নেপালের দুর্ঘটনাকবলিত বিমানের ব্লাক বক্স উদ্ধার

গত রবিবার নেপালে বিধ্বস্ত যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের ব্ল্যাক বক্স ও ককপিটের ভয়েস রেকর্ডার খুঁজে পেয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ নেপালের রাজধানী কাঠমন্ডু থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে দেশটির গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই বিমান দুর্ঘটনায় কেবিন ক্রু সহ ৭২ জন যাত্রীর মধ্যে ৭০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি ২ নিখোঁজ যাত্রীও মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনও তাদের উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।

নেপালের সরকারী তদন্তকারীরা জানান, তারা আশা করছেন ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ২ ইঞ্জিন বিশিষ্ট এটিআর ৭২ উড়োজাহাজটি কেন বিধ্বস্ত হয়েছে, তা রেকর্ডারের তথ্য থেকে তারা জানতে পারবেন। রবিবারের আবহাওয়া অনুকূল থাকা সত্ত্বেও উড়োজাহাজটি পর্যটনকেন্দ্র পোখারায় অবতরণ করার কয়েক মিনিট আগে বিধ্বস্ত হয়।

কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, বৈমানিক কোনো “অস্বাভাবিক ঘটনার” কথা জানাননি। উদ্ধারদলগুলো সোমবার একটি নদীতে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ৭২ আরোহী সহ উড়োজাহাজটি এই নদীতে বিধ্বস্ত হয়েছিল। রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার আরও ২ ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যার ফলে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭০ হয়েছে। বাকি ২ নিখোঁজ যাত্রীও মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নেপাল সরকার এই মর্মান্তিক ঘটনার তদন্তে একটি প্যানেল গঠন করেছে। সোমবার নেপালে শোক দিবস পালন করা হয়। রাজধানী কাঠমান্ডুতে প্রায় ১০০ মানুষ মোমবাতি জ্বালিয়ে শোক প্রকাশ করেন এবং সরকারকে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর নিরাপত্তা মানদণ্ড মেনে চলা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

উড়োজাহাজটি কাঠমান্ডু থেকে পোখারার উদ্দেশ্যে ৩০ মিনিটের ফ্লাইট সম্পন্ন করার সময় বিধ্বস্ত হয়। নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উড়োজাহাজে ৬৮ যাত্রী ৪ ক্রু সদস্য উপস্থিত ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ১৫ জন বিদেশী নাগরিক ছিলেন। ৫ ভারতীয়, ৪ রুশ, ২ দক্ষিণ কোরীয় এবং আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড ও ফ্রান্সের ১ জন করে যাত্রী ছিলেন উড়োজাহাজে।

রবিবারের এই দুর্ঘটনা ১৯৯২ সালের পর নেপালের সবচেয়ে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা। সে বছর পাকিস্তান আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের (PIA) একটি উড়োজাহাজ কাঠমান্ডুতে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার শিকার হলে ১৬৭ যাত্রীর সবাই প্রাণ হারান।

নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ দেখিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৩ সালে নেপালের সব উড়োজাহাজ সংস্থাকে সদস্য দেশগুলোতে ফ্লাইট পরিচালনা থেকে নিষিদ্ধ করে। পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বত শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের দেশ নেপালে অসংখ্য ছোট বড় পাহাড়ের কারনে এই অঞ্চলকে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিমান চলাচলের রুট হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »