ঢাকা ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শৈলকুপায় পাট নিয়ে নাজুক অবস্থায় কৃষকরা

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৯:২০:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১
  • ৩ সময় দেখুন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ দেশের অর্থকরী ফসলের মধ্যে পাট অন্যতম । পাট চাষে লোকশান কম হওয়ায় ক্রমেই বাড়ছে পাট চাষির সংখ্যা । কিন্তু এখন এই পাট চাষ হয় দাড়িয়েছে কৃষকের গলার কাটা । পানি স্বল্পতা ও কিষান সংকট নিয়ে নাজেহাল অবস্থায় দিন পার করছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার পাট চাষীরা ।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে জানা যায়, এবার আশানুরুপ বৃষ্টি না হওয়াতে কৃষক পানির অভাবে পাটের জাগ দিতে পারছেনা। বর্ষাকালে খাল-বিল,নদী-নালা বৃষ্টির পানিতে কানায়-কানায় ভরে যায়। কিন্তু এবার বর্ষা নামলেও তা যথেষ্ট না হওয়াতে এমন অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে কৃষক ও পাট চাষীদের।

বর্তমানে কিষানের মজুরি সকাল থেকে দিন ১ টা পর্যন্ত ৪ শ থেকে ৭শ টাকা দিলেও কিষান সংকট বিরাজ করছে। আবার পাট কাটার পর চাষীরা গরুর গাড়ি বা মহিষের গাড়িতে করে পানি সমৃদ্ধ এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে জাগ দিয়ে পাট পঁচানোর জন্য। অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন ও মোটরের পানি দিয়ে পাট জাঁগ দিতে গিয়ে বাড়তি খরচ করছেন।

পুরুষ মানুষ পাটকাটা এবং জাগ দেবার জন্য অন্যত্র বহন করা আর গ্রামের মহিলা কিষানীরা খড়ি থেকে আঁশ আলাদা করার কাজে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। জীবন আর জীবিকার স্বাভাবিক তাগিদে কিষান নির্ভর মানুষগুলো বিঘাপ্রতি (২০) কাঠা জমির পাট কাটতে এবং পাটের বোঝা মাথায় করে রাস্তায় উঠানোর মজুরি নিচ্ছে ৪ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত যে কারনে সেঁচ নির্ভর বুনন থেকে ফসল ঘরে উঠানো পর্যন্ত আঞ্চলিক ক্রমানুসারে ২৫/৩০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে বলে কৃষকেরা জানান ।

অন্যদিকে ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৫ মণ ও ফলন খারাপ হলে ৩ মণ করে পাট উৎপাদন হয়েছে বলে জানান কৃষকেরা। যা বর্তমান বাজারে ২৩শ থেকে ২৪শ টাকা মণ দরে বিক্রি করে নিরাশ হচ্ছে কৃষক।

উপজেলার দামুকদিয়া গ্রামের কৃষক মাসুদ মোল্লা বলেন, এবার ৩ বিঘা জমিতে পাঠ চাষ করেছি । ফলন আশানুরুপ হলেও পাট বুনন থেকে শুরু করে ঘরে তুলতে যা খরচ হচ্ছে তাতে কষ্টই বৃথা । তারপর আবার বাজারে পাটের দাম কম । এইবার পাটের ভাল দাম না পেলে পরের বছর থেকে আর পাট চাষ করবো না ।

শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকরাম হোসেন জানান, এবার উপজেলায় মোট ৮ হাজার ৩ শত ৮০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে । ফলন তুলনামূলক ভালো হয়েছে। তবে কিষান সংকটের কারণে পাট ঘরে তুলতে বেশি টাকা ব্যায় হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছে কৃষকরা। ন্যায্যমূল্য পেলে এই লোকসান পুশিয়ে নিতে পারবে বলেও জানান তিনি ।

শেখ ইমন/ ইবি টাইমস

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

শৈলকুপায় পাট নিয়ে নাজুক অবস্থায় কৃষকরা

আপডেটের সময় ০৯:২০:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ দেশের অর্থকরী ফসলের মধ্যে পাট অন্যতম । পাট চাষে লোকশান কম হওয়ায় ক্রমেই বাড়ছে পাট চাষির সংখ্যা । কিন্তু এখন এই পাট চাষ হয় দাড়িয়েছে কৃষকের গলার কাটা । পানি স্বল্পতা ও কিষান সংকট নিয়ে নাজেহাল অবস্থায় দিন পার করছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার পাট চাষীরা ।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে জানা যায়, এবার আশানুরুপ বৃষ্টি না হওয়াতে কৃষক পানির অভাবে পাটের জাগ দিতে পারছেনা। বর্ষাকালে খাল-বিল,নদী-নালা বৃষ্টির পানিতে কানায়-কানায় ভরে যায়। কিন্তু এবার বর্ষা নামলেও তা যথেষ্ট না হওয়াতে এমন অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে কৃষক ও পাট চাষীদের।

বর্তমানে কিষানের মজুরি সকাল থেকে দিন ১ টা পর্যন্ত ৪ শ থেকে ৭শ টাকা দিলেও কিষান সংকট বিরাজ করছে। আবার পাট কাটার পর চাষীরা গরুর গাড়ি বা মহিষের গাড়িতে করে পানি সমৃদ্ধ এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে জাগ দিয়ে পাট পঁচানোর জন্য। অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন ও মোটরের পানি দিয়ে পাট জাঁগ দিতে গিয়ে বাড়তি খরচ করছেন।

পুরুষ মানুষ পাটকাটা এবং জাগ দেবার জন্য অন্যত্র বহন করা আর গ্রামের মহিলা কিষানীরা খড়ি থেকে আঁশ আলাদা করার কাজে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। জীবন আর জীবিকার স্বাভাবিক তাগিদে কিষান নির্ভর মানুষগুলো বিঘাপ্রতি (২০) কাঠা জমির পাট কাটতে এবং পাটের বোঝা মাথায় করে রাস্তায় উঠানোর মজুরি নিচ্ছে ৪ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত যে কারনে সেঁচ নির্ভর বুনন থেকে ফসল ঘরে উঠানো পর্যন্ত আঞ্চলিক ক্রমানুসারে ২৫/৩০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে বলে কৃষকেরা জানান ।

অন্যদিকে ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৫ মণ ও ফলন খারাপ হলে ৩ মণ করে পাট উৎপাদন হয়েছে বলে জানান কৃষকেরা। যা বর্তমান বাজারে ২৩শ থেকে ২৪শ টাকা মণ দরে বিক্রি করে নিরাশ হচ্ছে কৃষক।

উপজেলার দামুকদিয়া গ্রামের কৃষক মাসুদ মোল্লা বলেন, এবার ৩ বিঘা জমিতে পাঠ চাষ করেছি । ফলন আশানুরুপ হলেও পাট বুনন থেকে শুরু করে ঘরে তুলতে যা খরচ হচ্ছে তাতে কষ্টই বৃথা । তারপর আবার বাজারে পাটের দাম কম । এইবার পাটের ভাল দাম না পেলে পরের বছর থেকে আর পাট চাষ করবো না ।

শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকরাম হোসেন জানান, এবার উপজেলায় মোট ৮ হাজার ৩ শত ৮০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে । ফলন তুলনামূলক ভালো হয়েছে। তবে কিষান সংকটের কারণে পাট ঘরে তুলতে বেশি টাকা ব্যায় হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছে কৃষকরা। ন্যায্যমূল্য পেলে এই লোকসান পুশিয়ে নিতে পারবে বলেও জানান তিনি ।

শেখ ইমন/ ইবি টাইমস