ভিয়েনা ১০:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এবছর সমুদ্র পথে ইতালীতে অবৈধ অভিবাসীদের শীর্ষে বাংলাদেশ

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৯:০১:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • ১০০ সময় দেখুন

বাংলাদেশকে এমন দুঃসংবাদই দিল ইতালি সরকার

ইউরোপ ডেস্কঃ শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে এতথ্য জানা গেছে।

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৯ মাসে সমুদ্রপথে ইতালিতে পাড়ি জমানো অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছেন বাংলাদেশ থেকে।

উল্লেখ্য যে, গত ৩ অক্টোবর প্রকাশিত ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে মোট ১৫ হাজার ৪৭৬ জন বাংলাদেশি সমুদ্রপথে ইতালির উপকূলে পৌঁছেছেন।

দেশ অনুযায়ী হিসাব করে দেখা গেছে, চলতি বছর ইতালিতে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের এই সংখ্যা অন্য যে কোনও দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশভিত্তিক হিসাবে আগতদের ৩০ শতাংশই ছিলেন বাংলাদেশি।

এদিকে পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছর ইতালির উপকূলে আসা মোট অভিবাসীর সংখ্যা ২০২৪ সালের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও ২০২৩ সালের তুলনায় অনেক কমেছে।

তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের উল্লিখিত সময়ে মোট ৫১ হাজার ৮৫৫ জন সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইতালিতে এসেছেন। ২০২৪ সালের একই সময়ে সংখ্যাটি ছিল ৫১ হাজার ৩৪১ জন। আর ২০২৩ সালে এই সময়ে এসেছিলেন এক লাখ ৩৫ হাজার ৩১৯ জন।

ইতালি সরকারের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের প্রথম ৯ মাসের তুলনায় ২০২৫ সালে বাংলাদেশিদের আগমন প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। ২০২৪ সালে এই সময়ে ৮ হাজার ৫২৬ জন বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে এসেছিলেন। এ বছর তা বেড়ে ১৫ হাজার ৪৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

পরিসংখ্যান থেকে আরও জানা গেছে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালিতে অভিবাসী আগমনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলোর তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে অভিবাসীদের আগমন ক্রমেই বাড়ছে।

বাংলাদেশিদের পর সর্বাধিক সংখ্যক অভিবাসী এসেছে ইরিত্রিয়া ও মিসর থেকে। এই সংখ্যা যথাক্রমে ৭ হাজার ৯০ জন ও ৬ হাজার ৫৫৮ জন।

এছাড়াও পাকিস্তান, সুদান, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া ও তিউনিশিয়া থেকেও কয়েক হাজার মানুষ এ সময় ইতালিতে পাড়ি জমিয়েছেন। অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে ইরান, সিরিয়া, গিনি, আলজেরিয়া, নাইজেরিয়া, মালি ও আফগানিস্তান। আরও কিছু অভিবাসীর পরিচয় যাচাইয়ের কাজ এখনো চলমান।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৫ সালের মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়টিই ছিল অভিবাসনের প্রধান মৌসুম। মে মাসে ৭ হাজার ১৭৮ জন, জুনে ৭ হাজার ৮৯ জন, জুলাইয়ে ৬ হাজার ৪৮৭ জন, আগস্টে ৬ হাজার ১৪৬ জন এবং সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৩১৫ জন অভিবাসী ইতালিতে পৌঁছান। অক্টোবরের প্রথম দিক পর্যন্ত আগমন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক একক অভিবাসীর সংখ্যাও কিছুটা বেড়েছে। এ বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ১৫৬ জন শিশু ইতালিতে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও ২০২৩ সালের উল্লিখিত সময়ের তুলনায় অনেক কম। ২০২৪ সালের এই সময়ে আট হাজার ৭৫২ শিশু এবং ২০২৩ সালে ১৮ হাজার ৮২০ শিশু ইটালিতে পৌঁছেছিল।

সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে, ইউরোপীয় সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আরোপ আরও কঠোর হলেও বাংলাদেশিদের আগমনের ক্ষেত্রে তার প্রভাব তেমন পড়েনি। ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

এবছর সমুদ্র পথে ইতালীতে অবৈধ অভিবাসীদের শীর্ষে বাংলাদেশ

আপডেটের সময় ০৯:০১:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশকে এমন দুঃসংবাদই দিল ইতালি সরকার

ইউরোপ ডেস্কঃ শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে এতথ্য জানা গেছে।

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৯ মাসে সমুদ্রপথে ইতালিতে পাড়ি জমানো অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছেন বাংলাদেশ থেকে।

উল্লেখ্য যে, গত ৩ অক্টোবর প্রকাশিত ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে মোট ১৫ হাজার ৪৭৬ জন বাংলাদেশি সমুদ্রপথে ইতালির উপকূলে পৌঁছেছেন।

দেশ অনুযায়ী হিসাব করে দেখা গেছে, চলতি বছর ইতালিতে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের এই সংখ্যা অন্য যে কোনও দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশভিত্তিক হিসাবে আগতদের ৩০ শতাংশই ছিলেন বাংলাদেশি।

এদিকে পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছর ইতালির উপকূলে আসা মোট অভিবাসীর সংখ্যা ২০২৪ সালের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও ২০২৩ সালের তুলনায় অনেক কমেছে।

তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের উল্লিখিত সময়ে মোট ৫১ হাজার ৮৫৫ জন সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইতালিতে এসেছেন। ২০২৪ সালের একই সময়ে সংখ্যাটি ছিল ৫১ হাজার ৩৪১ জন। আর ২০২৩ সালে এই সময়ে এসেছিলেন এক লাখ ৩৫ হাজার ৩১৯ জন।

ইতালি সরকারের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের প্রথম ৯ মাসের তুলনায় ২০২৫ সালে বাংলাদেশিদের আগমন প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। ২০২৪ সালে এই সময়ে ৮ হাজার ৫২৬ জন বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে এসেছিলেন। এ বছর তা বেড়ে ১৫ হাজার ৪৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

পরিসংখ্যান থেকে আরও জানা গেছে ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালিতে অভিবাসী আগমনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলোর তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে অভিবাসীদের আগমন ক্রমেই বাড়ছে।

বাংলাদেশিদের পর সর্বাধিক সংখ্যক অভিবাসী এসেছে ইরিত্রিয়া ও মিসর থেকে। এই সংখ্যা যথাক্রমে ৭ হাজার ৯০ জন ও ৬ হাজার ৫৫৮ জন।

এছাড়াও পাকিস্তান, সুদান, সোমালিয়া, ইথিওপিয়া ও তিউনিশিয়া থেকেও কয়েক হাজার মানুষ এ সময় ইতালিতে পাড়ি জমিয়েছেন। অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে ইরান, সিরিয়া, গিনি, আলজেরিয়া, নাইজেরিয়া, মালি ও আফগানিস্তান। আরও কিছু অভিবাসীর পরিচয় যাচাইয়ের কাজ এখনো চলমান।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৫ সালের মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়টিই ছিল অভিবাসনের প্রধান মৌসুম। মে মাসে ৭ হাজার ১৭৮ জন, জুনে ৭ হাজার ৮৯ জন, জুলাইয়ে ৬ হাজার ৪৮৭ জন, আগস্টে ৬ হাজার ১৪৬ জন এবং সেপ্টেম্বরে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৩১৫ জন অভিবাসী ইতালিতে পৌঁছান। অক্টোবরের প্রথম দিক পর্যন্ত আগমন প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক একক অভিবাসীর সংখ্যাও কিছুটা বেড়েছে। এ বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ১৫৬ জন শিশু ইতালিতে পৌঁছেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও ২০২৩ সালের উল্লিখিত সময়ের তুলনায় অনেক কম। ২০২৪ সালের এই সময়ে আট হাজার ৭৫২ শিশু এবং ২০২৩ সালে ১৮ হাজার ৮২০ শিশু ইটালিতে পৌঁছেছিল।

সামগ্রিকভাবে দেখা যাচ্ছে, ইউরোপীয় সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ আরোপ আরও কঠোর হলেও বাংলাদেশিদের আগমনের ক্ষেত্রে তার প্রভাব তেমন পড়েনি। ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস