ভিয়েনা ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়েছে ভারতের আদানি, বকেয়া পরিশোধে চাপ দেয়ার কথা অস্বীকার

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৮:০২:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪
  • ৪ সময় দেখুন

রিশান নাসরুল্লাহ, ঢাকা: বকেয়া পরিশোধ না করায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে ভারতের আদানি গ্রুপ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে গড়ে মাত্র ৫৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছে বাংলাদেশ। যদিও গত বুধবার পর্যন্ত গড়ে এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সক্ষমতা এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। বাংলাদেশের আদানির পাওনা প্রায় ১০ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। এছাড়া দেশের কয়লাভিত্তিক বড় দুই বিদ্যুৎকন্দ্র—এস আলম ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে।

সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি আদানি পাওয়ারের (ঝাড়খণ্ড) প্রতিনিধি ও যৌথ সমন্বয় কমিটির সভাপতি এম আর কৃষ্ণ পাওনার বিষয়ে সরকারকে চিঠি দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিসি) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১৭০.০৩ মিলিয়ন ডলারের জন্য প্রয়োজনীয় এলসি প্রদান করেনি এবং ৮৪৬ মিলিয়ন ডলারের (১০,০৮৬ কোটি টাকা) বকেয়াও শোধ করেনি। সময়মতো এলসি না দেয়া এবং বকেয়া পরিমাণ পরিশোধ না করায় চুক্তির শর্ত ভঙ্গ হয়েছে, যা আদানিকে বিদ্যুতের সরবরাহ বজায় রাখতে বাধাঁ দিচ্ছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে,  বকেয়া পরিশোধ ও এলসির অভাবে কয়লা সরবরাহকারী এবং কেন্দ্র পরিচালনা ও  রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় মেটানো যাচ্ছে না। ঋণদাতারাও সহায়তা প্রত্যাহার করছে। চিঠিতে আদানি পিডিবিকে ৩০ অক্টোবরের সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানায়। না হলে ৩১ অক্টোবর থেকে সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আদানির বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিপিডিবি সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, রবিবার (৩ নভেম্বর) রাতে আদানি পাওয়ারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়, আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ কোটি ডলার বকেয়া পরিশোধ করার কোনও আল্টিমেটাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) দেয়া হয়নি। জানান, বকেয়া আদায়ের জন্য পিডিবির সঙ্গে আলোচনা চলছে। দু’পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চায় আদানি।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা আরও জানান, কয়লা আমদানি নিয়ে এলসি (ঋনপত্র) সংক্রান্ত একটা জটিলতা ছিল। সেটি দু-একদিনের মধ্যে কেটে যাবে। তখন বন্ধ থাকা দ্বিতীয় ইউনিটও চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এর পাশাপাশি এ সপ্তাহে যদি পিডিবি কিছু পেমেন্ট পরিশোধ করে তাহলে পুরোদমে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে বলে মনে করছেন তারা।

এদিকে এস আলম গ্রুপ তাদের এক হাজার ২২৪ মেগাওয়াট সক্ষমতার বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রর জন্য পিডিবির কাছে দুই হাজার কোটি টাকা পাবে। এসএস পাওয়ার ১-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তান ঝেলিং একটি চিঠিতে পিডিবিকে জানিয়েছেন, দ্রুত বকেয়া পরিশোধ করা না হলে কয়লা আমদানির জন্য এলসি খোলা সম্ভব হবে না।

এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগের বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রও কয়লা সংকটের কারণে ইউনিট-২ বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও ইউনিট-১ বর্তমানে গড়ে ৩৫০ থেকে ৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করছে। রামপালেরও পিডিবির কাছে বড় অঙ্কের পাওনা জমেছে।

বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট।

ঢাকা/ইবিটাইমস/এনএল/আরএন

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়েছে ভারতের আদানি, বকেয়া পরিশোধে চাপ দেয়ার কথা অস্বীকার

আপডেটের সময় ০৮:০২:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০২৪

রিশান নাসরুল্লাহ, ঢাকা: বকেয়া পরিশোধ না করায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে ভারতের আদানি গ্রুপ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে গড়ে মাত্র ৫৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছে বাংলাদেশ। যদিও গত বুধবার পর্যন্ত গড়ে এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সক্ষমতা এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। বাংলাদেশের আদানির পাওনা প্রায় ১০ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। এছাড়া দেশের কয়লাভিত্তিক বড় দুই বিদ্যুৎকন্দ্র—এস আলম ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে।

সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি আদানি পাওয়ারের (ঝাড়খণ্ড) প্রতিনিধি ও যৌথ সমন্বয় কমিটির সভাপতি এম আর কৃষ্ণ পাওনার বিষয়ে সরকারকে চিঠি দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিসি) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ১৭০.০৩ মিলিয়ন ডলারের জন্য প্রয়োজনীয় এলসি প্রদান করেনি এবং ৮৪৬ মিলিয়ন ডলারের (১০,০৮৬ কোটি টাকা) বকেয়াও শোধ করেনি। সময়মতো এলসি না দেয়া এবং বকেয়া পরিমাণ পরিশোধ না করায় চুক্তির শর্ত ভঙ্গ হয়েছে, যা আদানিকে বিদ্যুতের সরবরাহ বজায় রাখতে বাধাঁ দিচ্ছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে,  বকেয়া পরিশোধ ও এলসির অভাবে কয়লা সরবরাহকারী এবং কেন্দ্র পরিচালনা ও  রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় মেটানো যাচ্ছে না। ঋণদাতারাও সহায়তা প্রত্যাহার করছে। চিঠিতে আদানি পিডিবিকে ৩০ অক্টোবরের সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানায়। না হলে ৩১ অক্টোবর থেকে সরবরাহ বন্ধ করা হতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আদানির বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। এ কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিপিডিবি সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, রবিবার (৩ নভেম্বর) রাতে আদানি পাওয়ারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়, আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে ৮০ থেকে ৮৫ কোটি ডলার বকেয়া পরিশোধ করার কোনও আল্টিমেটাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) দেয়া হয়নি। জানান, বকেয়া আদায়ের জন্য পিডিবির সঙ্গে আলোচনা চলছে। দু’পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চায় আদানি।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা আরও জানান, কয়লা আমদানি নিয়ে এলসি (ঋনপত্র) সংক্রান্ত একটা জটিলতা ছিল। সেটি দু-একদিনের মধ্যে কেটে যাবে। তখন বন্ধ থাকা দ্বিতীয় ইউনিটও চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এর পাশাপাশি এ সপ্তাহে যদি পিডিবি কিছু পেমেন্ট পরিশোধ করে তাহলে পুরোদমে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে বলে মনে করছেন তারা।

এদিকে এস আলম গ্রুপ তাদের এক হাজার ২২৪ মেগাওয়াট সক্ষমতার বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রর জন্য পিডিবির কাছে দুই হাজার কোটি টাকা পাবে। এসএস পাওয়ার ১-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তান ঝেলিং একটি চিঠিতে পিডিবিকে জানিয়েছেন, দ্রুত বকেয়া পরিশোধ করা না হলে কয়লা আমদানির জন্য এলসি খোলা সম্ভব হবে না।

এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগের বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রও কয়লা সংকটের কারণে ইউনিট-২ বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও ইউনিট-১ বর্তমানে গড়ে ৩৫০ থেকে ৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করছে। রামপালেরও পিডিবির কাছে বড় অঙ্কের পাওনা জমেছে।

বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট।

ঢাকা/ইবিটাইমস/এনএল/আরএন