতা শামীমা একটি ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেলে একটি সাক্ষাৎকার দেন

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেল আইটিভির ‘গুড মর্নিং ব্রিটেন’ অনুষ্ঠানে এক সাক্ষাৎকারে আইএস জঙ্গি বধূ হিসাবে খ্যাত শামীমা বেগম নিজেকে সন্ত্রাসের শিকার দাবি করে বলেন তিনি ক্ষমা চান এবং ব্রিটেনে ফিরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে চান। সিরিয়ায় শরণার্থী শিবির থেকে দেয়া এই সাক্ষাতকারে শামিমা বেগম বলেন খুব তরুণ বয়সে তিনি ভুল করেছেন আর তিনি জানতেন না যে আইএস জঙ্গিরা মৃত্যুকেই ধর্ম হিসেবে অনুসরণ করে।

এক সময়ে বোরকা পরে থাকলেও শামিমা এখন পশ্চিমা আধুনিক বেশভূষায় পুনরায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। নিয়মিত লিপস্টিক ও মেকআপও ব্যবহার করছে। চুল ডাই করছে ও নখে নেইলপলিশ ঝিলিক দিচ্ছে। মাথায় নাইক এবং এসব লোক দেখাতেও নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। ২০১৫ সালে দুই বন্ধুর সঙ্গে সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দিতে গেলেও শামিমা এখন তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পেতে লড়াই করছেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে ফিরে তিনি আদালতে যেতে চান এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের মোকাবিলা করতে চান। সিরিয়ার একটি আশ্রয় শিবিরে থাকা ২২ বছর বয়সী শামিমা ব্রিটেনে ফিরতে এবং নাগরিকত্ব টিকিয়ে রাখতে মামলার অনুমতি চেয়েছিলেন। তবে ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট তাকে সে অনুমতি দেয়নি।

আইটিভিকে শামিমা আরও বলেছেন, ‘আমি আদালতে যেতে চাই এবং যারা এই দাবিগুলো করছে তার মোকাবিলা করতে চাই এবং এগুলো মিথ্যা প্রমাণ করতে চাই। কারণ আমি জানি, আমি আইএস-এ কিছুই করিনি, শুধু মা ও স্ত্রী হওয়া ছাড়া। এই দাবিগুলো আমাকে খারাপ হিসেবে প্রতিপন্ন করতে করা হয়েছে। কারণ আমার ব্যাপারে সরকারের কাছে কোনো প্রমাণ নেই। কারণ কিছুই ঘটেনি।’

ব্রিটেনের জনগণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে তিনি বলেন, ‘আমি জানি ব্রিটিশদের জন্য আমাকে ক্ষমার চেষ্টা বা ক্ষমা করা কঠিন। তারা অনেকেই আইএস-এর হাতে প্রিয়জন হারিয়েছেন। কিন্তু আমি নিজেও আইএস-এর ভয়ে দিন কাটিয়েছি, প্রিয়জন হারিয়েছি। এ কারণে আমি তাদের দিকটা বুঝতে পারছি।

তার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার বলে আসছে, শামিমা জন্মগতভাবে বাংলাদেশি নাগরিক এবং সে সেখানে চলে যেতে পারে৷ এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে আবেদন করেন শামিমা৷ তিনি অন্য কোনো দেশের নাগরিক নন এবং সরকারের সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন বলে আদালতকে অবহিত করেন তার আইনজীবী৷

শামিমা বলেন কেউ আমাকে ততটা ঘৃণা করতে পারেন না যতটা না আমি আমাকেই করি কারণ জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দিয়ে আমি অনুতপ্ত ও ক্ষমা চাচ্ছি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উদ্দেশে শামিমা বলেন আপনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন এবং সে যুদ্ধে এখন আমিও যোগ দিতে চাই। কারণ আপনি জানেন না তাদের সন্ত্রাসের ধরণ আসলে কি ধরণের।

তিনি কেন বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ব্রিটেন হচ্ছে সেই দেশ যেখানে মৃত্যুদণ্ড নেই। তাই এমন কোনো দেশে ফিরতে পারি না যেখানে আমার জীবন হুমকির মুখে পড়বে। তিনি ব্রিটেনের নাগরিকদের তাকে হুমকি হিসেবে না দেখে বরং সম্পদ হিসেবে দেখার আবেদন জানান।

কবির আহমেদ/ ইবিটাইমস

Tag :
জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বৃটিশ আই এস বধূ শামীমা বেগমের অনুশোচনা

আপডেটের সময় ০৭:৪৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

বর্তমানে সিরিয়ার এক শিবিরে আশ্রিতা শামীমা একটি ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেলে একটি সাক্ষাৎকার দেন

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেল আইটিভির ‘গুড মর্নিং ব্রিটেন’ অনুষ্ঠানে এক সাক্ষাৎকারে আইএস জঙ্গি বধূ হিসাবে খ্যাত শামীমা বেগম নিজেকে সন্ত্রাসের শিকার দাবি করে বলেন তিনি ক্ষমা চান এবং ব্রিটেনে ফিরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে চান। সিরিয়ায় শরণার্থী শিবির থেকে দেয়া এই সাক্ষাতকারে শামিমা বেগম বলেন খুব তরুণ বয়সে তিনি ভুল করেছেন আর তিনি জানতেন না যে আইএস জঙ্গিরা মৃত্যুকেই ধর্ম হিসেবে অনুসরণ করে।

এক সময়ে বোরকা পরে থাকলেও শামিমা এখন পশ্চিমা আধুনিক বেশভূষায় পুনরায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। নিয়মিত লিপস্টিক ও মেকআপও ব্যবহার করছে। চুল ডাই করছে ও নখে নেইলপলিশ ঝিলিক দিচ্ছে। মাথায় নাইক এবং এসব লোক দেখাতেও নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। ২০১৫ সালে দুই বন্ধুর সঙ্গে সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দিতে গেলেও শামিমা এখন তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পেতে লড়াই করছেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে ফিরে তিনি আদালতে যেতে চান এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের মোকাবিলা করতে চান। সিরিয়ার একটি আশ্রয় শিবিরে থাকা ২২ বছর বয়সী শামিমা ব্রিটেনে ফিরতে এবং নাগরিকত্ব টিকিয়ে রাখতে মামলার অনুমতি চেয়েছিলেন। তবে ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট তাকে সে অনুমতি দেয়নি।

আইটিভিকে শামিমা আরও বলেছেন, ‘আমি আদালতে যেতে চাই এবং যারা এই দাবিগুলো করছে তার মোকাবিলা করতে চাই এবং এগুলো মিথ্যা প্রমাণ করতে চাই। কারণ আমি জানি, আমি আইএস-এ কিছুই করিনি, শুধু মা ও স্ত্রী হওয়া ছাড়া। এই দাবিগুলো আমাকে খারাপ হিসেবে প্রতিপন্ন করতে করা হয়েছে। কারণ আমার ব্যাপারে সরকারের কাছে কোনো প্রমাণ নেই। কারণ কিছুই ঘটেনি।’

ব্রিটেনের জনগণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে তিনি বলেন, ‘আমি জানি ব্রিটিশদের জন্য আমাকে ক্ষমার চেষ্টা বা ক্ষমা করা কঠিন। তারা অনেকেই আইএস-এর হাতে প্রিয়জন হারিয়েছেন। কিন্তু আমি নিজেও আইএস-এর ভয়ে দিন কাটিয়েছি, প্রিয়জন হারিয়েছি। এ কারণে আমি তাদের দিকটা বুঝতে পারছি।

তার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার বলে আসছে, শামিমা জন্মগতভাবে বাংলাদেশি নাগরিক এবং সে সেখানে চলে যেতে পারে৷ এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে আবেদন করেন শামিমা৷ তিনি অন্য কোনো দেশের নাগরিক নন এবং সরকারের সিদ্ধান্তে রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন বলে আদালতকে অবহিত করেন তার আইনজীবী৷

শামিমা বলেন কেউ আমাকে ততটা ঘৃণা করতে পারেন না যতটা না আমি আমাকেই করি কারণ জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দিয়ে আমি অনুতপ্ত ও ক্ষমা চাচ্ছি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উদ্দেশে শামিমা বলেন আপনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন এবং সে যুদ্ধে এখন আমিও যোগ দিতে চাই। কারণ আপনি জানেন না তাদের সন্ত্রাসের ধরণ আসলে কি ধরণের।

তিনি কেন বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ব্রিটেন হচ্ছে সেই দেশ যেখানে মৃত্যুদণ্ড নেই। তাই এমন কোনো দেশে ফিরতে পারি না যেখানে আমার জীবন হুমকির মুখে পড়বে। তিনি ব্রিটেনের নাগরিকদের তাকে হুমকি হিসেবে না দেখে বরং সম্পদ হিসেবে দেখার আবেদন জানান।

কবির আহমেদ/ ইবিটাইমস