ভিয়েনা ১১:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অভিবাসন প্রত্যাশীদের আলবেনিয়ায় পাঠাবে ইতালি

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৭:৩৫:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩
  • ৭ সময় দেখুন

সাগরপথে চলে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটা সময় পর্যন্ত আলবেনিয়ায় রাখার ব্যবস্থা করতে চলেছে ইতালি সরকার৷ এ লক্ষ্যে আলবেনিয়ায় দুটি সাময়িক আশ্রয় শিবির নির্মাণের বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়ে গেছে

ইউরোপ ডেস্কঃ সোমবার (৬ অক্টোবর) ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি এ তথ্য জানান৷ মেলোনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন গত বছর৷ তার দল ব্রাদার্স অব ইতালির সবচেয়ে বড় নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি ছিল সরকার গঠন করার পর ইটালিতে অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করা৷ চরম ডানপন্থি দলের নেত্রী হিসেবে মেলোনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করছিলেন৷ তা সত্ত্বেও ভূমধ্যসাগর হয়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইতালিতে প্রবেশ হু হু করে বেড়েছে৷

২০২৩ সালের পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের তুলনায় অবৈধ পথে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইতালিতে প্রবেশের হার অনেক বেড়েছে৷ গত বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে যেখানে মোট ৮৮ হাজার অভিবাসনপত্যাশী ইতালিতে পা রেখেছিল, চলতি বছর একই সময়ে সেই সংখ্যাটা বেড়ে এক লাখ ৪৫ হাজার হয়েছে ৷

মেলোনি সরকার মনে করে, আলবেনিয়ায় দুটি অস্থায়ী আশ্রয় শিবির গড়ে সাগরপথে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সেখানে রেখে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো সম্ভব৷ সোমবার রোমে আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডি রামা এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি এমন আশ্রয় শিবির নির্মাণের বিষয়ে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সাক্ষর করেছেন।

চুক্তি সম্পাদনের পর মেলোনি জানান, ‘রিসিপশন সেন্টার’, অর্থাৎ অস্থায়ী আশ্রয় শিবির দুটি নির্মাণ করা হবে আলবেনিয়ার শেংজিন এবং জাদার অঞ্চলে ৷ নির্মাণের সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করবে ইটালি সরকার ৷

আশ্রয় শিবিরগুলোর নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের মধ্যেই শেষ করে প্রাথমিকভাবে সেখানে তিন হাজার অভিবাসনপত্যাশীকে রাখার পরিকল্পনা করছে সরকার৷ তবে প্রধানমন্ত্রী মেলোনি জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে ধারণক্ষমতা বাড়াতে বাড়াতে এক সময় বছরে ৩৬ হাজারের মতো অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সেখানে রাখা যাবে বলে তিনি আশা করেন ৷

আলবেনিয়াররিসিপশন সেন্টারেকে, কেন থাকবেন? আলবেনিয়ার শেংজিন এবং জাদার অঞ্চলে দুটি রিসিপশন সেন্টারে অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং অন্তঃসত্ত্বা নারী ছাড়া বাকি সব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে রাখা হবে৷ তবে কাউকেই দীর্ঘদিন রাখা হবে না ৷ অভিবাসনের আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে যাদের আবেদন গৃহীত হবে, তাদের নিয়ে যাওয়া হবে ইটালিতে আর যাদের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হবে, তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাবে আলবেনিয়া সরকার ৷

সোমবার আলবেনিয়ায় নির্মিতব্য অস্থায়ী আশ্রয় শিবির দুটোর সম্পর্কে আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানো হয়েছে, এক, আশ্রয় শিবির পরিচালিত হবে ইটালির আইনে, দুই, শিবিরের বাহ্যিক নিরাপত্তার যাবতীয় বিষয় দেখভাল করবে আলবেনিয়া ৷

নির্বাচনের আগে ইউরোপের বাইরে এমন অস্থায়ী আশ্রয় শিবির নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মেলোনির দল ব্রাদার্স অব ইতালি ৷ সরকার গঠনের পর উত্তর আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনাও করেছে মেলোনির সরকার ৷ কিন্তু সে অঞ্চলের কোনো দেশ এমন আশ্রয় শিবির নির্মাণে রাজি হয়নি ৷ আলবেনিয়া রাজি হয়ে চুক্তিও সাক্ষর করায় জর্জা মেলোনি খুব খুশি ৷

এতে তিনি ইউরোপের জন্য কল্যাণকর কিছু করার আনন্দ পাচ্ছেন- এমন ইঙ্গিত দিয়ে ইতালির প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ আমার বিবেচনায় এটা সত্যিকার অর্থেই একটি ইউরোপীয় চুক্তি ৷ অভিবাসীদের স্রোত-ব্যবস্থাপনার কাজ যে সবাই মিলে করা সম্ভব- এটি (চুক্তি) তা দেখিয়ে দিলো ৷”

ইতালির বিরোধী দলের সংসদ সদস্য আঞ্জেলো বনেলি তা মনে করেন না৷ তার মতে, ইটালি আর আলবেনিয়া সরকারের এ চুক্তি ‘‘কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লংঘন ৷”

তথ্যসূত্র: এএফপি, এপি, রয়টার্স ও ইনফোমাইগ্র্যান্টস

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

অভিবাসন প্রত্যাশীদের আলবেনিয়ায় পাঠাবে ইতালি

আপডেটের সময় ০৭:৩৫:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ নভেম্বর ২০২৩

সাগরপথে চলে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের একটা সময় পর্যন্ত আলবেনিয়ায় রাখার ব্যবস্থা করতে চলেছে ইতালি সরকার৷ এ লক্ষ্যে আলবেনিয়ায় দুটি সাময়িক আশ্রয় শিবির নির্মাণের বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়ে গেছে

ইউরোপ ডেস্কঃ সোমবার (৬ অক্টোবর) ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি এ তথ্য জানান৷ মেলোনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন গত বছর৷ তার দল ব্রাদার্স অব ইতালির সবচেয়ে বড় নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি ছিল সরকার গঠন করার পর ইটালিতে অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করা৷ চরম ডানপন্থি দলের নেত্রী হিসেবে মেলোনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করছিলেন৷ তা সত্ত্বেও ভূমধ্যসাগর হয়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইতালিতে প্রবেশ হু হু করে বেড়েছে৷

২০২৩ সালের পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের তুলনায় অবৈধ পথে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইতালিতে প্রবেশের হার অনেক বেড়েছে৷ গত বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে যেখানে মোট ৮৮ হাজার অভিবাসনপত্যাশী ইতালিতে পা রেখেছিল, চলতি বছর একই সময়ে সেই সংখ্যাটা বেড়ে এক লাখ ৪৫ হাজার হয়েছে ৷

মেলোনি সরকার মনে করে, আলবেনিয়ায় দুটি অস্থায়ী আশ্রয় শিবির গড়ে সাগরপথে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সেখানে রেখে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো সম্ভব৷ সোমবার রোমে আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডি রামা এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি এমন আশ্রয় শিবির নির্মাণের বিষয়ে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সাক্ষর করেছেন।

চুক্তি সম্পাদনের পর মেলোনি জানান, ‘রিসিপশন সেন্টার’, অর্থাৎ অস্থায়ী আশ্রয় শিবির দুটি নির্মাণ করা হবে আলবেনিয়ার শেংজিন এবং জাদার অঞ্চলে ৷ নির্মাণের সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করবে ইটালি সরকার ৷

আশ্রয় শিবিরগুলোর নির্মাণকাজ ২০২৪ সালের মধ্যেই শেষ করে প্রাথমিকভাবে সেখানে তিন হাজার অভিবাসনপত্যাশীকে রাখার পরিকল্পনা করছে সরকার৷ তবে প্রধানমন্ত্রী মেলোনি জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে ধারণক্ষমতা বাড়াতে বাড়াতে এক সময় বছরে ৩৬ হাজারের মতো অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সেখানে রাখা যাবে বলে তিনি আশা করেন ৷

আলবেনিয়াররিসিপশন সেন্টারেকে, কেন থাকবেন? আলবেনিয়ার শেংজিন এবং জাদার অঞ্চলে দুটি রিসিপশন সেন্টারে অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং অন্তঃসত্ত্বা নারী ছাড়া বাকি সব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে রাখা হবে৷ তবে কাউকেই দীর্ঘদিন রাখা হবে না ৷ অভিবাসনের আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে যাদের আবেদন গৃহীত হবে, তাদের নিয়ে যাওয়া হবে ইটালিতে আর যাদের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হবে, তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাবে আলবেনিয়া সরকার ৷

সোমবার আলবেনিয়ায় নির্মিতব্য অস্থায়ী আশ্রয় শিবির দুটোর সম্পর্কে আরো দুটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানো হয়েছে, এক, আশ্রয় শিবির পরিচালিত হবে ইটালির আইনে, দুই, শিবিরের বাহ্যিক নিরাপত্তার যাবতীয় বিষয় দেখভাল করবে আলবেনিয়া ৷

নির্বাচনের আগে ইউরোপের বাইরে এমন অস্থায়ী আশ্রয় শিবির নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মেলোনির দল ব্রাদার্স অব ইতালি ৷ সরকার গঠনের পর উত্তর আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনাও করেছে মেলোনির সরকার ৷ কিন্তু সে অঞ্চলের কোনো দেশ এমন আশ্রয় শিবির নির্মাণে রাজি হয়নি ৷ আলবেনিয়া রাজি হয়ে চুক্তিও সাক্ষর করায় জর্জা মেলোনি খুব খুশি ৷

এতে তিনি ইউরোপের জন্য কল্যাণকর কিছু করার আনন্দ পাচ্ছেন- এমন ইঙ্গিত দিয়ে ইতালির প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ আমার বিবেচনায় এটা সত্যিকার অর্থেই একটি ইউরোপীয় চুক্তি ৷ অভিবাসীদের স্রোত-ব্যবস্থাপনার কাজ যে সবাই মিলে করা সম্ভব- এটি (চুক্তি) তা দেখিয়ে দিলো ৷”

ইতালির বিরোধী দলের সংসদ সদস্য আঞ্জেলো বনেলি তা মনে করেন না৷ তার মতে, ইটালি আর আলবেনিয়া সরকারের এ চুক্তি ‘‘কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লংঘন ৷”

তথ্যসূত্র: এএফপি, এপি, রয়টার্স ও ইনফোমাইগ্র্যান্টস

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস