ভোলা দক্ষিণ প্রতিনিধি: ২৮ বছর বয়সী যুবক মো. হাসান। প্রায় ৪ বছর আগে পরিবারিকভাবে বিয়ে করেন তিনি। সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। বিয়ের বছরখানেকের মাথায় তাদের ঘর আলোকিত করে আসে এক কন্যা সন্তান। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে হাসিখুশি আর আনন্দে চলছিল তাদের সুখের সংসার। তবে প্রায় দুই বছর আগে যুবক হাসানের পায়ুপথে পাইলস দেখা দেয়। যার চিকিৎসা করাতে যান স্থানীয় এক কথিত চিকিৎসকের কাছে। ওই কথিত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে শিকার হন অপচিকিৎসার।
এরপর থেকে শুরু হয় হাসানের দুর্বিষহ জীবন। অপচিকিৎসায় তার পায়ুপথে ইনফেকশন দেখা দিলে বরিশাল, খুলনা ও ঢাকায় উন্নত চিকিৎসা করান। তবে এতেও কোনো কাজ হয়নি। উল্টো কষ্টে গড়া পুঁজির সব শেষ হয় যায় হাসানের। অসুস্থতার কারণে ও সংসারে অভাব-অনটন দেখা দেওয়ায় হাসানকে সন্তানসহ ছেড়ে যান তার স্ত্রী। যুবক হাসান ভোলার লালমোহন উপজেলার ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যমহেষখালী এলাকার মোস্তফা হাওলাদার বাড়ির আব্দুল মান্নানের ছেলে। হাসানের মা গত হয়ে গেছেন অনেক আগে, বাবা বেঁচে থাকলেও তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।
যুবক মো. হাসান জানান, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আমার সুখের সংসার ছিল। দুই বছর আগে আমার ঘরটি পাকা করার কাজ শুরু করি। ঘরের কাজ শুরু করার মধ্যে আমার পায়ুপথে পাইলসের সমস্যা দেখা দেয়। তখন স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে গেলে আমি অপচিকিৎসার শিকার হই। এরপর স্থানীয়দের মধ্যস্ততায় ওই কথিত চিকিৎসক কিছু টাকা জরিমানাও দেন। সুস্থ্য থাকতে আমি ট্রাক চালাতাম। ট্রাক চালিয়ে মাসে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা রোজগার করতাম। তখন সংসারে কোনো অভাব-অনটনও ছিল না। তবে অপচিকিৎসায় অসুস্থ হওয়ার পর বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (পিজি) চিকিৎসা নিই। এতে নিজের পুঁজি ও ধারদেনা করে প্রায় ৬ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো ভালো হতে পারিনি।
তিনি আরো জানান, সবশেষ বাংলাদেশ মেডিকেলের (পিজি) চিকিৎসকরা বলেছেন- আমার পায়ুপথের রগ পচে গেছে। যার জন্য এখন ঠিকমতো পায়খানা করতে পারি না। এজন্য অপারেশনের মাধ্যমে পায়ুপথে কৃত্রিম পাইপ স্থাপন করতে হবে। এই অপারেশনও দুই ভাগে করতে হবে। এজন্য অন্তত ৬ লাখ টাকার মতো প্রয়োজন। বর্তমানে আমি দুর্বিষহ যন্ত্রণার মধ্যদিয়ে দিন পার করছি। আমার এই চরম অসুস্থতার সময় আমাকে রেখে সন্তানকে নিয়ে চলে গেছেন স্ত্রীও। কারণ আমার এখন কোনো আয়-রোজগার নেই। আমি এখন চরম অসহায় হয়ে পড়েছি। আমি একটু সুন্দরভাবে বাঁচতে চাই। তাই আমার চিকিৎসা ব্যয় বহনের জন্য সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি ও সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা কামনা করছি। আমাকে সহযোগিতা করতে সবাইকে ০১৯০৭৪৫৫৫৩৬ এই নম্বরে যোগাযোগের বিনীত অনুরোধ করছি।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মাসুদ বলেন, ওই ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সমাজসেবা অধিদফতরের নিয়মানুযায়ী প্রয়োজনীয় সহযোগিতার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
জাহিদুল ইসলাম দুলাল/ইবিটাইমস




















