ভিয়েনা ০৬:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রোমানিয়া-বুলগেরিয়ার যৌথ অভিযানে ৮ মানবপাচারকারী গ্রেপ্তার মাধবপুরে ইঞ্জিন বিকল, ৩ ঘন্টা পর কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন পুনরায় যাত্রা বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা অত্যন্ত সংকটময় সেতুসহ পাঁচ দাবিতে শাহবাগে ভোলাবাসীর অবস্থান পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে ৭০,৬৬০ প্রবাসীর নিবন্ধন বাউল শিল্পী আবুল সরকারের ফাঁসির দাবিতে লালমোহনে বিক্ষোভ লালমোহনে এসটিএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উদ্বোধন অস্ট্রিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে পর্তুগালের অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ জয়লাভ খাল–বিলহীন খিলগাতীতে সাড়ে ৯ কোটি টাকার ব্রিজ নির্মাণ, প্রশ্ন স্থানীয়দের প্লট বরাদ্দে জালিয়াতি মামলায় জয়ের ৫ বছরের কারাদণ্ড

পিঠার পাশাপাশি ভোলায় শীতে জমে উঠেছে জিলাপী ব্যবসা

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০১:০০:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০২১
  • ৬৩ সময় দেখুন

ভোলা : শীতকে সামনে রেখে ভোলার সকল গ্রাম-গঞ্জের ছোট-বড় হাট-বাজার গুলোতে এখন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত জিলাপী ব্যবসা জমজমাট। দেশের গ্রামাঞ্চলে শীতের তীব্রতা যতই বাড়ছে, ততই শীত তাড়াতে নানা পন্থা অবলম্বন করছেন মানুষ। গ্রামাঞ্চলের এক ব্যতিক্রমী গল্পের সঙ্গে হয়তো শহুরে মানুষের খুব একটা পরিচয় নেই। শীতে শরীরটা গরম রাখতে ভিন্ন রেওয়াজ কেবল গ্রামেই চোখে পড়ে বেশি। তেমনই একটি উপায় হচ্ছে, গ্রাম্যহাটের জিলাপি তৈরির কারিগরদের নিপুণ হাতে তৈরি জিলাপি খাওয়া।

শীতের শুরু থেকে শেষ নাগাদ গ্রামগঞ্জের হাটে জিলাপি ব্যবসায়ীদের ব্যবসাও চাঙা থাকে। ভ্রাম্যমাণ চুলা, বড় পাতিল, কাঠের মতো জ্বালানি সামগ্রী ভ্যান কিংবা রিকশাতে করে হাটবাজারে নিয়ে যান তারা। আড্ডারত বন্ধুরা বেশ মজা করেই একদিকে যেমন শীত দৌঁড়াতে জিলাপি খান, অন্যদিকে তাদের খিদের চাহিদাও মিটে যায়।

শীতকাল এলেই গ্রামের প্রতিটি হাটবাজারে, অলিতে-গলিতে এ ব্যবসার পসরা বসে। বিশেষ করে রাতের দিকে গ্রামের হাটবাজারগুলোতে ব্যাপক লোক সমাগম ঘটে। তখনি জমজমাট জিলাপির কেনাবেচা। হৈ-চৈ আর আনন্দ ভাগাভাগির মধ্য দিয়ে মানুষ প্রাণভরে খান এ মিষ্টিজাত খাদ্যটি। খুব কম মানুষই আছেন, যারা জিলাপির দিকে তাকালে জিভে পানি না আসবেনা। এমনই একটি বাস্তবচিত্র চোখে পড়েছে উপকূল বেষ্টিত জনপদ ভোলা সদর উপজেলার আলগীনগর পন্ডিল পোল বাজারে । এখানে সন্ধ্যার আঁধার নামার আগেই শুরু হয় জিলাপির হাট। কেউ নিজে খান,কেউ বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে খান,কেউবা আবার স্বজনদের জন্য পলিথিন ভর্তি করে বাড়ি নেন জিলাপি।

রুহিতা গ্রামের মোঃ কবির,সকলের প্রিয় মুখ। বয়স ঠিক ৪৫ এর কাছাকাছি। বেশ কয়েক বছরেই তিনি শীতকাল এলে গরম গরম জিলাপি তৈরি করে মানুষের মুখের তৃপ্তি মেটান। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শীতকালে তেমন কোনো কাজ-কাম নাই। এজন্য শীতের শুরু থেকেই এ কাজ করি। মোটামুটি সংসার চলে। প্রতি কেজি জিলাপি বিক্রি করি ৮০-১শ’ টাকা।’

চর ছিফলী গ্রামের মোঃ শাহীন,বয়স ৩০ গড়িয়েছে তার। তিনি জিলাপি তৈরির দক্ষ একজন কারিগর। শীত এলেই যেন তার ব্যস্ততা বেড়ে যায়। পুরো শীতজুড়ে বিক্রি করেন জিলাপি। আরেক জিলাপি বিক্রেতা মোঃ সুমন বলেন,‘যার চাহিদা যতটুকু, সেভাবেই মূলত আমি বিক্রি করি। মানুষের চাহিদা এমন যে অনেক সময় তাদেরকে সামলাতে বেশ হিমশিম খেতে হয়। জিলাপি বানাতে ময়দা, চিনি আর মিঠাই দরকার। বাজারে এ ধরনের মাল পাই বলে কাজ করতে একটু সুবিধা হয়।

শীতকালে জিলাপির ব্যাপক চাহিদা থাকার একমাত্র কারণ হচ্ছে, জিলাপি খেতে একদিকে যেমন মজা, ঠিক অন্যদিকে যারা খায় তাদের শরীরটা চাঙা হয়। বেশিরভাগ যুবক ও বয়স্ক শ্রেণীর লোকজন এ জিলাপির লোভ সামলাতে পারে না।’ অগ্রহায়ন, পৌষ ও মাঘ এ ৩মাস জিলাপি চলে হরদমে। যখন শীত পরিবর্তন  হয়ে গ্রীস্ম আসে গরমের পার্দুভাবে ক্রয়- বিক্রয় হ্রস পায়। এতে এ জিলাপির স্বাদ কমে যায়। তার সাথে থাকে শীতে মুড়ি দিয়ে বানানো মোয়ারও (মোলার) ও কদর থাকে। আমার এ সময় মোয়া জিলাপি বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একত্রিত হয়ে দাড়িয়ে গরম গরম রান্না খাই। জিলাপি তৈরী হয় শীত মৌসুমে।  একাধিক ব্যক্তিবর্গ শীতের আমেজে মুড়ী ও জিলাপি দিয়ে মজাকরে খেতে ভাল ও সু-স্বাধু হয়।

রুহিতা গ্রামের মোঃ বাহার বলেন, আমারা প্রতিদিন সন্ধ্যায় কড়া ভাজা করে জিলাপি পন্ডিত পোল বাজার থেকে আনা হয়। ৮/১০জনে একসাথে খেয়ে থাকি। রুবেল হোসেন নামের একজন জিলাপি খেয়ে তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘জিলাপি না খেলে শীতকেও উপভোগ করা যায় না। শীত যেন জিলাপি খাওয়ার জন্যই আসে। তাই জিলাপি না খেলে যেন আমরাও ভালো থাকি না। আমার বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে খুব মজা করেই জিলাপি খেয়েছি। তবে জিলাপি গরম গরম খেতে পারলে বেশি স্বাদ।

 

সাব্বির আলম বাবু/ইউবি টাইমস

Tag :
জনপ্রিয়

রোমানিয়া-বুলগেরিয়ার যৌথ অভিযানে ৮ মানবপাচারকারী গ্রেপ্তার

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

পিঠার পাশাপাশি ভোলায় শীতে জমে উঠেছে জিলাপী ব্যবসা

আপডেটের সময় ০১:০০:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০২১

ভোলা : শীতকে সামনে রেখে ভোলার সকল গ্রাম-গঞ্জের ছোট-বড় হাট-বাজার গুলোতে এখন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত জিলাপী ব্যবসা জমজমাট। দেশের গ্রামাঞ্চলে শীতের তীব্রতা যতই বাড়ছে, ততই শীত তাড়াতে নানা পন্থা অবলম্বন করছেন মানুষ। গ্রামাঞ্চলের এক ব্যতিক্রমী গল্পের সঙ্গে হয়তো শহুরে মানুষের খুব একটা পরিচয় নেই। শীতে শরীরটা গরম রাখতে ভিন্ন রেওয়াজ কেবল গ্রামেই চোখে পড়ে বেশি। তেমনই একটি উপায় হচ্ছে, গ্রাম্যহাটের জিলাপি তৈরির কারিগরদের নিপুণ হাতে তৈরি জিলাপি খাওয়া।

শীতের শুরু থেকে শেষ নাগাদ গ্রামগঞ্জের হাটে জিলাপি ব্যবসায়ীদের ব্যবসাও চাঙা থাকে। ভ্রাম্যমাণ চুলা, বড় পাতিল, কাঠের মতো জ্বালানি সামগ্রী ভ্যান কিংবা রিকশাতে করে হাটবাজারে নিয়ে যান তারা। আড্ডারত বন্ধুরা বেশ মজা করেই একদিকে যেমন শীত দৌঁড়াতে জিলাপি খান, অন্যদিকে তাদের খিদের চাহিদাও মিটে যায়।

শীতকাল এলেই গ্রামের প্রতিটি হাটবাজারে, অলিতে-গলিতে এ ব্যবসার পসরা বসে। বিশেষ করে রাতের দিকে গ্রামের হাটবাজারগুলোতে ব্যাপক লোক সমাগম ঘটে। তখনি জমজমাট জিলাপির কেনাবেচা। হৈ-চৈ আর আনন্দ ভাগাভাগির মধ্য দিয়ে মানুষ প্রাণভরে খান এ মিষ্টিজাত খাদ্যটি। খুব কম মানুষই আছেন, যারা জিলাপির দিকে তাকালে জিভে পানি না আসবেনা। এমনই একটি বাস্তবচিত্র চোখে পড়েছে উপকূল বেষ্টিত জনপদ ভোলা সদর উপজেলার আলগীনগর পন্ডিল পোল বাজারে । এখানে সন্ধ্যার আঁধার নামার আগেই শুরু হয় জিলাপির হাট। কেউ নিজে খান,কেউ বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে খান,কেউবা আবার স্বজনদের জন্য পলিথিন ভর্তি করে বাড়ি নেন জিলাপি।

রুহিতা গ্রামের মোঃ কবির,সকলের প্রিয় মুখ। বয়স ঠিক ৪৫ এর কাছাকাছি। বেশ কয়েক বছরেই তিনি শীতকাল এলে গরম গরম জিলাপি তৈরি করে মানুষের মুখের তৃপ্তি মেটান। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শীতকালে তেমন কোনো কাজ-কাম নাই। এজন্য শীতের শুরু থেকেই এ কাজ করি। মোটামুটি সংসার চলে। প্রতি কেজি জিলাপি বিক্রি করি ৮০-১শ’ টাকা।’

চর ছিফলী গ্রামের মোঃ শাহীন,বয়স ৩০ গড়িয়েছে তার। তিনি জিলাপি তৈরির দক্ষ একজন কারিগর। শীত এলেই যেন তার ব্যস্ততা বেড়ে যায়। পুরো শীতজুড়ে বিক্রি করেন জিলাপি। আরেক জিলাপি বিক্রেতা মোঃ সুমন বলেন,‘যার চাহিদা যতটুকু, সেভাবেই মূলত আমি বিক্রি করি। মানুষের চাহিদা এমন যে অনেক সময় তাদেরকে সামলাতে বেশ হিমশিম খেতে হয়। জিলাপি বানাতে ময়দা, চিনি আর মিঠাই দরকার। বাজারে এ ধরনের মাল পাই বলে কাজ করতে একটু সুবিধা হয়।

শীতকালে জিলাপির ব্যাপক চাহিদা থাকার একমাত্র কারণ হচ্ছে, জিলাপি খেতে একদিকে যেমন মজা, ঠিক অন্যদিকে যারা খায় তাদের শরীরটা চাঙা হয়। বেশিরভাগ যুবক ও বয়স্ক শ্রেণীর লোকজন এ জিলাপির লোভ সামলাতে পারে না।’ অগ্রহায়ন, পৌষ ও মাঘ এ ৩মাস জিলাপি চলে হরদমে। যখন শীত পরিবর্তন  হয়ে গ্রীস্ম আসে গরমের পার্দুভাবে ক্রয়- বিক্রয় হ্রস পায়। এতে এ জিলাপির স্বাদ কমে যায়। তার সাথে থাকে শীতে মুড়ি দিয়ে বানানো মোয়ারও (মোলার) ও কদর থাকে। আমার এ সময় মোয়া জিলাপি বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একত্রিত হয়ে দাড়িয়ে গরম গরম রান্না খাই। জিলাপি তৈরী হয় শীত মৌসুমে।  একাধিক ব্যক্তিবর্গ শীতের আমেজে মুড়ী ও জিলাপি দিয়ে মজাকরে খেতে ভাল ও সু-স্বাধু হয়।

রুহিতা গ্রামের মোঃ বাহার বলেন, আমারা প্রতিদিন সন্ধ্যায় কড়া ভাজা করে জিলাপি পন্ডিত পোল বাজার থেকে আনা হয়। ৮/১০জনে একসাথে খেয়ে থাকি। রুবেল হোসেন নামের একজন জিলাপি খেয়ে তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘জিলাপি না খেলে শীতকেও উপভোগ করা যায় না। শীত যেন জিলাপি খাওয়ার জন্যই আসে। তাই জিলাপি না খেলে যেন আমরাও ভালো থাকি না। আমার বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে খুব মজা করেই জিলাপি খেয়েছি। তবে জিলাপি গরম গরম খেতে পারলে বেশি স্বাদ।

 

সাব্বির আলম বাবু/ইউবি টাইমস