ভিয়েনা ০৮:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘুষের বিনিময়ে এলসিএস প্রকল্পে নারী কর্মী নিয়োগ

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ১২:০৫:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৭১ সময় দেখুন

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : সংসারের অভাব-অনটন মেটাতে পুরুষের পাশাপাশি এই ৫ নারীও অংশ নিয়েছিলেন কাজে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) লেবার কন্ট্রাক্ট সোসাইটি (এলসিএস) প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়কের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ছিল তাদের কাজ। দীর্ঘদিন কাজও করেছেন। তবে এই নারীদের অভিযোগ,কাজ পেতে দিতে হয়েছে ঘুষ। জনপ্রতি ২৪ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন এলজিইডি অফিসের কমিউনিটি অর্গানাইজার এলিজা নাজ ও প্রকল্পের সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম। ঘুষ দিয়ে এতদিন কাজ করলেও এখন আর কাজ দেওয়া হচ্ছে না। কাজ না দিয়ে তাদের জায়গায় অন্যকে কাজ দিয়েছেন বলে অভিযোগ এই নারীদের। বিষয়টি নিয়ে এলজিইডি অফিসে আসলেও কোনো লাভ হয়নি।

জানা যায়, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি,তাদের আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই এ প্রকল্পের লক্ষ্য। এই কর্মীরা এলজিইডি’র এলসিএস প্রকল্পের আওতায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থানীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ বা সংশ্লিষ্ট এলজিইডি অফিসে অনুষ্ঠিত হয়।

ভুক্তভোগীরা জানায়, ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলায় লেবার কন্ট্রাক্ট সোসাইটি (এলসিএস) প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়কের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পান সাথি খাতুন,বাসনা দাস,জোসনা খাতুন,চায়না খাতুন ও দিপালি দাস। তাদের বাড়ি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। এই প্রকল্পে কয়েকবছর ধরে কাজ করছেন তারা। সম্প্রতি তাদেরকে বাদ দিয়ে সেই জায়গায় অন্য কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। শুধু তাই-না,তাদের ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করে অন্য নারীদের কাজ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করছেন তারা। এমনকি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকবই ফেরত না দিয়ে জমাকৃত টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। এ বিষয়ে জানতে উপজেলা এলজিইডি অফিসে এসেছিলেন পাঁচ ভুক্তভোগী নারী। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। সমাধান না পেয়ে মলিন মুখে ফিরে যেতে হয়েছে তাদের। এঘটনায় জড়িতদের শাস্তি ও টাকা ফেরতের দাবি তাদের।

ভুক্তভোগী নারী বাসনা দাস বলেন,‘এলসিএস প্রকল্পের সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম আমার বাড়ির উপর গিয়ে ২৪ হাজার টাকা এনেছে। এখন আমাকে কাজ না দিয়ে অন্য নারীকে কাজ দিয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে অফিসে এসেছিলাম। কিন্তু লাভ হয়নি। আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকবইও ফেরত দিচ্ছে না।’

দিপালি খাতুন নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন,‘বেশ কয়েক বছর ধরে এই প্রকল্পে কাজ করছি। কাজ পেতে অফিসের কমিউনিটি অর্গানাইজার এলিজা নাজ ও প্রকল্পের সুপারভাইজার রবিউল ইসলামকে ২৪ হাজার টাকা দেওয়া লেগেছে। আমরা টাকা ফেরত ও এর সাথে জড়িতদের বিচার চাই।’

জোসনা খাতুন নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘কয়েক দফায় ২৪ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন কাজ পাচ্ছি না। আমাদের ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে অন্য নারীকে কাজ দেওয়া হয়েছে।’

 

অভিযোগের বিষয়ে সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারীদের অভিযোগ ফাউ। এই প্রকল্প দুই বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। তারা এখন চেকবই ফেরত চাচ্ছে। বাদবাকি কমিউনিটি অর্গানাইজার (সিও) বলতে পারবে।’

সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করে কমিউনিটি অর্গানাইজার (সিও) এলিজা নাজ বলেন, ‘এ ঘটনার পেছনে বড় রহস্য আছে। তাদের সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি এর প্রমাণ দেবো। কেউ অভিযোগ দিলেই তো সত্য হয়ে যায় না।’

এ বিষয়ে জানতে এলজিইডির শৈলকূপা উপজেলা প্রকৌশলী রাকিব হাসানের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ঢাকা/ইবিটাইমস/এসএস

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

ঘুষের বিনিময়ে এলসিএস প্রকল্পে নারী কর্মী নিয়োগ

আপডেটের সময় ১২:০৫:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : সংসারের অভাব-অনটন মেটাতে পুরুষের পাশাপাশি এই ৫ নারীও অংশ নিয়েছিলেন কাজে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) লেবার কন্ট্রাক্ট সোসাইটি (এলসিএস) প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়কের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ ছিল তাদের কাজ। দীর্ঘদিন কাজও করেছেন। তবে এই নারীদের অভিযোগ,কাজ পেতে দিতে হয়েছে ঘুষ। জনপ্রতি ২৪ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন এলজিইডি অফিসের কমিউনিটি অর্গানাইজার এলিজা নাজ ও প্রকল্পের সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম। ঘুষ দিয়ে এতদিন কাজ করলেও এখন আর কাজ দেওয়া হচ্ছে না। কাজ না দিয়ে তাদের জায়গায় অন্যকে কাজ দিয়েছেন বলে অভিযোগ এই নারীদের। বিষয়টি নিয়ে এলজিইডি অফিসে আসলেও কোনো লাভ হয়নি।

জানা যায়, দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি,তাদের আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই এ প্রকল্পের লক্ষ্য। এই কর্মীরা এলজিইডি’র এলসিএস প্রকল্পের আওতায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান। নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থানীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ বা সংশ্লিষ্ট এলজিইডি অফিসে অনুষ্ঠিত হয়।

ভুক্তভোগীরা জানায়, ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলায় লেবার কন্ট্রাক্ট সোসাইটি (এলসিএস) প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়কের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পান সাথি খাতুন,বাসনা দাস,জোসনা খাতুন,চায়না খাতুন ও দিপালি দাস। তাদের বাড়ি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। এই প্রকল্পে কয়েকবছর ধরে কাজ করছেন তারা। সম্প্রতি তাদেরকে বাদ দিয়ে সেই জায়গায় অন্য কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। শুধু তাই-না,তাদের ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করে অন্য নারীদের কাজ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করছেন তারা। এমনকি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকবই ফেরত না দিয়ে জমাকৃত টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। এ বিষয়ে জানতে উপজেলা এলজিইডি অফিসে এসেছিলেন পাঁচ ভুক্তভোগী নারী। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। সমাধান না পেয়ে মলিন মুখে ফিরে যেতে হয়েছে তাদের। এঘটনায় জড়িতদের শাস্তি ও টাকা ফেরতের দাবি তাদের।

ভুক্তভোগী নারী বাসনা দাস বলেন,‘এলসিএস প্রকল্পের সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম আমার বাড়ির উপর গিয়ে ২৪ হাজার টাকা এনেছে। এখন আমাকে কাজ না দিয়ে অন্য নারীকে কাজ দিয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে অফিসে এসেছিলাম। কিন্তু লাভ হয়নি। আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেকবইও ফেরত দিচ্ছে না।’

দিপালি খাতুন নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন,‘বেশ কয়েক বছর ধরে এই প্রকল্পে কাজ করছি। কাজ পেতে অফিসের কমিউনিটি অর্গানাইজার এলিজা নাজ ও প্রকল্পের সুপারভাইজার রবিউল ইসলামকে ২৪ হাজার টাকা দেওয়া লেগেছে। আমরা টাকা ফেরত ও এর সাথে জড়িতদের বিচার চাই।’

জোসনা খাতুন নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘কয়েক দফায় ২৪ হাজার টাকা দিয়েছি। এখন কাজ পাচ্ছি না। আমাদের ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে অন্য নারীকে কাজ দেওয়া হয়েছে।’

 

অভিযোগের বিষয়ে সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারীদের অভিযোগ ফাউ। এই প্রকল্প দুই বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। তারা এখন চেকবই ফেরত চাচ্ছে। বাদবাকি কমিউনিটি অর্গানাইজার (সিও) বলতে পারবে।’

সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করে কমিউনিটি অর্গানাইজার (সিও) এলিজা নাজ বলেন, ‘এ ঘটনার পেছনে বড় রহস্য আছে। তাদের সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি এর প্রমাণ দেবো। কেউ অভিযোগ দিলেই তো সত্য হয়ে যায় না।’

এ বিষয়ে জানতে এলজিইডির শৈলকূপা উপজেলা প্রকৌশলী রাকিব হাসানের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ঢাকা/ইবিটাইমস/এসএস