ভিয়েনা ০৫:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আজকের এই দিনে, ৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে কুমিল্লা জেলা হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০২:২৬:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১
  • ২১ সময় দেখুন

যদিও কুমিল্লার ভাটি অঞ্চল খ্যাত তৎকালীন হোমনা থানা পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়েছিল এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ২১ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে।

বাংলাদেশ ডেস্কঃ আজ ৮ ডিসেম্বর, কুমিল্লা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় কুমিল্লা। এদিন বিকেল ৪ টায় কুমিল্লা টাউন হল মাঠে তৎকালীন পূর্বাঞ্চলের প্রশাসনিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মরহুম জহুর আহমেদ চৌধুরী দলীয় পতাকা ও কুমিল্লার প্রথম প্রশাসক অ্যাডভোকেট আহমদ আলী স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। দিবসটি উপলক্ষে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালি ও দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী কুমিল্লা বিমানবন্দরে পাক বাহিনীর ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের প্রধান ঘাঁটিতে আক্রমণ শুরু করে। মিত্রবাহিনীর ১১ গুর্খা রেজিমেন্টের আর কে মজুমদারের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিমানবন্দরের তিনদিক থেকে আক্রমণ চালানো হয়। সীমান্তবর্তী বিবির বাজার দিয়ে লে. দিদারুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল এবং অপর দুটি দল গোমতী নদী অতিক্রম করে কুমিল্লা শহরের ভাটপাড়া দিয়ে এবং চৌদ্দগ্রামের বাঘেরচর দিয়ে এসে বিমানবন্দরের পাকসেনাদের ঘাঁটিতে আক্রমণ করে। রাতভর পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। কতিপয় পাকিস্তানি সেনা বিমানবন্দরের ঘাঁটি ত্যাগ করে শেষ রাতে কুমিল্লার বরুড়ার দিকে ও ময়নামতি সেনা ছাউনিতে ফিরে যায় এবং কয়েকজন আত্মসমর্পণ করে।

একপর্যায়ে পাকসেনাদের বিমানবন্দরের প্রধান ঘাঁটি দখল করে মুক্তিসেনারা। এভাবেই একাত্তরের ৮ ডিসেম্বর ভোরে কুমিল্লা হানাদার মুক্ত হয়। কুমিল্লা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, কুমিল্লা মুক্ত দিবস উপলক্ষে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে টাউন হল মাঠ থেকে বিজয় উৎসবের আনন্দ র‌্যালি ও দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

অবশ্য ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লার বেশিরভাগ অঞ্চল পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত হলেও জেলার ভাটি অঞ্চল (নদী বহুল নিম্নডূমি) খ্যাত হোমনা থানা পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আরও এক সপ্তাহ পর। পাক সেনাবাহিনী বাহিনী ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল আক্রমনের পর তার কোনঠাসা হয়ে প্রায় ২০০ শতাধিক পাক সেনা হোমনা থানার তিতাস নদীর তীরবর্তী ঘাগুটিয়া গ্রামের একটি মসজিদে এসে আশ্রয় নেয়।

১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কুমিল্লা শহর থেকে দলে দলে মুক্তিযোদ্ধা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া দিয়ে ভারতীয় ভারী ট্যাঙ্ক বহর এসে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর সমগ্র দেশের মত এই অঞ্চলটিও পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

আজকের এই দিনে, ৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে কুমিল্লা জেলা হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়

আপডেটের সময় ০২:২৬:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২১

যদিও কুমিল্লার ভাটি অঞ্চল খ্যাত তৎকালীন হোমনা থানা পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়েছিল এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ২১ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে।

বাংলাদেশ ডেস্কঃ আজ ৮ ডিসেম্বর, কুমিল্লা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় কুমিল্লা। এদিন বিকেল ৪ টায় কুমিল্লা টাউন হল মাঠে তৎকালীন পূর্বাঞ্চলের প্রশাসনিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মরহুম জহুর আহমেদ চৌধুরী দলীয় পতাকা ও কুমিল্লার প্রথম প্রশাসক অ্যাডভোকেট আহমদ আলী স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। দিবসটি উপলক্ষে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালি ও দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী কুমিল্লা বিমানবন্দরে পাক বাহিনীর ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের প্রধান ঘাঁটিতে আক্রমণ শুরু করে। মিত্রবাহিনীর ১১ গুর্খা রেজিমেন্টের আর কে মজুমদারের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিমানবন্দরের তিনদিক থেকে আক্রমণ চালানো হয়। সীমান্তবর্তী বিবির বাজার দিয়ে লে. দিদারুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল এবং অপর দুটি দল গোমতী নদী অতিক্রম করে কুমিল্লা শহরের ভাটপাড়া দিয়ে এবং চৌদ্দগ্রামের বাঘেরচর দিয়ে এসে বিমানবন্দরের পাকসেনাদের ঘাঁটিতে আক্রমণ করে। রাতভর পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। কতিপয় পাকিস্তানি সেনা বিমানবন্দরের ঘাঁটি ত্যাগ করে শেষ রাতে কুমিল্লার বরুড়ার দিকে ও ময়নামতি সেনা ছাউনিতে ফিরে যায় এবং কয়েকজন আত্মসমর্পণ করে।

একপর্যায়ে পাকসেনাদের বিমানবন্দরের প্রধান ঘাঁটি দখল করে মুক্তিসেনারা। এভাবেই একাত্তরের ৮ ডিসেম্বর ভোরে কুমিল্লা হানাদার মুক্ত হয়। কুমিল্লা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, কুমিল্লা মুক্ত দিবস উপলক্ষে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে টাউন হল মাঠ থেকে বিজয় উৎসবের আনন্দ র‌্যালি ও দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

অবশ্য ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লার বেশিরভাগ অঞ্চল পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত হলেও জেলার ভাটি অঞ্চল (নদী বহুল নিম্নডূমি) খ্যাত হোমনা থানা পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আরও এক সপ্তাহ পর। পাক সেনাবাহিনী বাহিনী ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল আক্রমনের পর তার কোনঠাসা হয়ে প্রায় ২০০ শতাধিক পাক সেনা হোমনা থানার তিতাস নদীর তীরবর্তী ঘাগুটিয়া গ্রামের একটি মসজিদে এসে আশ্রয় নেয়।

১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কুমিল্লা শহর থেকে দলে দলে মুক্তিযোদ্ধা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া দিয়ে ভারতীয় ভারী ট্যাঙ্ক বহর এসে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর সমগ্র দেশের মত এই অঞ্চলটিও পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস