২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন অভিবাসন ও আশ্রয় চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর অভিবাসন চাপ মোকাবিলায় বিশেষ সহায়তা পাবে ভূমধ্যসাগরীয় দেশ গ্রিস, সাইপ্রাস, স্পেন ও ইতালি
ইউরোপ ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ইউরোপের বিভিন্ন গণমাধ্যম এতথ্য জানায়। সম্প্রতি ইউরোপীয় কমিশন সংহতি ব্যবস্থার মূল দাবিদার হিসেবে এ চারটি দেশের নাম ঘোষণা করেছে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিবাসন সংস্কারের অংশ হিসেবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে কীভাবে তারা ‘সলিডারিটি পুল’ বা ‘সংহতি তহবিল’ নামের এই উদ্যোগে সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে পারে৷ নিজেদের দেশে আরো বেশি সংখ্যক অভিবাসী গ্রহণ করে কিংবা চারটি ভূমধ্যসাগরীয় দেশকে বেশি অর্থ দিয়ে অথবা অন্য কোনো পদক্ষেপের মাধ্যমে অবদান রাখতে পারবে সদস্য রাষ্ট্রগুলো৷
কমিশন জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত অনিয়মিত সীমান্ত অতিক্রমের প্রচেষ্টা ৩৫ শতাংশ কমেছে৷ কিন্তু চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে৷
কমিশন বলেছে, ‘‘গত এক বছরে বিপুল সংখ্যক আগমনের কারণে গ্রিস ও সাইপ্রাস অভিবাসন চাপের মধ্যে রয়েছে৷ একই সময়ে সমুদ্রে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম এবং বিপুল সংখ্যক আগমনের কারণে স্পেন ও ইতালিও তীব্র অভিবাসন চাপের মধ্যে রয়েছে ৷’’
কমিশন আরও জানিয়েছে, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, এস্তোনিয়া, ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, নেদারল্যান্ডস এবং পোল্যান্ড অভিবাসন চাপের ঝুঁকিতে রয়েছে এবং তারা ইইউর অভিবাসন সহায়তা টুলবক্সে অগ্রাধিকার পাবে ৷
এছাড়া সীমান্ত নিরাপত্তা ইস্যুতে কমিশন জানিয়েছে, ড্রোন ও অ্যান্টি-ড্রোন সক্ষমতা কিনতে ২৫ কোটি ইউরো মূল্যের দরপত্র আহ্বান করা হবে৷ এর মধ্য দিয়ে হাইব্রিড হুমকি ও ড্রোন অনুপ্রবেশের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে সহায়তা দিতে চায় ইইউ ৷
কমিশন আরও জানিয়েছে, ইইউর পূর্বাঞ্চলীয় ছয়টি সদস্য রাষ্ট্র গত পাঁচ বছর ধরে চাপের মধ্যে থাকার কারণে ‘‘সংহতি তহবিলে’’ অবদান রাখার ক্ষেত্রে পূর্ণ
বা আংশিক ছাড় চাইতে পারবে৷ অনিয়মিত অভিবাসনের চাপ কমাতে অন্তত ৩০ হাজার আশ্রয়প্রার্থী পুনর্বণ্টনে ইতালি, স্পেন, গ্রিস ও সাইপ্রাসকে সহায়তা দেওয়া উচিত বলেও জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৷
ইইউর নির্বাহীদের এমন পদক্ষেপ জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জটিল আলোচনার সূচনা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ কারণ, প্রায় প্রতিটি দেশকেই অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কমানোর দিকে বেশি নজর দিতে দেখা যাচ্ছে ৷
দীর্ঘ আলোচনার আর বাগবিতণ্ডার পরই ২০২৪ সালে নতুন অভিবাসন নীতি চূড়ান্ত করেছে ইইউ৷ এর মূল লক্ষ্য হলো সংহতি ব্যবস্থা৷ ইইউ বলছে, অভিবাসন নিয়ে চাপের মধ্যে থাকা ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোর উপর চাপ কমাতেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ৷
অন্যান্য দেশগুলোকে সামনের সারির দেশগুলো থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের একটি অংশকে গ্রহণ করতে হবে, নয়তো আশ্রয়প্রার্থী প্রতি ২০ হাজার ইউরো আর্থিক সহায়তা দিতে হবে ৷ কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে কঠোর লবিং করেছে সদস্য রাষ্ট্রগুলো৷ ফলে ঘোষণাটি দিতে এক মাস দেরি হয়েছে৷ অবশেষে, সংহতির অন্যতম দাবিদার হিসেবে চারটি দেশের নাম ঘোষণা করা হলো ৷
একাধিক দেশ ইতিমধ্যেই জোর দিয়ে জানিয়েছে, তারা এই ব্যবস্থার আওতায় কাউকে গ্রহণ করবে না এবং শুধু আর্থিক অনুদান দেবে ৷
এদিকে অস্ট্রিয়ার গণমাধ্যম জানিয়েছে,অস্ট্রিয়া এবং আরও পাঁচটি দেশ ইইউ অভিবাসন বিধিমালা থেকে অব্যাহতি পাবে। ইউরোপীয় কমিশন অস্ট্রিয়ায় অভিবাসনের চাপকে উচ্চ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করে এটি ঘোষণা করেছে।
অতএব, ২০২৬ সালে অস্ট্রিয়াকে ইইউ সংহতি ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে হবে না। এই ব্যবস্থায় শর্ত দেওয়া হয়েছে যে অন্যান্য ইইউ দেশগুলি যদি অতিরিক্ত অভিবাসীর আগমনের সম্মুখীন হয় তবে ইতালি বা গ্রিসকে ত্রাণ প্রদান করবে।
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস




















