তিউনিশিয়ার উপকূলে অভিবাসীবাহী একটি নৌকা ডুবে শিশুসহ অন্তত ৪০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এতথ্য জানায়। জানা গেছে বুধবার (২২ অক্টোবর) সেন্ট্রাল তিউনিশিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় মাদিহা বন্দরের কাছেই নৌকাডুবির এই ঘটনাটি ঘটে।
তিউনিশিয়ার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ওয়ালিদ চাবরি বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ইউরোপমুখী ওই নৌকায় অন্তত ৭০ জন অভিবাসী ছিলেন৷ তাদের মধ্যে ৩০ জনকে টিউনিশিয়ার নেভাল ইউনিটের সহায়তায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
এই নৌকাডুবির দুর্ঘটনাটি চলতি বছরে এই অঞ্চলের অন্যতম ভয়াবহ সামুদ্রিক দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিচার বিভাগীয় উক্ত কর্মকর্তা জানান,ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী তোলা হয়েছিল নৌকাটিতে। আর সেখানে থাকা সবাই সাব-সাহারান আফ্রিকার নাগরিক ছিলেন।এর বেশি কোনও তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে দিতে চাননি তিনি। তবে নৌকাডুবির ঘটনাটি ঠিক কখন ঘটেছে এবং কোন উপকূল থেকে নৌকাটি ছেড়ে এসেছে তা নিয়েও নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দুই লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এর মধ্যে ৬০ হাজারের বেশি মানুষকে আটক করে আফ্রিকার উপকূলে ফেরত পাঠানো হয়, আর অন্তত দুই হাজার মানুষ সাগরে প্রাণ হারিয়েছেন।
বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা ওয়ালিদ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই নৌকাডুবির কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছেন টিউনিশিয়ান কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, ইউরোপে উন্নত জীবনের আশায় সংঘাত ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ভিড় করেন উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়ায়। ইউরোপ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে তিউনিশিয়া তাদের কাছে একটি ট্রানজিট পয়েন্ট। ফলে, তাদের অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সামাল দিতে গিয়ে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে রয়েছে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটি।
এছাড়াও, দেশটিতে বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি অভিবাসীদের সহায়তা দিয়ে আসা বিভিন্ন এনজিওকর্মীদেরও বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে দেশটির বিরুদ্ধে।
আফ্রিকার উপকূল থেকে ইউরোপমুখী ভূমধ্যসাগরীয় অভিবাসন রুটটি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক পথ হিসেবে পরিচিত। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিউনিশিয়ার স্ফ্যাক্স শহরের উপকূলেও একটি নৌকা ডুবে যায়। ওই নৌকাতেও ৪০ জনের বেশি সুদানি নাগরিক ছিলেন ৷
এদিকে, ২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তিউনিশিয়ার সঙ্গে অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবিলায় একটি চুক্তি সই করে। এই চুক্তির আওতায় মানবপাচার বন্ধ, সীমান্ত শক্তিশালীকরণ এবং অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর জন্য ১১৮ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। চুক্তিটি নিয়ে সমালোচনা করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও অভিবাসন বিষয়ক এনজিও।
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস




















