ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুডল্ফ আনস্কোবার আজ বৃহস্পতিবার ৪ ফেব্রুয়ারী এক সাংবাদিক সম্মেলন বলেন,অস্ট্রিয়ার Tirol রাজ্যের করোনার সংক্রমণ বর্তমানে বেশ গুরুতর। এই রাজ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বৃটেনের মিউটেশন ভাইরাস ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি আগামী রবিবার Tirol রাজ্যের করোনার ভবিষ্যত সম্পর্কে সরকারের সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্যের মেডিকেল ইউনিভার্সিটি ইন্সব্রুকের ভাইরোলজিস্ট ডরোথি ভন লায়ার Tirol রাজ্যকে কমপক্ষে এক মাসের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন ও সমগ্র দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি সরকারের উপদেষ্টার সাথে এক বৈঠকে এই পরামর্শ দেন। বর্তমানে অস্ট্রিয়ান স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ের একটি বিশেষজ্ঞ দল এই রাজ্যে করোনার মিউটেশন বা পরিবর্তিত ভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার বা গতিবিধি নিয়ে গবেষণা করছেন। ভাইরোলজিস্ট ডরোথি রাজ্য প্রশাসনের করোনার বিধিনিষেধের শিথিলতার ব্যাপক সমালোচনা করেন। তিনি সতর্ক করে বলেন,এখনই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা না হলে Tirol রাজ্য খুব দ্রুত “দ্বিতীয় ইস্কগল” হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
উল্লেখ্য অস্ট্রিয়ার আল্পস পর্বতাঞ্চলের Tirol রাজ্যের এই ইস্কগল উপত্যকাটিতে করোনার প্রথম প্রাদুর্ভাবের সময় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। বর্তমানে এই রাজ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার মিউটেশন ভাইরাসে ৭৫ জন এবং বৃটেনের মিউটেশন ভাইরাসে আক্রান্ত ২১ জন সনাক্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুডল্ফ আনস্কোবার বলেন,পরিস্থিতি যেহেতু”গুরুতর”তাই পরিস্থিতিটি নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করার জন্য একটি “অত্যন্ত কঠোর পাঁচ দফা কর্মসূচি গঠন করা হয়েছে”। তিনি আরও জানান তবে পুরো রাজ্যকে কোয়ারেন্টাইন করা হবে তা অস্বীকার করা যায় না। সরকার বর্তমানে বিশেষজ্ঞদের সাথে সমস্ত বিকল্প পরীক্ষা করে দেখছে ।
সংবাদ সংস্থা এপিএ জানিয়েছে,সরকার এখন এই রাজ্যের জন্য কিছুটা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয় পরীক্ষা করছেন। বিশেষজ্ঞদের সাথে আরও আলোচনার পর সমগ্র রাজ্যকেও কোয়ারেন্টাইন ঘোষণা করা হতে পারে। তবে এপিএ আরও জানিয়েছেন,যে সরকারের বিশেষজ্ঞদের অনেকেই ভাইরোলজিস্ট ডরোথি ভন লায়ারের সাথে একমত পোষণ করছেন না। তারা জানান, সরকারের বিশেষজ্ঞরা সমগ্র রাজ্যকে কোয়ারান্টাইন না করে কোন বিকল্প উপায় খুঁজছেন বলে জানিয়েছেন।
রাজ্যের গভর্নর গুন্থার প্ল্যাটার গতকাল বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, এখন পর্যন্ত রাজ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বৃটেনের মিউটেশন ভাইরাসগুলির কোনও “ক্ষতিকারক স্প্রেড”শুরুর কোন সন্ধান পাওয়া যায় নি। তবে তিনি জানান রাজ্য সরকার ও ফেডারেল সরকার বিষয়টি জরুরী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পর্যবেক্ষণ করছেন। করোনার পিসিআর পরীক্ষা বৃদ্ধি সহ যোগাযোগের ট্র্যাকিং নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন,বিষয়টির ব্যাপারে “আমাদের সম্পূর্ণ মনোযোগ” অব্যাহত থাকবে।
অস্ট্রিয়ার Tirol রাজ্যে আজ নতুন করে সংক্রমিত সনাক্ত হয়েছেন ১২৫ জন। বর্তমানে এই রাজ্যে করোনার সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১,২৪০ জন। এই পর্যন্ত মোট ৫৪৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
কবির আহমেদ /ইবি টাইমস