জাহিদ দুলাল, ভোলা দক্ষিণ : ভোলার লালমোহন উপজেলায় চলতি মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে আমন আবাদ করতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। পানিতে কৃষকের বীজতলা কয়েকবার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দেরি হচ্ছে আমন আবাদে। এতে করে খরচ বাড়ছে কৃষকদের। তবুও শেষ মুহূর্তে জমিতে ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর লালমোহনে ২৩ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমিতে উফশি জাতের বিআর-১১, বিআর-২৪, বিআর-৪৪, ব্রি ধান-৫২, ব্রি ধান-৭৬, ব্রি ধান-৮৭, ব্রি ধান- ১০৩ এবং বিনা ১৭ ও স্থানীয় জাতের লোতর এবং কালোজিরা ধান আবাদ করা হবে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির কারণে এবার আমান আবাদে দেরি হওয়ায় বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমোহন উপজেলার কৃষকরা। যদিও নিচু এলাকার জমিগুলোতে এখনো অনেক পানি রয়েছে। তবুও আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই উপজেলার কৃষকরা তাদের জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ শেষ করবেন।
লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বালুরচর এলাকার কৃষক মো. আমির হোসেন জানান, ১৫ বছর ধরে ধানের আবাদ করে আসছি। এ বছর ১৬০ শতাংশ জমিতে আমন ধান আবাদের জন্য প্রস্তুত করেছি। এসব জমিতে ধানের চারা রোপণও এখন শেষ পর্যায়ে। বৃষ্টির কারণে আমার বীজ তলার চারা কয়েকবার নষ্ট হয়ে গেছে। এতে আমার অন্তত ৫ হাজার টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। এরপর আবার বীজ বপন করে জমিতে নতুন চারা রোপণ করেছি। জমি লগ্নি, প্রস্তুত, শ্রমিক ও সারসহ ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে।
একই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালমা এলাকার মো. ছবির উদ্দিন বলেন, এ মৌসুমে ৮৮ শতাংশ জমিতে আমন আবাদ করেছি। মৌসুমের শুরু থেকেই এবার অনেক বৃষ্টি ছিল। যার জন্য বীজতলা এবং ধান আবাদের জমিতে প্রচুর পানি জমে ছিল। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছি। এর ফলে এই মৌসুমে আমন আবাদ করতে প্রায় ১ মাসের মতো দেরি হয়েছে। তবে সামনে যদি বৃষ্টি কম হয় তাহলে আশা করছি আর কোনো সমস্যা হবে না।
লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আবু হাসনাইন বলেন, এবারের আমন মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে কৃষকরা ধান আবাদ করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। অনেক কৃষকের বীজতলা বার বার নষ্ট হয়ে গেছে। তবুও এতে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে যেসব কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন আমরা তাদের সামনে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানের চেষ্টা করবো।
ঢাকা/ইবিটাইমস/এসএস