জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে অবস্থান নেওয়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ শনিবার (২২ নভেম্বর) জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার ভাষণের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী জি–২০ সম্মেলন। ইতিমধ্যে বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য বিশ্ব নেতারা সেখানে উপস্থিত হয়েছেন।
বৈঠকের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোনাল্ড লামোলা বলেছেন, দেশটির ঐতিহাসিক জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে ৪২টি দেশ অংশগ্রহণ করবেন।
যদিও জি-২০-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবারের সম্মেলন বয়কট করেছে।
আয়োজক দেশের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু শ্বেতাঙ্গদের নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সম্মেলনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত জানায় হোয়াট হাউস। এদিকে প্রথমবারের মতো জি টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনের ২০তম আসর আয়োজন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘সংহতি, সমতা এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
এবারের সম্মেলনে আফ্রিকা মহাদেশের নিম্ন-আয়ের দেশগুলির জন্য ঋণমুক্তির ব্যবস্থা আলোকপাত করা হতে পারে। যা উন্নয়নশীল বিশ্বজুড়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথে একটি বড় বাধা। এছাড়া সম্মেলনে জলবায়ু অভিযোজন, অভ্যন্তরীণ সহযোগিতা এবং দেশগুলোর মধ্যে কৌশলগত দিকনির্দেশনা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। দুই দিনের সফরে সম্মেলনের ফাঁকে বিশ্ব নেতারা একাধিকবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শতকের নব্বইয়ের দশকে গভীর অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছিল এশিয়ার অনেক দেশ। এ সংকট শেষে ১৯৯৯ সালে বিশ্বের বড় ২০টি দেশ একটি অর্থনৈতিক জোট গড়ে। তারা বুঝতে পেরেছিল, এমন সংকট কোনো একটি দেশের সীমানার মধ্যেই আবদ্ধ থাকে না। তাই এ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে আরও অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রয়োজন। সেই অর্থনৈতিক জোটই জি–২০।
আলোচ্যসূচিতে যা যা থাকছে তা হল: মার্কিন সরকারের সতর্কতা সত্ত্বেও শনিবার জি২০ দেশগুলির প্রতিনিধিরা একটি শীর্ষ সম্মেলন ঘোষণাপত্র গ্রহণ করেছেন। হোয়াইট হাউস অংশগ্রহণ করেনি তবে পরের বছর জি২০ সভাপতিত্ব গ্রহণ করবেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে যে তারা রবিবার প্রতি বছর ঘূর্ণায়মান রাষ্ট্রপতিত্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রতীকীভাবে হস্তান্তর করবে না। অধিকন্তু, অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই একটি অ-বাধ্যতামূলক ঘোষণাপত্র গ্রহণ করতে প্রস্তুত, দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোসা বলেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনও প্রমাণ ছাড়াই দেশটিকে পদ্ধতিগতভাবে শ্বেতাঙ্গদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করার পর এটি এসেছে।মার্কিন সতর্কীকরণ সত্ত্বেও রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের যৌথ ঘোষণাপত্র “ওয়াশিংটনের জন্যও একটি বার্তা”, একজন ইইউ কূটনীতিক বলেছেন।
ঘোষণাপত্রে নবায়নযোগ্য শক্তির সম্প্রসারণ, জলবায়ু সুরক্ষা এবং দরিদ্র দেশগুলির ঋণের বোঝা হ্রাস করার মতো বিষয়গুলি সম্বোধন করা হয়েছে। লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জন এবং প্রাক-শিল্প স্তরের তুলনায় বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখা। এই লক্ষ্যে, অংশগ্রহণকারী দেশগুলি জাতীয় পর্যায়ে প্রতিশ্রুতি উপস্থাপন করতে চায়।
এদিকে জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ অভিযোগ করেছেন যে ইউক্রেনের যুদ্ধের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য মার্কিন প্রস্তাবের দ্বারাও শীর্ষ সম্মেলনটি ছেয়ে গেছে।
চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ আরো বলেন, ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলির সরকার এটিকে কিয়েভের আত্মসমর্পণ হিসাবে দেখছে, এবং তাই এই পরিকল্পনাটি অগ্রহণযোগ্য। “রাশিয়া একটি অবৈধ আগ্রাসন যুদ্ধ শুরু করেছে। এখন রাশিয়াকে অবশেষে এই আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে, যা ইউরোপে ভয়াবহ মানবিক দুর্ভোগ ডেকে এনেছে। সমস্ত জি-২০ সদস্যদের তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে, কেবল অর্থনৈতিক স্বার্থের বাইরে নয়।”
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস





















