ভিয়েনা ০৯:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইংল্যান্ডের চলমান বিধিনিষেধের শিথিলতার ঘোষণা বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৩:৩৫:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুলাই ২০২১
  • ১৬ সময় দেখুন

ইউরোপ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আগামী ১৯ জুলাই থেকে ইংল্যান্ডের প্রায় সকল বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করার কথা জানিয়েছেন।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সহ বৃটেনের সমস্ত শীর্ষ স্থানীয়  সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন, গতকাল ৫ জুলাই সোমবার করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে মাস্ক পড়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্পর্কে ইংল্যান্ডে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিলো তা চলতি মাসের শেষের দিকে তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে  প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ১০ নাম্বার ডাইনিং স্ট্রিটে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আগামী ১৯ জুলাই থেকে মাস্ক পড়া, এক মিটারের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা আর ঘরে বসে অফিস করার নিয়ম শিথিল করা হবে। এই সময় নিজেদের বিচার-বিবেচনা ব্যবহার করে জনগণকে করোনা পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলার আহবান জানান তিনি।

করোনার ভ্যাকসিন বা টিকাদানের কার্যক্রমের সফলতার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশ সহ বিশ্ব থেকে করোনা মহামারী এখনও চলে যায় নি বা শেষ হয় নি। বরঞ্চ সামনের আগত সময়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়ে সতর্ক করেছেন দেশের শীর্ষ সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞরা।

করোনার বিভিন্ন বিধিনিষেধ শিথিল করে মানুষকে আবার স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরিয়ে আনতে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছিলো ব্রিটিশ সরকার। গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ রোডম্যাপের চতুর্থ ধাপে প্রবেশ করার কথা থাকলেও সংক্রমণ বাড়ার কারণে তা পিছিয়ে ১৯ জুলাই করা হয়।

এসব বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে করোনায় শনাক্তের হার বেড়ে যেতে পারে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে। তবে, মন্ত্রীদের মধ্যে অনেকের বিশ্বাস, টিকা দেওয়ার ফলে মৃত্যুবরণের সংখ্যা অনেকটাই কমে আসতে শুরু করবে। বর্তমানে রেস্তোরাঁ এবং থিয়েটার ও সিনেমা হলের মতো বদ্ধ জায়গায় ৬ জনের বেশী একসাথে জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পাশাপাশি, বাড়িতে বসে অফিস করার নিয়মও চালু রয়েছে। তবে, ১৯ জুলাই থেকে এসব নিয়ম উঠে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

বৃটেনের দৈনিক মিরর জানিয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর এই শিথিলতার ঘোষণার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন ব্রিটিশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ড. চান্দ নাগপাল। তিনি বলেন, ডেল্টা ধরনের সংক্রমণ যখন বেড়ে যাচ্ছে তখন এমন সময়ে বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পড়া বন্ধ করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

পত্রিকাটি আরও জানায়, কেহ করোনায় শনাক্ত হলে আইসোলেশনে থাকা, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার নিয়ম বলবৎ থাকবে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার ফলে ১৯ জুলাই থেকে ইংল্যান্ডে মাস্ক পড়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নিয়ম কানুন আর বাধ্যতামূলক থাকছে না। এর ফলে করোনার নতুন প্রাদুর্ভাবে আরোপিত  সকল বিধিনিষেধের সমস্ত আইনী প্রয়োজনীয়তাগুলিও বাতিল হয়ে যাবে – এবং নাইটক্লাবগুলি এবং জনাকীর্ণ ইভেন্টগুলিতে প্রবেশের সময় কোভিডের অবস্থানের প্রমাণ ছাড়াই খোলার অনুমতি দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার বক্তব্যে নিশ্চিত করেছেন যে, ইংল্যান্ড তার পরিকল্পিত রোডম্যাপের ৪ র্থ ধাপে চলে এসেছে। ফলে করোনা মহামারী শেষ না হলেও আগামি ১৯ জুলাই থেকে করোনার বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের  চূড়ান্ত পর্বে যেতে হবে। ১০ নাম্বার ডাউনিং স্ট্রিটের এই সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে বলেন “আমরা যদি সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের সমাজকে আবার খুলতে না পারি, যখন গ্রীষ্মের আগমনের সময় এবং স্কুলের ছুটিতে আমাদের সহায়তা দেওয়া হবে, আমাদের অবশ্যই জিজ্ঞাসা করতে হবে  আমরা – আমরা কখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাব? ”

তিনি আরও বলেন, ভাইরাস থেকে এই রোগের ঝুঁকি এবং আইনী নিষেধাজ্ঞাগুলি অব্যাহত রাখার ক্ষতির ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে যা “অনিবার্যভাবে মানুষের জীবন ও জীবিকা, মানুষের স্বাস্থ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য ইত্যাদি তাদের আরও ক্ষতিগ্রস্থ করে তোলে”।

তিনি আরও যোগ করে বলেন,”এবং আমাদের অবশ্যই নিজের সাথে সংযত থাকতে হবে, আমরা যদি সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের সমাজ পুনরায় চালু করতে না পারি তাহলে অর্থনৈতিক ভাবে আরও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়বো। যখন গ্রীষ্মের আগমনে এবং স্কুলের ছুটির দিনে আমাদের সাহায্য করা হবে, তখন আমাদের অবশ্যই নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে।

বৃটিশ সরকারের এই পদক্ষেপের অর্থ হ’ল মুখোশ পরা সমস্ত আইনী প্রয়োজনীয়তা বাদ দেওয়া হবে – হাসপাতাল, কেয়ার হোমস এবং শপিংসহ বাস, ট্রেন এবং বিমানগুলিতেও। তাছাড়াও বয়স্ক মানুষেরও নার্সিংহোম গুলিতে দর্শনার্থীদের বিভিন্ন বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

কবির আহমেদ /ইবিটাইমস

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

ইংল্যান্ডের চলমান বিধিনিষেধের শিথিলতার ঘোষণা বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর

আপডেটের সময় ০৩:৩৫:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ জুলাই ২০২১

ইউরোপ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আগামী ১৯ জুলাই থেকে ইংল্যান্ডের প্রায় সকল বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করার কথা জানিয়েছেন।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সহ বৃটেনের সমস্ত শীর্ষ স্থানীয়  সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন, গতকাল ৫ জুলাই সোমবার করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে মাস্ক পড়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্পর্কে ইংল্যান্ডে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিলো তা চলতি মাসের শেষের দিকে তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে  প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ১০ নাম্বার ডাইনিং স্ট্রিটে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আগামী ১৯ জুলাই থেকে মাস্ক পড়া, এক মিটারের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা আর ঘরে বসে অফিস করার নিয়ম শিথিল করা হবে। এই সময় নিজেদের বিচার-বিবেচনা ব্যবহার করে জনগণকে করোনা পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলার আহবান জানান তিনি।

করোনার ভ্যাকসিন বা টিকাদানের কার্যক্রমের সফলতার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশ সহ বিশ্ব থেকে করোনা মহামারী এখনও চলে যায় নি বা শেষ হয় নি। বরঞ্চ সামনের আগত সময়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আরও বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়ে সতর্ক করেছেন দেশের শীর্ষ সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞরা।

করোনার বিভিন্ন বিধিনিষেধ শিথিল করে মানুষকে আবার স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরিয়ে আনতে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছিলো ব্রিটিশ সরকার। গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ রোডম্যাপের চতুর্থ ধাপে প্রবেশ করার কথা থাকলেও সংক্রমণ বাড়ার কারণে তা পিছিয়ে ১৯ জুলাই করা হয়।

এসব বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে করোনায় শনাক্তের হার বেড়ে যেতে পারে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে। তবে, মন্ত্রীদের মধ্যে অনেকের বিশ্বাস, টিকা দেওয়ার ফলে মৃত্যুবরণের সংখ্যা অনেকটাই কমে আসতে শুরু করবে। বর্তমানে রেস্তোরাঁ এবং থিয়েটার ও সিনেমা হলের মতো বদ্ধ জায়গায় ৬ জনের বেশী একসাথে জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। পাশাপাশি, বাড়িতে বসে অফিস করার নিয়মও চালু রয়েছে। তবে, ১৯ জুলাই থেকে এসব নিয়ম উঠে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

বৃটেনের দৈনিক মিরর জানিয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর এই শিথিলতার ঘোষণার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন ব্রিটিশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ড. চান্দ নাগপাল। তিনি বলেন, ডেল্টা ধরনের সংক্রমণ যখন বেড়ে যাচ্ছে তখন এমন সময়ে বদ্ধ জায়গায় মাস্ক পড়া বন্ধ করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

পত্রিকাটি আরও জানায়, কেহ করোনায় শনাক্ত হলে আইসোলেশনে থাকা, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার নিয়ম বলবৎ থাকবে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার ফলে ১৯ জুলাই থেকে ইংল্যান্ডে মাস্ক পড়া এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নিয়ম কানুন আর বাধ্যতামূলক থাকছে না। এর ফলে করোনার নতুন প্রাদুর্ভাবে আরোপিত  সকল বিধিনিষেধের সমস্ত আইনী প্রয়োজনীয়তাগুলিও বাতিল হয়ে যাবে – এবং নাইটক্লাবগুলি এবং জনাকীর্ণ ইভেন্টগুলিতে প্রবেশের সময় কোভিডের অবস্থানের প্রমাণ ছাড়াই খোলার অনুমতি দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার বক্তব্যে নিশ্চিত করেছেন যে, ইংল্যান্ড তার পরিকল্পিত রোডম্যাপের ৪ র্থ ধাপে চলে এসেছে। ফলে করোনা মহামারী শেষ না হলেও আগামি ১৯ জুলাই থেকে করোনার বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের  চূড়ান্ত পর্বে যেতে হবে। ১০ নাম্বার ডাউনিং স্ট্রিটের এই সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে বলেন “আমরা যদি সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের সমাজকে আবার খুলতে না পারি, যখন গ্রীষ্মের আগমনের সময় এবং স্কুলের ছুটিতে আমাদের সহায়তা দেওয়া হবে, আমাদের অবশ্যই জিজ্ঞাসা করতে হবে  আমরা – আমরা কখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাব? ”

তিনি আরও বলেন, ভাইরাস থেকে এই রোগের ঝুঁকি এবং আইনী নিষেধাজ্ঞাগুলি অব্যাহত রাখার ক্ষতির ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে যা “অনিবার্যভাবে মানুষের জীবন ও জীবিকা, মানুষের স্বাস্থ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্য ইত্যাদি তাদের আরও ক্ষতিগ্রস্থ করে তোলে”।

তিনি আরও যোগ করে বলেন,”এবং আমাদের অবশ্যই নিজের সাথে সংযত থাকতে হবে, আমরা যদি সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের সমাজ পুনরায় চালু করতে না পারি তাহলে অর্থনৈতিক ভাবে আরও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়বো। যখন গ্রীষ্মের আগমনে এবং স্কুলের ছুটির দিনে আমাদের সাহায্য করা হবে, তখন আমাদের অবশ্যই নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে হবে।

বৃটিশ সরকারের এই পদক্ষেপের অর্থ হ’ল মুখোশ পরা সমস্ত আইনী প্রয়োজনীয়তা বাদ দেওয়া হবে – হাসপাতাল, কেয়ার হোমস এবং শপিংসহ বাস, ট্রেন এবং বিমানগুলিতেও। তাছাড়াও বয়স্ক মানুষেরও নার্সিংহোম গুলিতে দর্শনার্থীদের বিভিন্ন বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

কবির আহমেদ /ইবিটাইমস