এজিয়ান সাগরে গ্রিক কোস্টগার্ডের ধাওয়ায় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে আসা একটি স্পিডবোট উল্টে এক শিশুসহ দুই জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন
ইউরোপ ডেস্কঃ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গ্রিক কোস্টগার্ড জানিয়েছে, রোডস দ্বীপের উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে আসা স্পিডবোটটি উল্টে যায় ৷ এতে এক পুরুষ অভিবাসনপ্রত্যাশী ও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে৷ এছাড়াও জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ১৬ জনকে৷ তাদের মধ্যে তিন জনকে মানবপাচারকারী সন্দেহে আটক করা হয়েছে ৷
আরেকটি ঘটনায়, গাভদোস থেকে ৬৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে ইইউর সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা ফ্রন্টেক্স৷ কোস্টগার্ড আরও জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে পূর্ব এজিয়ান সাগরে নিয়মিত টহলের সময় তারা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে আসা একটি স্পিডবোট দেখতে পায় ৷ স্পিডবোটটি রোডসের দিকে যাচ্ছিল বলেও দাবি করেছে কোস্টগার্ড ৷
কোস্টগার্ডের টহল জাহাজটি স্পিডবোটটিকে থামার জন্য সংকেত দেয়৷ সংকেত পেয়েও থামেনি স্পিডবোটটি৷ ফলে, সেটিকে ধাওয়া দেয় গ্রিক কোস্টগার্ডের টহল জাহাজ ৷
কোস্টগার্ডের বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, স্পিডবোটটি পালানোর জন্য বিপজ্জনক কৌশল অবলম্বন করে এবং শেষ পর্যন্ত উল্টে যায়৷ এতে স্পিডবোটে থাকা সব অভিবাসনপ্রত্যাশী সাগরে পড়ে যান ৷
এ সময় গ্রিক কোস্টগার্ডের দুটি টহল জাহাজ মোট ১৬ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেন৷ তাদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও ৪ জন নারী ছিলেন ৷ এছাড়া, একজন পুরুষ ও একটি শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয় ৷
মানবপাচারকারী সন্দেহে রোডসের বন্দর পুলিশ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে ৷ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন ৩০ বছর
বয়সি আজারবাইজানের এক নাগরিক এবং ৩১ ও ৩২ বছর বয়সি আর্মেনিয়ার দুই নাগরিক৷ তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার, নৌকাডুবির কারণ, অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড এবং অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে ৷
ঠিক এক সপ্তাহ আগেই গ্রিসের আরেকটি দ্বীপ লেসবসের কাছে অভিবাসীবাহী একটি নৌকা ডুবে চার জনের মৃত্যু হয়েছিল৷ তাদের মধ্যে একজন
শিশুও ছিল ৷ এছাড়া, নৌকায় থাকা ৩৪ জন নিজেরাই সাঁতরে তীরে পৌঁছান৷ পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে ৷
গাভদোস থেকে উদ্ধার ৬৭ জন: বুধবার গ্রিসের একেবারে দক্ষিণের দ্বীপ গাভদোসের দক্ষিণ উপকূল থেকে ৬৭ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে ৷ এই অভিযান পরিচালনা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স-এর একটি জাহাজ ৷
উদ্ধারের পর অভিবাসনপ্রত্যাশীদের গাভদোসের বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর পরিচয় যাচাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে৷ তবে তাদের জাতীয়তা নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি ৷
২০১৫-২০১৬ সালে ইউরোপমুখী অভিবাসন প্রবাহের সময় অগ্রভাগে ছিল গ্রিস ৷ ওই সময় মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার যুদ্ধ ও দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চল থেকে দশ লাখেরও বেশি মানুষ ইউরোপে এসেছিলেন ৷
পরে অবশ্য অভিবাসন প্রবাহ কমে যায়৷ কিন্তু সম্প্রতি লিবিয়া থেকে ক্রিট ও গাভদোস দ্বীপে আগমন আবারও বেড়েছে ৷ এর জের ধরে অভিবাসন নীতি কঠোর করেছে গ্রিস ৷
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস